শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ায় গভীর উদ্বেগ, ব্যবসায়ীদের দাবি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার

- আপডেট সময় ০১:২৮:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
- / 19
শিল্প খাতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা ও শিল্প উদ্যোক্তারা। তাঁদের দাবি, এই অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি অবিলম্বে স্থগিত করে নতুন করে যৌক্তিকভাবে দাম নির্ধারণ করতে হবে।
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দেওয়া এক চিঠিতে তাঁরা বলেছেন, গ্যাসের এই মূল্যবৃদ্ধি দেশের শিল্প, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। এতে স্থানীয় উদ্যোক্তারা নতুন করে শিল্পে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হবেন এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে রয়েছেন বিসিআই সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, বিজিএমইএর প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন, বিটিএমইএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, ঢাকা চেম্বার সভাপতি তাসকিন আহমেদসহ আরও অনেকে।
ব্যবসায়ী নেতারা অভিযোগ করেন, গ্যাসের দাম বাড়ানোর পূর্ববর্তী সিদ্ধান্তেও কোনো পক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ১২ টাকা থেকে ৩০ টাকায় উন্নীত করা হয়। অথচ এই বাড়তি দাম দিয়েও কারখানাগুলো চাহিদামতো গ্যাস পায়নি। অনেক প্রতিষ্ঠানকে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম উৎপাদন করতে হয়েছে।
তাঁরা বলেন, সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা সামাল দিয়ে শিল্পখাত একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। ঠিক এই সময়েই আবারও গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর নতুন চাপ সৃষ্টি করেছে।
চিঠিতে বলা হয়, গ্যাসের এই মূল্যবৃদ্ধি শুধু বড় শিল্প নয়, অতি ক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পথেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। ভবিষ্যতের উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হবেন, যা অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তাঁরা আরও বলেন, বর্তমানে ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ, শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারে শুল্কসংক্রান্ত ঝুঁকি সবমিলিয়ে ব্যবসা খাত চাপে রয়েছে। এর মধ্যে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে যাবে।
এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, বিইআরসি’র সিদ্ধান্ত স্থগিত করে সকল অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে গ্যাসের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা হোক। এই চাহিদাই এখন দেশের শিল্প ও ব্যবসায়ীদের অভিন্ন প্রত্যাশা।