রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনায় কমছে শস্যের দাম, প্রভাব পড়ছে জ্বালানি বাজারেও

- আপডেট সময় ০১:৪৯:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
- / 45
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেন জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা ৩০ দিনের জন্য বন্ধ রাখতে সম্মত হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে যুদ্ধের ইতি টানার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
জ্বালানি স্থাপনায় হামলা বন্ধ হওয়ায় রুশ তেলের সরবরাহ বিশ্ববাজারে বেড়েছে। ফলে হুতি বিদ্রোহীদের ওপর মার্কিন হামলার মধ্যেও তেলের দাম নিম্নমুখী হয়েছে। বুধবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১৯ সেন্ট কমে ব্যারেলপ্রতি ৭০ ডলার ৩৭ সেন্টে নেমে আসে। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দামও কমেছে। তবে বৃহস্পতিবার আবার উভয় জাতের তেলের দাম বেড়েছে, যা বাজারের অস্থিরতাকে আরও স্পষ্ট করেছে।
শুধু জ্বালানি নয়, যুদ্ধবিরতির ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে শস্যবাজারেও। রাশিয়া শস্য রপ্তানির অন্যতম বৃহৎ দেশ। সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা শিথিল হলে রুশ গম ও ভুট্টার সরবরাহ বাড়বে। ইতোমধ্যেই শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডের (সিবিওটি) তথ্যমতে, গমের দাম ০.৯ শতাংশ ও ভুট্টার দাম ০.২ শতাংশ কমেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি উঠে গেলে শস্যের দাম আরও কমতে পারে।
পণ্যবাজার বিশ্লেষক ইয়েপ জুন রঙ মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে যুদ্ধের চূড়ান্ত সমাধান আসতে পারে। এতে ইউক্রেনীয় জ্বালানি অবকাঠামো আগের মতো কার্যকর হলে তেলের সরবরাহ বেড়ে যাবে, ফলে দামও আরও কমবে। তবে অন্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মার্কিন হামলার কারণে তেলের বাজারে অস্থিরতা রয়ে গেছে। ফলে আশানুরূপ হারে দাম কমার সম্ভাবনা কম।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল রপ্তানিকারক রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছিল। এখন যুদ্ধবিরতি ও নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সম্ভাবনায় বাজারে স্বস্তির ইঙ্গিত মিলছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বাণিজ্য নীতির কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শ্লথ হতে পারে। কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানির চাহিদা কমতে পারে, যা তেলের দামের ওপর দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলবে।
মার্কিন অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুতের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বাজারকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে। গত সপ্তাহে ৪০ লাখ ৫৯ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের মজুত বেড়েছে, তবে পেট্রল ও ডিস্টিলেট মজুত কমেছে। এতে বাজার কখন কোন দিকে মোড় নেবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।