ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে সোনার দাম ছুঁতে পারে ৩৭০০ ডলার

- আপডেট সময় ০২:৩৫:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
- / 25
বিশ্ববাজারে আবারও বাড়ছে সোনার ঝলক। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণার পরই এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। ফলে নতুন করে উচ্চতার দিকে যাচ্ছে সোনার দাম।
বিনিয়োগ খাতের বিশাল প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাক্স আশঙ্কা করছে, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৭০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি আগের পূর্বাভাসে বলেছিল, দাম উঠবে ৩ হাজার ৩০০ ডলার পর্যন্ত। তবে সাম্প্রতিক মূল্যায়নে তারা জানায়, বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী সোনার দাম ৩ হাজার ৬৫০ থেকে ৩ হাজার ৯৫০ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে বাড়ছে সোনার এই ঊর্ধ্বগতি। প্রথমত, বিশ্বের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাপক হারে সোনা কিনছে, যা সোনার চাহিদা বাড়িয়ে দিচ্ছে। দ্বিতীয়ত, সোনাভিত্তিক এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডে (ইটিএফ) বিনিয়োগ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা মূল্যবৃদ্ধিতে আরও সহায়ক হতে পারে।
বিশ্ব অর্থনীতিতে যদি মন্দার আভাস দেখা দেয়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে সোনার প্রতি আরও ঝুঁকবেন। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে সোনার দাম এক লাফে বেড়ে ৩ হাজার ৮৮০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। তবে যদি রাজনৈতিক ও নীতিগত স্থিতিশীলতা ফিরে আসে, তাহলে দাম কিছুটা কমলেও ৩ হাজার ৫৫০ ডলারে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় গোল্ডম্যান স্যাক্স।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো প্রতি মাসে প্রায় ৮০ মেট্রিক টন সোনা কিনছে, যেখানে গত বছর এই হার ছিল ৭০ মেট্রিক টন। ২০২৩ সালে সারা বিশ্বে সোনা বেচাকেনা হয়েছে ৪ হাজার ৯৭৪ টন। আর টানা তৃতীয় বছরের মতো কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ১ হাজার টনের বেশি সোনা কিনছে। গত বছর সবচেয়ে বেশি সোনা কিনেছে পোল্যান্ড—প্রায় ৯০ টন।
এদিকে, গোল্ডপ্রাইস ডট অর্গ-এর তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৩১৫ ডলার। যদিও আজ কিছুটা দরপতন হয়েছে, তবুও গত এক মাসে সোনার দাম বেড়েছে ২৭৯ ডলার এবং বছরে বেড়েছে ৯২৬ ডলার।
দেশীয় বাজারেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বিনিয়োগকারীরা অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মাঝে সোনাকেই দেখছেন সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়।