ঢাকা ০২:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ দুই বছর বাড়ল, উৎপাদন শুরু নিয়ে অনিশ্চয়তা ভারতের উত্তর প্রদেশে বিয়ের গাড়ি দুর্ঘটনা, বরসহ নিহত একই পরিবারের ৮ জন শেরপুরের কাটাবাড়ী সীমান্তে বিদ্যুৎস্পর্শে বন্য হাতির মৃত্যু, উদ্বিগ্ন পরিবেশকর্মীরা নওগাঁর রায়হান আলম: আমচাষে নবজাগরণ ঘটানো এক সাহসী কৃষক গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে আগামী সপ্তাহেই : ট্রাম্প কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের ডোনেশন ওয়েবসাইট উদ্বোধন কুমিল্লার মুরাদনগরে ট্রিপল মার্ডার: দুই দিন পর মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার ২ জন লোহাগড়ায় একসঙ্গে ৩ কন্যা সন্তানের জন্ম তুরস্কে জুলাইয়ে বিরল তুষারপাত, অন্যদিকে দাবানলে বিপর্যস্ত দক্ষিণাঞ্চল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না: সচিবের হুঁশিয়ারি

খেলাপি ঋণ বাড়লেও সরকারি ব্যাংকে আস্থা, আমানত বেড়েছে ৩৪ হাজার কোটি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:২৪:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
  • / 5

ছবি সংগৃহীত

 

সরকারি ব্যাংকে খেলাপির পরিমাণ বেশি হলেও আমানতকারীদের আস্থার ঘাটতি দেখা যায়নি। গত ৯ মাসে এসব ব্যাংকে নতুন আমানত এসেছে প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা। সঠিক ব্যবস্থাপনা ও নীতিমালার কারণে বড় কোনো সংকট তৈরি হয়নি বলে মনে করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। পাশাপাশি খেলাপি আদায় ও আমানত সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করায় কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজের নতুন উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে বলেও দাবি তাদের। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হলে ব্যাংক খাত ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে।

গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর রাষ্ট্রের নানা খাতের মতো ব্যাংক খাতের ক্ষতও প্রকাশ পেয়েছে। একদিকে আমানতকারীদের টাকায় ব্যাংকগুলো টিকে আছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঋণ নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান বোর্ড ধাপে ধাপে খেলাপি ঋণের প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করছে। তাদের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ খেলাপি, যার পরিমাণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপির অংশ ৪৫ শতাংশ।

তবুও সরকারি ব্যাংকের ওপর আস্থা হারায়নি সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, গত জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ৩৪ হাজার ২৫৪ কোটি টাকার নতুন আমানত জমা হয়েছে।

অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল বাশার বলেন, দক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে গ্রাহকের আস্থা ফিরছে। এর ফলে ব্যাংকগুলোর স্থিতিশীলতা বাড়ছে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

জনতা ব্যাংক পিএলসি, যেটি খেলাপি ঋণের চাপে নুয়ে পড়েছিল, সেখানে প্রথমবারের মতো কর্মীদের জন্য আমানত সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ ও খেলাপি আদায়ে প্রণোদনা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান জানিয়েছেন, যেসব কর্মকর্তা নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করবেন, তারা পদোন্নতিতে অগ্রাধিকার পাবেন। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যক্তিগত অর্জনের জন্যও কাজ করতে উৎসাহিত হবেন।

অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, লোন বিতরণে অনিয়মের প্রবণতা আগের তুলনায় কমছে। আগে যেমন রাজনৈতিক প্রভাবে ঋণ অনুমোদন হতো, এখন সেই সুযোগ নেই। এ ধারা বজায় থাকলে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো আবারও শক্তিশালী অবস্থায় ফিরতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সরকারি ব্যাংকগুলোতে জানুয়ারি-মার্চ সময়ে আমানত বেড়েছে, তবে বেসরকারি ব্যাংকে এ সময়ে আমানত প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা কমেছে। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট আমানতের পরিমাণ ১৮ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

খেলাপি ঋণ বাড়লেও সরকারি ব্যাংকে আস্থা, আমানত বেড়েছে ৩৪ হাজার কোটি

আপডেট সময় ০৩:২৪:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

 

সরকারি ব্যাংকে খেলাপির পরিমাণ বেশি হলেও আমানতকারীদের আস্থার ঘাটতি দেখা যায়নি। গত ৯ মাসে এসব ব্যাংকে নতুন আমানত এসেছে প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা। সঠিক ব্যবস্থাপনা ও নীতিমালার কারণে বড় কোনো সংকট তৈরি হয়নি বলে মনে করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। পাশাপাশি খেলাপি আদায় ও আমানত সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করায় কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজের নতুন উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে বলেও দাবি তাদের। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হলে ব্যাংক খাত ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে।

গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর রাষ্ট্রের নানা খাতের মতো ব্যাংক খাতের ক্ষতও প্রকাশ পেয়েছে। একদিকে আমানতকারীদের টাকায় ব্যাংকগুলো টিকে আছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঋণ নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান বোর্ড ধাপে ধাপে খেলাপি ঋণের প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করছে। তাদের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ খেলাপি, যার পরিমাণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপির অংশ ৪৫ শতাংশ।

তবুও সরকারি ব্যাংকের ওপর আস্থা হারায়নি সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, গত জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ৩৪ হাজার ২৫৪ কোটি টাকার নতুন আমানত জমা হয়েছে।

অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল বাশার বলেন, দক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে গ্রাহকের আস্থা ফিরছে। এর ফলে ব্যাংকগুলোর স্থিতিশীলতা বাড়ছে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

জনতা ব্যাংক পিএলসি, যেটি খেলাপি ঋণের চাপে নুয়ে পড়েছিল, সেখানে প্রথমবারের মতো কর্মীদের জন্য আমানত সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ ও খেলাপি আদায়ে প্রণোদনা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান জানিয়েছেন, যেসব কর্মকর্তা নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করবেন, তারা পদোন্নতিতে অগ্রাধিকার পাবেন। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যক্তিগত অর্জনের জন্যও কাজ করতে উৎসাহিত হবেন।

অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, লোন বিতরণে অনিয়মের প্রবণতা আগের তুলনায় কমছে। আগে যেমন রাজনৈতিক প্রভাবে ঋণ অনুমোদন হতো, এখন সেই সুযোগ নেই। এ ধারা বজায় থাকলে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো আবারও শক্তিশালী অবস্থায় ফিরতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সরকারি ব্যাংকগুলোতে জানুয়ারি-মার্চ সময়ে আমানত বেড়েছে, তবে বেসরকারি ব্যাংকে এ সময়ে আমানত প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা কমেছে। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট আমানতের পরিমাণ ১৮ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।