শিক্ষা ব্যবস্থায় ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা

- আপডেট সময় ১১:৫৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
- / 15
দেশে আবার বৃত্তি পরীক্ষা ফিরছে। প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তের পর এবার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষাও আবার নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রায় সাত মাস পার হয়ে যাওয়ার পর এখন এ বছরই পরীক্ষাটি আয়োজনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে এ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এ পরীক্ষায় বন্ধ হয়ে যাওয়া জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার মতো সব শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারবে না; বাছাই করা নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষার্থী এতে অংশ নিতে পারবে।
অবশ্য এ উদ্যোগ ঘিরে বিভক্ত মত রয়েছে শিক্ষাবিদদের মধ্যে। কেউ কেউ বলছেন, বাছাই করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন শিক্ষায় বৈষম্য বাড়াতে পারে। কারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কেবল নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের প্রতি মনোযোগী হবে। তাতে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার আশঙ্কাও বাড়বে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ওপর পরীক্ষার চাপ এবং কোচিং-প্রাইভেটনির্ভরতা বৃদ্ধি পেয়ে অভিভাবকদের ওপর অর্থনৈতিক চাপও বাড়াতে পারে।
শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভাষ্য, দেশের শিক্ষার্থীরা এমনিতেই শিখনঘাটতি নিয়ে ওপরের শ্রেণিতে উঠছে, যার প্রভাব পড়ছে কর্মক্ষেত্রে। তাই বিদ্যালয় পর্যায়ে সব শিক্ষার্থী কীভাবে শিক্ষাক্রম নির্ধারিত শিখন অর্জন করতে পারে, সে ব্যবস্থার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের বেশি সহযোগিতা করা দরকার। আর মেধাবীদের পুরস্কার আরও নানাভাবে দেওয়ার সুযোগ আছে, পরীক্ষাই একমাত্র উপায় নয়। তাই বিদ্যালয় পর্যায়ে সামগ্রিকভাবে শিক্ষার গুণগত মান কীভাবে উন্নত করা যায়, সে বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এখনই নাম প্রকাশ করে কথা বলতে চান না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কয়েক দিনের মধ্যে চূড়ান্ত হলে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
২০১০ সালের আগে পৃথকভাবে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হতো। তখন এর জায়গা নেয় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা, যেখানে সব শিক্ষার্থী বৃত্তির জন্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারত। কিন্তু ২০১০ সালে চালু জেএসসি পরীক্ষাকে ঘিরে কোচিং-প্রাইভেটের প্রবণতা ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ২০২০ সালে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এ পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখার বিবেচনায় আর এ পরীক্ষা নেওয়া হয়নি।