দেশে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন, গম আমদানি ছুঁয়েছে নতুন শিখর
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও চাহিদা বৃদ্ধির কারণে দেশে গম আমদানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২৪ সালে বিশ্ববাজারে গমের দাম তুলনামূলক কম থাকায় ব্যবসায়ীরা রেকর্ড পরিমাণ গম আমদানি করেছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে গত কয়েক বছরে কিছুটা স্থবিরতা দেখা গেলেও গত বছর তা পেরিয়ে গম আমদানিতে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রায় ৭২.৭৫ লাখ টন গম আমদানি হয়েছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় ৩৪ শতাংশ বেশি। আমদানির এই হার গত আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে সরকারি খাতে আমদানি ৯২ শতাংশ বেড়ে প্রায় ৯ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। বেসরকারি খাতেও আমদানি প্রায় ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬৩.৭৭ লাখ টনে পৌঁছেছে।
গত বছর আমদানি হওয়া গমের প্রায় অর্ধেকই এসেছে রাশিয়া থেকে, যা মোট আমদানির ৫০ শতাংশ। দেশে গমের মোট চাহিদার ১৪-১৫ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়, বাকি ৮৫ শতাংশ আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। ২০২৪ সালে উৎপাদন ও আমদানির সম্মিলিত সরবরাহ ছিল ৮৪.৪৭ লাখ টন, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
গমের ব্যবহার বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে গমের তৈরি পণ্যের ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। টি কে গ্রুপের পরিচালক মোস্তফা হায়দার বলেন, “মানুষ এখন আগের তুলনায় গমের খাদ্যপণ্য বেশি খাচ্ছে। এ ছাড়া, গমের তৈরি খাদ্যপণ্যের রপ্তানিও বেড়েছে।”
ব্যবসায়ীরা উল্লেখ করেছেন, গমের তৈরি খাদ্যপণ্যের বিশাল শিল্প গড়ে উঠেছে দেশে। এতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেমন বেড়েছে, তেমনি কর্মসংস্থানের সুযোগও বৃদ্ধি পেয়েছে। বেকারি, কনফেকশনারি, হোটেল-রেস্তোরাঁ এবং প্রাণীখাদ্য তৈরির ক্ষেত্রে গম আমদানির ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।