ট্রাম্পের ‘শাস্তিমূলক’ শুল্কে কেঁপে উঠল মার্কিন শেয়ারবাজার, নামছে ধসের ছায়া
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা নতুন মোড় নিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণায়। চীনের পাল্টা শুল্কারোপের জবাবে ট্রাম্প সরকার চীনা পণ্যে অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ যুক্ত করে সর্বমোট ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যা কার্যকর হবে ৯ এপ্রিল থেকে। হোয়াইট হাউসের এই ঘোষণার পরপরই মার্কিন শেয়ারবাজারে দ্বিতীয় দফায় বড় ধরনের ধস নামে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘শাস্তিমূলক’ সিদ্ধান্ত বিশ্ববাজারে আস্থার সংকট তৈরি করেছে। এর আগে চীনের পাল্টা পদক্ষেপেই প্রথম ধাক্কা খায় মার্কিন বাজার। এরপর টানা কয়েক দিন সূচক নিম্নমুখী থাকার পর এবার নতুন শুল্কে আঘাত আরও গভীর হলো।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক দিনের শেষে বন্ধ হয় ৫০০০ পয়েন্টের নিচে, যা এক বছরের মধ্যে প্রথম। দিনের সর্বনিম্ন পর্যায় থেকে সূচকটি ১৮.৯ শতাংশ কমে বন্ধ হয়, যা বাজারকে ‘বিয়ার জোন’-এ নিয়ে গেছে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্পের ঘোষণার পর মাত্র চার কার্যদিবসে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচভুক্ত কোম্পানিগুলোর বাজারমূল্য কমেছে প্রায় ৫.৮ ট্রিলিয়ন ডলার যা ১৯৫০ সালের পর এই সূচকে সর্বোচ্চ চার দিনের ক্ষতি।
নাসডাক সূচকও ভয়াবহ পতনের মুখে পড়ে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া দরপতনে সূচকটি ডিসেম্বরের সর্বোচ্চ থেকে ২৪.৩ শতাংশ নিচে নেমে এসেছে। একইভাবে ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়ালও ডিসেম্বরের রেকর্ড থেকে ১৬.৪ শতাংশ হারিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাণিজ্য যুদ্ধের অনিশ্চয়তা এবং হঠাৎ করে নেওয়া শুল্কনীতির সিদ্ধান্ত বাজারে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। গ্লোবাল্ট ইনভেস্টমেন্টসের সিনিয়র পোর্টফোলিও ম্যানেজার থমাস মার্টিন বলেন, “এই ধরনের অস্থিরতা বাজারকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়। বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকতে হবে, কারণ ঝুঁকি এখনো কাটেনি।”
শেয়ারবাজারের লাগাতার এই পতন শুধু বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগই বাড়ায়নি, বরং বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে এক ধরনের চাপও তৈরি করেছে। অনেকে বলছেন, যদি শিগগিরই স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা না যায়, তাহলে মার্কিন অর্থনীতি এক গভীর মন্দার মুখে পড়তে পারে।