মাগুরায় ধর্ষণের প্রতিবাদে জামায়াতের পাঁচ দফা দাবি: দ্রুত বিচার ও কোরআনের আইন বাস্তবায়নের আহ্বান

- আপডেট সময় ০৫:২০:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
- / 24
মাগুরায় শিশু নির্যাতন ও হত্যার নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ধর্ষণের মতো সামাজিক ব্যাধি নির্মূলের লক্ষ্যে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগ।
শনিবার (১৫ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়। মানববন্ধনে শত শত নারী অংশগ্রহণ করেন এবং সরকারের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
জামায়াতের পাঁচ দফা দাবি:
১. মাগুরায় শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচার এক সপ্তাহের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে এবং ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।
২. সমস্ত ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে।
৩. বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করতে এক মাসের মধ্যে ধর্ষণ ও হত্যার বিচার সম্পন্ন করে রায় কার্যকর করতে হবে।
৪. সামাজিক অবক্ষয় ও নৈতিকতার অভাব ধর্ষণের মূল কারণ। ইসলামী শিক্ষা চালু এবং নৈতিকতা ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিতে হবে।
৫. বাংলাদেশের ৮৭ শতাংশ জনগণ মুসলিম, তাই সমাজে ধর্ষণসহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কোরআনের আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
মানববন্ধনে জামায়াতের মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যাপক নূরুন্নিসা সিদ্দীকা বলেন, “শুধু ধর্ষণ নয়, মাগুরার শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারের ঘোষণা ও আমাদের পাঁচ দফা দাবির আলোকে বিচার না হলে নারী সমাজ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।”
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সাবিকুন্নাহার মুন্নী বলেন, “বিগত স্বৈরাচারী সরকারের ছত্রছায়ায় ধর্ষণ মহামারির আকার ধারণ করেছে। ছাত্রলীগ নেতা ধর্ষণের ‘সেঞ্চুরি’ করে মিষ্টি বিতরণ করেছে, অথচ আওয়ামী লীগ সরকার তার বিচার করেনি। এ থেকেই স্পষ্ট যে, সরকার ধর্ষণের বিস্তার ঘটাতে সাহায্য করেছে।”
জামায়াতের আরেক কেন্দ্রীয় নেতা নাজমুন নাহার নীলু বলেন, “আমাদের সমাজে নৈতিকতার চরম সংকট চলছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিকতার অভাব, আইনশৃঙ্খলার দুর্বলতা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি ধর্ষণের মতো অপরাধকে বাড়িয়ে দিয়েছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, গত আট বছরে ৩,৫০০ শিশু ধর্ষণের শিকার হলেও একটি মামলারও সঠিক বিচার হয়নি। আমরা দ্রুত বিচার আইনের আওতায় ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
মানববন্ধনে বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, ধর্ষণ ও হত্যার মতো অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং সমাজে নৈতিক মূল্যবোধ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যথায় জনগণ কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।