জুলাই গণহত্যার বিচার দেশে হবে, আইসিসিতে যাবে না: চিফ প্রসিকিউটর
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে সংঘটিত জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসিতে যাবে না, বাংলাদেশেই হবে। দেশের বিচার ব্যবস্থা এ ধরনের গুরুতর অপরাধ মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট সক্ষম বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ট্রাইব্যুনালে মামলার শুনানি শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “এই মামলার বিচার সম্পূর্ণভাবে দেশের আদালতেই হবে। তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) বা দ্য হেগের যে কোনো সহযোগিতা আমরা সাদরে গ্রহণ করবো।”
এদিন মামলার অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন গুম ও নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীরা। তারা মনে করছেন, বিচারপ্রক্রিয়া দৃশ্যমান হওয়ায় রাজনৈতিক অপপ্রচার ও হুমকি কমে আসবে।
প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে চট্টগ্রামে সংঘটিত বিক্ষোভে ছাত্রদল নেতা ওয়াসিমসহ নয়জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ৪৫৯ জন। আহতদের অধিকাংশই পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের সম্পৃক্ততার অভিযোগও উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার মামলার শুনানিতে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম ও যুবলীগের অস্ত্রধারী নেতা ফিরোজকে। আদালত ফিরোজকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং সাবেক এমপি করিমকে একদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
এছাড়া আশুলিয়ার লাশ পোড়ানোর ঘটনায় তিনজনকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেয়া হয়, যাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল কাফি।
এই দিন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন গুমের শিকার পরিবারের সদস্যরা। তারা আশা প্রকাশ করেন, বিচার এগিয়ে গেলে দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান হবে। সাবেক কর্নেল হাসিনুর ও হাসান নাসির সাংবাদিকদের বলেন, “বিচার বাস্তবে রূপ নিচ্ছে, যা আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে।”
ভুক্তভোগীদের মতে, বিচার যদি দৃশ্যমান হয়, তাহলে বিদেশ থেকে প্রবাসী নেতাদের হুমকি ও অপপ্রচারও হ্রাস পাবে।
গণহত্যার বিচারে এই অগ্রগতি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার সক্ষমতা ও আন্তর্জাতিক মান রক্ষার প্রমাণ বহন করে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।