দেশে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে রেকর্ড গতি, ১০ মাসেই শোধ ৩৫০ কোটি ডলার

- আপডেট সময় ০৭:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
- / 4
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসেই বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে আগের পুরো অর্থবছরকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে উঠে এসেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে দেশটি উন্নয়ন সহযোগীদের মোট ৩৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ পরিশোধ করেছে, যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরজুড়ে পরিশোধ হয়েছিল ৩৩৭ কোটি ডলার।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বিদেশি ঋণ পরিশোধের হার বেড়েছে ২৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এর মধ্যে মূল ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ৩২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল সময়ে আসল পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের বেশি (২.০২১ বিলিয়ন), যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৬৬ কোটি ডলার।
সুদ পরিশোধেও বেড়েছে চাপ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত সুদ পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ১২৯ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১১৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার। ফলে সুদ পরিশোধ বেড়েছে ১২ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ বিভিন্ন বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বৈদেশিক উৎস থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ গ্রহণ করেছে। এসব ঋণের অনেকেরই সুদের হার তুলনামূলকভাবে বেশি এবং পরিশোধের সময়সীমাও কম। অনেক ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়ায় এখন মূল কিস্তি ও সুদ উভয়ই একসঙ্গে পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে চাপ বেড়েছে সরকারের ওপর।
বিশ্লেষকরা আরও মনে করছেন, ঋণ পরিশোধে সরকারের এই সক্রিয়তা একদিকে আন্তর্জাতিক মানে দেশের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে সহায়তা করলেও, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে।
অর্থনৈতিক সূচকের ওপর ঋণ পরিশোধের এই ঊর্ধ্বগতি কেমন প্রভাব ফেলবে তা নির্ভর করছে সরকারের ভবিষ্যৎ ঋণ ব্যবস্থাপনা, রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং বৈদেশিক বিনিয়োগের ওপর।
তবে সুস্পষ্টভাবে বলা যায়, আগামি মাসগুলোতে বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থাপনায় আরও সতর্কতা ও পরিকল্পনা জরুরি হয়ে পড়েছে।