শীর্ষে রেমিট্যান্সের ধারা: মে মাসে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ ২৯৭ কোটি ডলার

- আপডেট সময় ০৮:৪৪:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
- / 1
প্রবাসী বাংলাদেশিরা সদ্য বিদায়ী মে মাসে দেশে রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। এ আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১.৭০ শতাংশ বেশি।
প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, অর্থাৎ প্রায় ১১৬৯ কোটি টাকা, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাসিক রেমিট্যান্স। এর আগের রেকর্ড ছিল এপ্রিল মাসে, যেটিকে পেছনে ফেলে দিয়েছে মে মাসের এ পরিমাণ। তবে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে চলতি বছরের মার্চ মাসে ৩২৯ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান জানান, “বর্তমানে হুন্ডির দৌরাত্ম্য অনেকটাই কমেছে এবং অর্থপাচার বন্ধ হয়েছে। ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানো নিরাপদ ও লাভজনক হওয়ায় প্রবাসীরা বৈধ পথেই টাকা পাঠাচ্ছেন।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই প্রতি মাসে রেমিট্যান্স দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত (প্রথম ১১ মাসে) দেশে এসেছে মোট ২৭৫০ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৬১৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার বেশি।
মাত্র এক মাসেই (মে) রেমিট্যান্স বেড়েছে ৪১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এপ্রিলের তুলনায় বেড়েছে ২২ কোটি ডলার। এই মাসে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, কৃষি ব্যাংকসহ বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে প্রায় ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে সর্বোচ্চ ১৩৭ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪১ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
চলতি অর্থবছরের অন্যান্য মাসেও রেমিট্যান্সের প্রবাহ ছিল ইতিবাচক। জুলাইয়ে এসেছে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলার এবং এপ্রিল মাসে এসেছে ২৭৫ কোটি ডলার।
এই ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে, প্রবাসী আয় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এবং রেমিট্যান্স প্রবাহে স্থিতিশীলতা ফিরছে। সরকারের সঠিক নীতিমালা ও প্রবাসীদের আস্থার কারণে এ ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।