শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে বিএসইসির জরুরি উদ্যোগ

- আপডেট সময় ১০:৩৭:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
- / 29
দেশের শেয়ারবাজারে চলমান পতন ঠেকাতে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারে একাধিক তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ার সূচকের ধারাবাহিক নিম্নমুখী প্রবণতা এবং অস্বাভাবিক বিক্রির চাপ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বাজার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর, ফারজানা লালারুখ, যুগ্ম সচিব দেলোয়ার হোসেনসহ টাস্কফোর্স সদস্য ও নির্বাহী পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, বাজারে যেসব শেয়ারে অস্বাভাবিক বিক্রির চাপ দেখা যাচ্ছে, সেগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে জ্ঞান ও সচেতনতা বাড়াতে টেলিভিশনে টক শো ও বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হবে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) ও বিএএসএম পুঁজিবাজার সংক্রান্ত শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুঁজিবাজার বিষয়ে ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে কার্যক্রম চালানো হবে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে এসব বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে।
আইপিওর মাধ্যমে মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর আওতায় রাষ্ট্রমালিকানাধীন লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার বাজারে ছাড়ার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি লাভজনক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করা হবে। বিশেষ করে টেক্সটাইল ও ওষুধ খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার বাজারে আনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
এ ছাড়া, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তিতে আগ্রহী নতুন কোম্পানিগুলোর জন্য করছাড় সুবিধার প্রস্তাব দেওয়া হবে। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে ব্যাংক নির্ভরতা কমিয়ে শেয়ারবাজারকে প্রধান উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের স্বার্থে অন্যান্য আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সঙ্গে বিএসইসির সমন্বয় আরও জোরদার করা হবে। আগামী জাতীয় বাজেটে বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ করছাড়ের প্রস্তাব রাখা হবে। এর মধ্যে লভ্যাংশ আয়ের ওপর করছাড় এবং পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য অতিরিক্ত কর প্রণোদনা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এই সব উদ্যোগের লক্ষ্য একটাই পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা পুনঃস্থাপন।