ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাঙ্গি চাষে কৃষকদের সফলতা
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় বাঙ্গি চাষে সাফল্য অর্জন করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। চুমুরদি ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী গ্রামে ৫০ জন কৃষক ৬০ বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ করে নিজেদের ভাগ্য বদলেছেন। প্রতিবছর জমির পরিমাণ বাড়াচ্ছে তারা, এবং বাঙ্গি চাষ এখন একটি লাভজনক পেশা হয়ে উঠেছে।
গত বছর এই এলাকায় ৫০ বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ হয়েছিল, এবং ফলন ছিল ভালো। এ বছরও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাঙ্গির ফলন হয়েছে আরো ভালো। বিশেষ করে, বাঙ্গির আকার বেশ বড় এবং এর স্বাদও অতুলনীয়। ভাঙ্গার বাঙ্গি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু, যার কারণে দেশব্যাপী ব্যবসায়ীরা এখানে এসে বাঙ্গি কিনতে ছুটে আসেন।
বাঙ্গি বিক্রি হয় শত হিসেবে, এবং একশত বাঙ্গির দাম ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ১০ থেকে ১২ কেজি ওজনের বাঙ্গি মাঠে পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশের এই ক্ষেতগুলো প্রতিদিন শত শত মানুষ দেখতে আসে এবং বাঙ্গি কিনে নিয়ে যায়।
পূর্ব সদরদী গ্রামে বাঙ্গি চাষ শুরু করেন মাসুদ শেখ, যিনি ২০০০ সালে ১৬ শতাংশ জমিতে প্রথম বাঙ্গি চাষ শুরু করেছিলেন। বর্তমানে তিনি পৌনে চার বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ করছেন। তিনি জানান, বাঙ্গি চাষে খরচ অনেক বেশি, তবে এই বছর তার ফলন ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি করেছেন এবং এখনো জমিতে প্রচুর বাঙ্গি রয়েছে। গত বছর ৮ লাখ টাকা আয় করেছিলেন তিনি, যা তার পরিবারের খরচ মেটাতে সহায়ক হয়েছে।
আরেক কৃষক কাদের বেপারী বলেন, ‘বাঙ্গি চাষের মাধ্যমে আমি আমার ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছি। এখন আমি স্বাবলম্বী।’ অন্যান্য কৃষকও তাদের সফলতার কথা শেয়ার করেছেন, এবং সবাই একমত যে, বাঙ্গি চাষ লাভজনক এবং ভবিষ্যতে এই ব্যবসা আরো বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
ভাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোল্লা আল মামুন জানান, ভাঙ্গা উপজেলায় মোট ৫০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হচ্ছে, যার মধ্যে ৩০ হেক্টর জমি পূর্ব সদরদী গ্রামে। তারা জৈব পদ্ধতি এবং আইপিএম পদ্ধতি মেনে চাষ করছেন, যার ফলস্বরূপ উৎপাদন ভালো হয়েছে।