ঢাকা ০৯:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে তিন পরিবর্তন বিএনপিকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না: মির্জা ফখরুল প্রধান বিচারপতির বাসভবনের আশপাশে সভা-সমাবেশে ডিএমপির নিষেধাজ্ঞা বড় শয়তান এখনো আমাদের কাঁধে শ্বাস ফেলছে: তথ্য উপদেষ্টা কসবায় সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ভারতীয় শাড়ি উদ্ধার মাগুরা-ঝিনাইদহ সড়কে বাস-ভ্যান সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ১০ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, একদিনে হাসপাতালে ৪২০ জন মানিকগঞ্জে নিজের মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড মাদারগঞ্জে কলেজ ছাত্রকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, চাচা লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে ‘নৌকা’ বাদ দিয়ে শাপলা প্রতীক তালিকাভুক্ত করার দাবি এনসিপির

ফুলবাড়িয়ার আনারসের বাম্পার ফলনে রাসায়নিকের ছোঁয়া, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভোক্তারা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০১:৪৭:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
  • / 1

ছবি সংগৃহীত

 

 

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা আনারস চাষে প্রসিদ্ধ। এখানকার আনারস স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়। এবারও উপজেলায় বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু ন্যায্য দাম না পাওয়ায় অনেক চাষি ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। তারা বলছেন, লাভের আশায় অনেকেই আনারসে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক ছিটিয়ে দ্রুত পাকিয়ে বিক্রি করছেন, যার ফলে আনারস বিষাক্ত হয়ে উঠছে এবং ভোক্তারা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার নাওগাঁও, সন্তোষপুর, রাঙ্গামাটিয়া, কৃষ্ণপুর, কালাদহ, পাহাড় অনন্তপুর ও হাতিলেট এলাকায় ব্যাপক আনারস চাষ হচ্ছে। কাঁচা আনারসগুলো পাকাতে অতি মাত্রায় কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে জেনেও এ অপচর্চা থামছে না।

চাষিরা জানিয়েছেন, কী পরিমাণ রাসায়নিক প্রয়োগ করতে হয় সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় অনেকেই ইচ্ছেমতো ব্যবহার করছেন। এতে একসঙ্গে সব আনারস পেকে যাওয়ায় পাইকারদের কাছে দ্রুত বিক্রি সম্ভব হচ্ছে। অনেকে আবার আগেভাগেই পুরো খেতের কাঁচা আনারস পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। পাইকাররা এরপর শ্রমিক দিয়ে নিজেদের মতো করে কেমিক্যাল প্রয়োগ করছেন।

নাওগাঁও গ্রামের চাষি আজিজুল ইসলাম বলেন, “যাদের চারা দেরিতে রোপণ করা হয়েছে, তাদের ফল এখন পরিপক্ব হচ্ছে। লাভের আশায় দ্রুত পাকাতে গিয়ে ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সঠিক বিপণন ব্যবস্থার অভাবে আমরা প্রকৃত লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।”

রাঙ্গামাটিয়ার কৃষক ফরিদ উদ্দিন বলেন, “আনারসের উৎপাদন খরচ বাড়লেও সেই অনুযায়ী দাম পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকেই লাভের আশায় কেমিক্যাল ছিটাচ্ছেন। তবে আমি কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে নিয়ম মেনে স্প্রে করি।”

ফুলবাড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ জানান, এ বছর উপজেলায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে। কৃষকদের বিষমুক্ত আনারস উৎপাদনে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কিছু আনারস সংযুক্ত আরব আমিরাতে রপ্তানিও হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. কৌশিক দেব জানান, রাসায়নিক দিয়ে পাকানো ফল খেলে বদহজম, গ্যাস্ট্রিক, জন্ডিস, লিভার ও কিডনির সমস্যা হতে পারে। তাই সচেতনতার বিকল্প নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. নাছরিন আক্তার বানু বলেন, “ভোক্তা অসুস্থ হলে আনারস খাওয়ার আগ্রহ হারাবেন। এতে আনারসের বাজারপ্রতি প্রভাব পড়বে। তাই নিয়ম মেনে নিরাপদ আনারস চাষ জরুরি।”

নিউজটি শেয়ার করুন

ফুলবাড়িয়ার আনারসের বাম্পার ফলনে রাসায়নিকের ছোঁয়া, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভোক্তারা

আপডেট সময় ০১:৪৭:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

 

 

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা আনারস চাষে প্রসিদ্ধ। এখানকার আনারস স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়। এবারও উপজেলায় বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু ন্যায্য দাম না পাওয়ায় অনেক চাষি ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। তারা বলছেন, লাভের আশায় অনেকেই আনারসে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক ছিটিয়ে দ্রুত পাকিয়ে বিক্রি করছেন, যার ফলে আনারস বিষাক্ত হয়ে উঠছে এবং ভোক্তারা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার নাওগাঁও, সন্তোষপুর, রাঙ্গামাটিয়া, কৃষ্ণপুর, কালাদহ, পাহাড় অনন্তপুর ও হাতিলেট এলাকায় ব্যাপক আনারস চাষ হচ্ছে। কাঁচা আনারসগুলো পাকাতে অতি মাত্রায় কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে জেনেও এ অপচর্চা থামছে না।

চাষিরা জানিয়েছেন, কী পরিমাণ রাসায়নিক প্রয়োগ করতে হয় সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় অনেকেই ইচ্ছেমতো ব্যবহার করছেন। এতে একসঙ্গে সব আনারস পেকে যাওয়ায় পাইকারদের কাছে দ্রুত বিক্রি সম্ভব হচ্ছে। অনেকে আবার আগেভাগেই পুরো খেতের কাঁচা আনারস পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। পাইকাররা এরপর শ্রমিক দিয়ে নিজেদের মতো করে কেমিক্যাল প্রয়োগ করছেন।

নাওগাঁও গ্রামের চাষি আজিজুল ইসলাম বলেন, “যাদের চারা দেরিতে রোপণ করা হয়েছে, তাদের ফল এখন পরিপক্ব হচ্ছে। লাভের আশায় দ্রুত পাকাতে গিয়ে ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সঠিক বিপণন ব্যবস্থার অভাবে আমরা প্রকৃত লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।”

রাঙ্গামাটিয়ার কৃষক ফরিদ উদ্দিন বলেন, “আনারসের উৎপাদন খরচ বাড়লেও সেই অনুযায়ী দাম পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকেই লাভের আশায় কেমিক্যাল ছিটাচ্ছেন। তবে আমি কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে নিয়ম মেনে স্প্রে করি।”

ফুলবাড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ জানান, এ বছর উপজেলায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে। কৃষকদের বিষমুক্ত আনারস উৎপাদনে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কিছু আনারস সংযুক্ত আরব আমিরাতে রপ্তানিও হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. কৌশিক দেব জানান, রাসায়নিক দিয়ে পাকানো ফল খেলে বদহজম, গ্যাস্ট্রিক, জন্ডিস, লিভার ও কিডনির সমস্যা হতে পারে। তাই সচেতনতার বিকল্প নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. নাছরিন আক্তার বানু বলেন, “ভোক্তা অসুস্থ হলে আনারস খাওয়ার আগ্রহ হারাবেন। এতে আনারসের বাজারপ্রতি প্রভাব পড়বে। তাই নিয়ম মেনে নিরাপদ আনারস চাষ জরুরি।”