খেলাপি ঋণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা, চাপ বাড়ছে ব্যাংক খাতে: বাংলাদেশ ব্যাংক

- আপডেট সময় ০৭:৪২:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
- / 1
ব্যাংকিং খাত যেন দিন দিন আরও চাপে পড়ছে। একের পর এক অর্থনৈতিক সংকট, দুর্বল আর্থিক শৃঙ্খলা এবং তদারকির ঘাটতির কারণে দেশের ব্যাংক খাতে বাড়ছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত মোট ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ।
এর আগের প্রান্তিক অর্থাৎ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। ফলে মাত্র তিন মাসেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৪ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল রোববার (১৫ জুন) এই তথ্য প্রকাশ করে।
পরিসংখ্যানে আরও দেখা গেছে, ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশে মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত এই পরিমাণ ছিল ১৭ লাখ ১১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা।
এই পরিস্থিতিতে পাচার হওয়া সম্পদ উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আব্দুর রউফ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘সম্পদ উদ্ধার করতে হলে ধাপে ধাপে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। আদালতের চূড়ান্ত রায় ছাড়া কোনো অর্থ ফেরত আনা সম্ভব নয়। এজন্য সুনির্দিষ্ট তথ্য, প্রমাণ ও আইনি নথিপত্র প্রস্তুত করতে হচ্ছে।’
তবে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (ADR) পদ্ধতির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। তার ভাষায়, ‘আদালতের বাইরে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছে অর্থ ফেরত আনারও সুযোগ রয়েছে।’
তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সরকারের নির্দেশনা পেলেই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা পরিচালনার জন্য আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে।
গভর্নর আরও বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনীয় দলিলপত্র তৈরি করেছি। আন্তর্জাতিক কিছু ল ফার্ম আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, যারা বাংলাদেশে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে কাজ করতে চায়।’
এই ফার্মগুলোর পারিশ্রমিক কাঠামো সম্পর্কে তিনি জানান, উদ্ধারের পর ফেরত আনা অর্থের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত পারিশ্রমিক নির্ধারণ করা হয়েছে। বাকি অর্থ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য আমাদেরকে সহযোগিতা করছে এবং তাদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে বিষয়টি কিছুটা ধীর গতিতে এগোচ্ছে। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ায় নীতিগত প্রক্রিয়া এখনো চলমান।’