মুন্সিগঞ্জে আলু চাষিদের বিপর্যয়: পানি শূন্যতাসহ অসময়ী বৃষ্টির কারণে বিপুল ক্ষতি
মুন্সিগঞ্জের প্রান্তিক আলু চাষিরা এবারের মৌসুমে নানা সমস্যায় জর্জরিত। পানি শূন্যতা এবং অসময়ের বৃষ্টি তাদের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, বৃষ্টি না হওয়ার কারণে অধিকাংশ কৃষকরা সেচের সমস্যা নিয়ে চিন্তিত। কৃষি জমির আশেপাশের খাল-বিল দখল হয়ে যাওয়ায় সেচের পানি পাওয়া যাচ্ছে না, ফলে আলুর ফলন বড় ধাক্কা খাচ্ছে। এছাড়া, জমিতে পানি না থাকায় ফাটল দেখা দিয়েছে, যা আরও বিপদজনক হয়ে উঠেছে।
মুন্সিগঞ্জ জেলার আলু চাষের খ্যাতি রয়েছে। এ অঞ্চলে আলু গাছের সবুজ পাতায় কৃষকের মাঠ মুখরিত থাকে। কিন্তু এবারের মৌসুমের শুরুতে অসময়ী বৃষ্টির কারণে প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমির আলু বীজ নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে জমিতে আবাদ করতে হয়েছে দ্বিগুণ পরিশ্রমে। কৃষকরা এখন শঙ্কিত, কারণ তারা ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাধা আসছে।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা এখন ইঞ্জিন চালিত মেশিনের মাধ্যমে পানি ছিটিয়ে আলু গাছের পরিচর্যা করছেন। তবে সারের দামও দ্বিগুণ বেড়ে গেছে, এবং শ্রমিক খরচও বাড়তি। শামসুদ্দিন মেম্বার, যিনি ৫১০ শতাংশ জমিতে আলু রোপণ করেছেন, জানান, এবারের খরচ গতবারের চেয়ে দ্বিগুণ। তবে তিনি আশা করছেন, বাজারে দাম ঠিক থাকলে লোকসান কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।
কৃষক রমজান আলী মাতবর বলেন, “গেল বছর আলু জমি থেকে বিক্রি করে লাভ হয়েছিল, তবে এবারে দাম কম হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।” অন্যদিকে, শামসুদ্দিনের মতো অনেক কৃষক পানি শূন্যতার কারণে জমিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় আরও উদ্বিগ্ন।
এমন পরিস্থিতিতে, কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে আলু মজুদ করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে এবং কিছু কিছু এলাকা থেকে আগাম আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। মুন্সিগঞ্জের চাষিরা এখন সরকারের সহায়তার আশায় দিন কাটাচ্ছেন, যেন এই সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হয়।