ঢাকা ০৭:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে প্লাস্টিকের রাসায়নিক ডিইএইচপি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৮:৪১:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • / 35

ছবি সংগৃহীত

 

ডিইএইচপি (DEHP) নামের একটি প্লাস্টিকের রাসায়নিক উপাদান নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এটি একটি প্লাস্টিসাইজার, যা প্লাস্টিককে নমনীয় ও টেকসই করতে ব্যবহৃত হয়। খাবারের প্যাকেট, চিকিৎসা সরঞ্জাম, প্রসাধনী, শ্যাম্পু, লোশনসহ বহু ভোগ্যপণ্যে এই উপাদানটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি ল্যাংগোন হেলথ-এর এক গবেষণায় জানা গেছে, ডিইএইচপি শরীরে প্রবেশ করলে হৃদযন্ত্রের ধমনিতে প্রদাহ তৈরি করতে পারে, যার ফলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। গবেষকরা জানিয়েছেন, প্লাস্টিকজাত পণ্যে ব্যবহৃত এই রাসায়নিকটি দীর্ঘদিন ধরে শরীরে জমে নানা ধরনের জটিল রোগের জন্ম দিতে পারে।

গবেষণাটির প্রধান লেখক ড. লিওনার্দো ট্রাসান্ডে বলেন, “আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, ডিইএইচপি শুধু হৃদরোগ নয়, বরং স্থূলতা, ডায়াবেটিস, বন্ধ্যাত্ব, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। বিশেষ করে যেসব দেশে রাসায়নিক ব্যবহারে কঠোর নিয়ম নেই, সেখানে এই প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিইএইচপি ও অনুরূপ রাসায়নিক উপাদানের ব্যবহারে নীরব স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপরও দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলতে পারে।

গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাপী ডিইএইচপি-জনিত স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে প্রায় ৫১০ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৫১ হাজার কোটি টাকা। গবেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ হতে পারে প্রায় ৩.৭৪ ট্রিলিয়ন ডলার।

ড. ট্রাসান্ডে বলেন, এখনই সময় এই রাসায়নিকগুলোর ব্যবহার সীমিত করে নিরাপদ বিকল্প উপাদান খোঁজার। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনগণকে এই ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু গবেষণা নয়, জনসচেতনতা এবং কার্যকর নীতিমালার মাধ্যমেই এই ঝুঁকি মোকাবিলা করা সম্ভব। কারণ, প্রতিদিনের ব্যবহারে থাকা প্লাস্টিক পণ্য থেকেই অজান্তেই আমরা নিজেদের শরীরে বিপজ্জনক রাসায়নিক প্রবেশ করিয়ে নিচ্ছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে প্লাস্টিকের রাসায়নিক ডিইএইচপি

আপডেট সময় ০৮:৪১:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

 

ডিইএইচপি (DEHP) নামের একটি প্লাস্টিকের রাসায়নিক উপাদান নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এটি একটি প্লাস্টিসাইজার, যা প্লাস্টিককে নমনীয় ও টেকসই করতে ব্যবহৃত হয়। খাবারের প্যাকেট, চিকিৎসা সরঞ্জাম, প্রসাধনী, শ্যাম্পু, লোশনসহ বহু ভোগ্যপণ্যে এই উপাদানটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি ল্যাংগোন হেলথ-এর এক গবেষণায় জানা গেছে, ডিইএইচপি শরীরে প্রবেশ করলে হৃদযন্ত্রের ধমনিতে প্রদাহ তৈরি করতে পারে, যার ফলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। গবেষকরা জানিয়েছেন, প্লাস্টিকজাত পণ্যে ব্যবহৃত এই রাসায়নিকটি দীর্ঘদিন ধরে শরীরে জমে নানা ধরনের জটিল রোগের জন্ম দিতে পারে।

গবেষণাটির প্রধান লেখক ড. লিওনার্দো ট্রাসান্ডে বলেন, “আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, ডিইএইচপি শুধু হৃদরোগ নয়, বরং স্থূলতা, ডায়াবেটিস, বন্ধ্যাত্ব, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। বিশেষ করে যেসব দেশে রাসায়নিক ব্যবহারে কঠোর নিয়ম নেই, সেখানে এই প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিইএইচপি ও অনুরূপ রাসায়নিক উপাদানের ব্যবহারে নীরব স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপরও দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলতে পারে।

গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাপী ডিইএইচপি-জনিত স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে প্রায় ৫১০ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৫১ হাজার কোটি টাকা। গবেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ হতে পারে প্রায় ৩.৭৪ ট্রিলিয়ন ডলার।

ড. ট্রাসান্ডে বলেন, এখনই সময় এই রাসায়নিকগুলোর ব্যবহার সীমিত করে নিরাপদ বিকল্প উপাদান খোঁজার। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনগণকে এই ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু গবেষণা নয়, জনসচেতনতা এবং কার্যকর নীতিমালার মাধ্যমেই এই ঝুঁকি মোকাবিলা করা সম্ভব। কারণ, প্রতিদিনের ব্যবহারে থাকা প্লাস্টিক পণ্য থেকেই অজান্তেই আমরা নিজেদের শরীরে বিপজ্জনক রাসায়নিক প্রবেশ করিয়ে নিচ্ছি।