ঢাকা ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
নতুন সংবিধানের দাবিতে মাঠে নেমেছি : নাহিদ ভূরুঙ্গামারীতে বিদ‍্যুৎস্পৃষ্টে দ্বিতীয় শ্রেনির শিক্ষার্থীর মৃত্যু বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ করে বিএসএফ’র মারধর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প একনেকে অনুমোদন আশানুরূপ উন্নতি হয়নি আইনশৃঙ্খলার : রিজভী জাতিসংঘ মানবাধিকার রক্ষায় কার্যকর ভাবে কাজ করতে চায় : ফরিদা আখতার হাতিয়ায় বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত আওয়ামীলীগের চৌদ্দগোষ্ঠীরও ক্ষমতা হবে না আমাদের কেনার : তাজুল ইসলাম মসজিদের বারান্দা নির্মাণ নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ-বাড়িঘর ভাঙচুর, ১৪৪ ধারা জারি ফিলিস্তিন সংকট নিয়ে সম্মেলনে,যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

শিল্পখাতে বিনিয়োগে বড় বাধা গ্যাস সংকট: আব্দুল হাই সরকার

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:১৮:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
  • / 24

ছবি: সংগৃহীত

 

দেশের বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতের বিকাশে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্যাস সংকট এমন মন্তব্য করেছেন বিটিএমএর সাবেক সভাপতি ও বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবির চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নতুন বিনিয়োগে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও সবচেয়ে ভয়াবহ সংকট হলো গ্যাসের ঘাটতি।

তার ভাষায়, “শিল্পে গ্যাস সংকট অনেক পুরোনো হলেও বর্তমানে তা চরম আকার ধারণ করেছে। গ্যাসের চাপ এতটাই কম যে জেনারেটর চালানোর মতো ন্যূনতম চাপও পাওয়া যাচ্ছে না। চাহিদার মাত্র ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে।”

তিনি জানান, তুলা থেকে সুতা, সুতা থেকে কাপড়, এরপর ডায়িং, কাটিং, ওয়াশিং এবং পোশাক উৎপাদন প্রতিটি ধাপে গ্যাস অপরিহার্য। কিন্তু এখন এসব ধাপে গড়ে ৭০ শতাংশ কম উৎপাদন হচ্ছে। এতে শিল্পের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। শুধু উৎপাদনই নয়, আমদানি, রপ্তানি, ব্যাংক, বীমা, কর্মসংস্থান সব কিছুই হুমকির মুখে।

এই সংকট সামাল দিতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তাতেও কাঙ্ক্ষিত ফল মিলছে না। তিনি বলেন, “ডিজেল দিয়ে জেনারেটর চালানো হচ্ছে, বিদ্যুতের সহায়তাও নেওয়া হচ্ছে কিন্তু এতে ব্যয় তিনগুণ বেড়ে যায়। ভারী শিল্পে দীর্ঘ সময় এভাবে উৎপাদন চালানো সম্ভব নয়। কেউ কেউ সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস নিয়ে অল্প সময়ের জন্য কাজ চালানোর চেষ্টা করছেন।”

আব্দুল হাই সরকার মনে করেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বর্তমান কাঠামো ও সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে বিদেশি বিনিয়োগ টানতে আলাদা কোনো উদ্যোগের প্রয়োজন ছিল না। তবে গ্যাস সংকটের কারণে সেই সম্ভাবনা মুখ থুবড়ে পড়ছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “গ্যাস সমস্যার স্থায়ী সমাধান ছাড়া কোনো পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হবে না। অতীতেও এ ধরনের সংকটে অনেক চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু ফল আসেনি। এবার সময় এসেছে কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের।”

সিলেট, ভোলা ও সমুদ্রের তলদেশে গ্যাস রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে বিদেশি বিশেষজ্ঞ এবং অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করতে হবে। আমাদের নিজস্ব গ্যাস উত্তোলন ছাড়া বিকল্প নেই।”

সার্বিকভাবে গ্যাস সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে দেশের শিল্পখাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় অনিশ্চয়তা তৈরি হবে বলে সতর্ক করেন এই অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী।

নিউজটি শেয়ার করুন

শিল্পখাতে বিনিয়োগে বড় বাধা গ্যাস সংকট: আব্দুল হাই সরকার

আপডেট সময় ১২:১৮:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

 

দেশের বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতের বিকাশে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্যাস সংকট এমন মন্তব্য করেছেন বিটিএমএর সাবেক সভাপতি ও বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবির চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নতুন বিনিয়োগে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও সবচেয়ে ভয়াবহ সংকট হলো গ্যাসের ঘাটতি।

তার ভাষায়, “শিল্পে গ্যাস সংকট অনেক পুরোনো হলেও বর্তমানে তা চরম আকার ধারণ করেছে। গ্যাসের চাপ এতটাই কম যে জেনারেটর চালানোর মতো ন্যূনতম চাপও পাওয়া যাচ্ছে না। চাহিদার মাত্র ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে।”

তিনি জানান, তুলা থেকে সুতা, সুতা থেকে কাপড়, এরপর ডায়িং, কাটিং, ওয়াশিং এবং পোশাক উৎপাদন প্রতিটি ধাপে গ্যাস অপরিহার্য। কিন্তু এখন এসব ধাপে গড়ে ৭০ শতাংশ কম উৎপাদন হচ্ছে। এতে শিল্পের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। শুধু উৎপাদনই নয়, আমদানি, রপ্তানি, ব্যাংক, বীমা, কর্মসংস্থান সব কিছুই হুমকির মুখে।

এই সংকট সামাল দিতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তাতেও কাঙ্ক্ষিত ফল মিলছে না। তিনি বলেন, “ডিজেল দিয়ে জেনারেটর চালানো হচ্ছে, বিদ্যুতের সহায়তাও নেওয়া হচ্ছে কিন্তু এতে ব্যয় তিনগুণ বেড়ে যায়। ভারী শিল্পে দীর্ঘ সময় এভাবে উৎপাদন চালানো সম্ভব নয়। কেউ কেউ সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস নিয়ে অল্প সময়ের জন্য কাজ চালানোর চেষ্টা করছেন।”

আব্দুল হাই সরকার মনে করেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বর্তমান কাঠামো ও সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে বিদেশি বিনিয়োগ টানতে আলাদা কোনো উদ্যোগের প্রয়োজন ছিল না। তবে গ্যাস সংকটের কারণে সেই সম্ভাবনা মুখ থুবড়ে পড়ছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “গ্যাস সমস্যার স্থায়ী সমাধান ছাড়া কোনো পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হবে না। অতীতেও এ ধরনের সংকটে অনেক চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু ফল আসেনি। এবার সময় এসেছে কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের।”

সিলেট, ভোলা ও সমুদ্রের তলদেশে গ্যাস রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে বিদেশি বিশেষজ্ঞ এবং অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করতে হবে। আমাদের নিজস্ব গ্যাস উত্তোলন ছাড়া বিকল্প নেই।”

সার্বিকভাবে গ্যাস সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে দেশের শিল্পখাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় অনিশ্চয়তা তৈরি হবে বলে সতর্ক করেন এই অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী।