০১:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
জাতির উদ্দেশ্যে সন্ধ্যায় ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা জনসমাগমের মধ্যে দক্ষিণখানে যুবলীগ নেতা খুন জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা গাজায় যুদ্ধবিরতি মানতে ইসরায়েলকে হোয়াইট হাউসের সতর্কবার্তা, নেতানিয়াহুকে সরাসরি বার্তা শিশু সাজিদের মৃত্যু: ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ মানুষকে ভয় দেখাতেই এসব হামলা: রিজওয়ানা আটকের পর যা বললেন গুলিতে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক হান্নান মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ঢাকা-১১ আসনে নির্বাচন করবেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম
হুমায়ুন ফরিদীর জন্মবার্ষিকী আজ

বাংলা শিল্পের কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদীর জন্মবার্ষিকী আজ

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • / 182

ছবি: সংগৃহীত

 

বাংলা অভিনয় জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হুমায়ুন ফরীদি। ১৯৫২ সালের ২৯ মে ঢাকার নারিন্দায় জন্ম নেওয়া এই গুণী অভিনেতা মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র তিন অঙ্গনেই দেখিয়েছেন অদ্বিতীয় প্রতিভার ঝলক। আজ বেঁচে থাকলে ৭৪ বছরে পা দিতেন তিনি।

হুমায়ুন ফরীদিকে শুধু একজন অভিনেতা বললে কম বলা হয়। তিনি ছিলেন এক বিস্ময়কর শিল্পস্রষ্টা। তাঁর অভিনয় মানেই চরিত্রের মধ্যে ডুবে যাওয়া। ঢাকায় জন্ম হলেও তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। বাবার চাকরির সুবাদে মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেড়াতে হয়েছে তাঁকে। এই ঘোরাঘুরির মধ্যেই শেষ করেন প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা।

বিজ্ঞাপন

১৯৭০ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। অর্থনীতিতে অনার্স নিয়ে পড়লেও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সবচেয়ে বড় মোড় আসে নাট্যজন সেলিম আল দীনের সংস্পর্শে এসে। ১৯৭৬ সালে সেলিম আল দীনের উদ্যোগে শুরু হওয়া জাহাঙ্গীরনগরের নাট্যোৎসবে ফরীদি নিজেই লেখেন ও নির্দেশনা দেন ‘আত্মস্থ ও হিরন্ময়ীদের বৃত্তান্ত’ নামের নাটকটি, যা সে সময় সেরা নাটক হিসেবে বিবেচিত হয়।

এরপর থেকে থেমে থাকেননি তিনি। একের পর এক মঞ্চ নাটকে অভিনয়, টেলিভিশন নাটকে অসাধারণ উপস্থিতি এবং চলচ্চিত্রে দুর্দান্ত প্রতাপের মাধ্যমে গড়ে তোলেন এক কিংবদন্তি ক্যারিয়ার। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ‘সন্ত্রাস’, ‘ভণ্ড’, ‘ব্যাচেলর’, ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামলছায়া’, ‘একাত্তরের যীশু’, ‘মাতৃত্ব’, ‘বিশ্বপ্রেমিক’ ও ‘পালাবি কোথায়’-এর মতো দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র।

২০০৪ সালে ‘মাতৃত্ব’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। মৃত্যুর পর ২০১৮ সালে শিল্প-সংস্কৃতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন।

ব্যক্তিগত জীবনে ফরিদপুরের মিনুকে বিয়ে করে একমাত্র মেয়ে দেবযানির পিতা হন ফরীদি। পরে অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফাকে বিয়ে করলেও ২০০৮ সালে সেই সম্পর্কের ইতি ঘটে।

২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তবে আজও তার অনবদ্য সৃষ্টিগুলো বেঁচে আছে কোটি ভক্তের হৃদয়ে। হুমায়ুন ফরীদি শুধু একজন অভিনেতাই নন, তিনি ছিলেন অভিনয় নামক শিল্পের এক অনন্য ব্যাখ্যা।

নিউজটি শেয়ার করুন

হুমায়ুন ফরিদীর জন্মবার্ষিকী আজ

বাংলা শিল্পের কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদীর জন্মবার্ষিকী আজ

আপডেট সময় ০৩:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

 

বাংলা অভিনয় জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হুমায়ুন ফরীদি। ১৯৫২ সালের ২৯ মে ঢাকার নারিন্দায় জন্ম নেওয়া এই গুণী অভিনেতা মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র তিন অঙ্গনেই দেখিয়েছেন অদ্বিতীয় প্রতিভার ঝলক। আজ বেঁচে থাকলে ৭৪ বছরে পা দিতেন তিনি।

হুমায়ুন ফরীদিকে শুধু একজন অভিনেতা বললে কম বলা হয়। তিনি ছিলেন এক বিস্ময়কর শিল্পস্রষ্টা। তাঁর অভিনয় মানেই চরিত্রের মধ্যে ডুবে যাওয়া। ঢাকায় জন্ম হলেও তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। বাবার চাকরির সুবাদে মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেড়াতে হয়েছে তাঁকে। এই ঘোরাঘুরির মধ্যেই শেষ করেন প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা।

বিজ্ঞাপন

১৯৭০ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। অর্থনীতিতে অনার্স নিয়ে পড়লেও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সবচেয়ে বড় মোড় আসে নাট্যজন সেলিম আল দীনের সংস্পর্শে এসে। ১৯৭৬ সালে সেলিম আল দীনের উদ্যোগে শুরু হওয়া জাহাঙ্গীরনগরের নাট্যোৎসবে ফরীদি নিজেই লেখেন ও নির্দেশনা দেন ‘আত্মস্থ ও হিরন্ময়ীদের বৃত্তান্ত’ নামের নাটকটি, যা সে সময় সেরা নাটক হিসেবে বিবেচিত হয়।

এরপর থেকে থেমে থাকেননি তিনি। একের পর এক মঞ্চ নাটকে অভিনয়, টেলিভিশন নাটকে অসাধারণ উপস্থিতি এবং চলচ্চিত্রে দুর্দান্ত প্রতাপের মাধ্যমে গড়ে তোলেন এক কিংবদন্তি ক্যারিয়ার। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ‘সন্ত্রাস’, ‘ভণ্ড’, ‘ব্যাচেলর’, ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামলছায়া’, ‘একাত্তরের যীশু’, ‘মাতৃত্ব’, ‘বিশ্বপ্রেমিক’ ও ‘পালাবি কোথায়’-এর মতো দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র।

২০০৪ সালে ‘মাতৃত্ব’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। মৃত্যুর পর ২০১৮ সালে শিল্প-সংস্কৃতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন।

ব্যক্তিগত জীবনে ফরিদপুরের মিনুকে বিয়ে করে একমাত্র মেয়ে দেবযানির পিতা হন ফরীদি। পরে অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফাকে বিয়ে করলেও ২০০৮ সালে সেই সম্পর্কের ইতি ঘটে।

২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তবে আজও তার অনবদ্য সৃষ্টিগুলো বেঁচে আছে কোটি ভক্তের হৃদয়ে। হুমায়ুন ফরীদি শুধু একজন অভিনেতাই নন, তিনি ছিলেন অভিনয় নামক শিল্পের এক অনন্য ব্যাখ্যা।