ঢাকা ০৮:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
শতাব্দীর আতঙ্ক ‘নর’ইস্টার’ ঝড় নিয়ে প্রকাশিত হলো চাঞ্চল্যকর সব সত্য ভালুকায় গৃহবধূ ও দুই সন্তান হত্যা: প্রধান আসামি দেবর নজরুল গ্রেপ্তার উদ্ভিদের গোপন শব্দে সাড়া দেয় পতঙ্গ ও প্রাণীরা: গবেষণায় উদ্ভিদের ভাষার রহস্য উদঘাটন বাংলাদেশের জাহাজ ও বন্দর খাতে বিনিয়োগে সিঙ্গাপুরকে আহ্বান: নৌ উপদেষ্টা শামীম ওসমান ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা, সন্তানদের সম্পদ বিবরণীর নোটিশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ও জোট দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠায় একমত হয়েছে: আলী রীয়াজ অপরাধী যেন কেউ ছাড়া না পায়, কঠোরভাবে দমন করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার জনগণের সেন্টিমেন্ট বুঝে আগামী রমজানের আগেই নির্বাচন দিন: কুড়িগ্রামে রিজভী মাদরাসা আমাদের ঐতিহ্যের ধারক, এটিকে টিকিয়ে রাখতে হবে: ধর্ম উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস কখনো ‘জাতীয় সংস্কারক’ উপাধির স্বীকৃতি চান নি: প্রেস উইং

টানা বৃষ্টিতে পচে যাচ্ছে সবজি, ক্ষতির মুখে পটুয়াখালীর কৃষকরা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:০১:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
  • / 14

ছবি সংগৃহীত

 

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারা গ্রামে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন সবজি চাষিরা। গ্রামের মাঠে সবুজ সবজি খেত এখন বিবর্ণ হয়ে পড়েছে। লতাগুল্মের পাতা ঝরে পড়েছে, গাছগুলো হলদে হয়ে গেছে। ফুল ও ফলধরা ডালপালা নেতিয়ে গেছে। এক কথায়, কুমিরমারার প্রাণের খেত যেন নিস্তেজ হয়ে পড়েছে।

এই গ্রামে শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ বছরজুড়ে শাকসবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। শুধু ধান নয়, বর্ষা-গ্রীষ্ম-শীত মিলিয়ে ১২ মাসই গ্রামের কৃষকরা বাড়ির আঙিনা থেকে শুরু করে ক্ষেতের আইল পর্যন্ত সবজির চাষ করেন। বিশেষ করে করলার আবাদে বিখ্যাত এ গ্রাম। একজন চাষি শুধু করলার ক্ষেত থেকে গড়ে এক থেকে দুই লাখ টাকা আয় করার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সেই স্বপ্ন এখন ভেঙে চুরমার।

কৃষকরা জানান, গত বছর এই সময়টাতে পাখিমারা বাজারে করলাসহ অন্যান্য সবজির জমজমাট ব্যবসা ছিল। প্রতিদিন টনকে টন করলা বাজারে আসত। এবারে দৃশ্যপট ভিন্ন। মাঠে পানি জমে গাছ পচে গেছে। ফলন হয়েছে আশঙ্কাজনকভাবে কম। একে তো আবহাওয়ার প্রতিকূলতা, তার উপর কোনো রোগবালাই দেখা দিলে প্রতিকার করাও কঠিন হয়ে পড়ছে। অনেক কৃষকই বিনিয়োগ তুলে আনার আশা ছেড়ে দিয়েছেন।

সবজি চাষি নাজিম উদ্দিন জানান, “আমি তিন একর জমিতে করলার আবাদ করেছিলাম। এতদিন যে পরিশ্রম করেছি, সব পানির নিচে চলে গেল। এখন কীভাবে ঋণ শোধ করব, তা ভেবে পাচ্ছি না।”

অপর এক কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “গত বছর এই সময়ে বিক্রি করে লাখ টাকা আয় করেছিলাম। এবার মাঠে গিয়েই মন খারাপ হয়ে যায়। সব গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে, ফুল ধরেছে ঠিকই, কিন্তু ফল আসছে না।”

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরাফাত হোসেন বলেন, “আমরা নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করছি। কৃষকদের ফোনে ও সরাসরি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি যেন কৃষকরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে।”

স্থানীয়রা বলছেন, এমন দুর্যোগের পর সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য প্রণোদনা ও পুনর্বাসন সহায়তা না এলে তারা বড় ধরনের সংকটে পড়ে যাবেন। কারণ, তাদের জীবিকার একমাত্র ভরসা এই সবজিখেত। এখন তা বৃষ্টিতে ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তারা মানবেতর জীবন যাপনের শঙ্কায় আছেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

টানা বৃষ্টিতে পচে যাচ্ছে সবজি, ক্ষতির মুখে পটুয়াখালীর কৃষকরা

আপডেট সময় ০৪:০১:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

 

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারা গ্রামে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন সবজি চাষিরা। গ্রামের মাঠে সবুজ সবজি খেত এখন বিবর্ণ হয়ে পড়েছে। লতাগুল্মের পাতা ঝরে পড়েছে, গাছগুলো হলদে হয়ে গেছে। ফুল ও ফলধরা ডালপালা নেতিয়ে গেছে। এক কথায়, কুমিরমারার প্রাণের খেত যেন নিস্তেজ হয়ে পড়েছে।

এই গ্রামে শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ বছরজুড়ে শাকসবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। শুধু ধান নয়, বর্ষা-গ্রীষ্ম-শীত মিলিয়ে ১২ মাসই গ্রামের কৃষকরা বাড়ির আঙিনা থেকে শুরু করে ক্ষেতের আইল পর্যন্ত সবজির চাষ করেন। বিশেষ করে করলার আবাদে বিখ্যাত এ গ্রাম। একজন চাষি শুধু করলার ক্ষেত থেকে গড়ে এক থেকে দুই লাখ টাকা আয় করার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সেই স্বপ্ন এখন ভেঙে চুরমার।

কৃষকরা জানান, গত বছর এই সময়টাতে পাখিমারা বাজারে করলাসহ অন্যান্য সবজির জমজমাট ব্যবসা ছিল। প্রতিদিন টনকে টন করলা বাজারে আসত। এবারে দৃশ্যপট ভিন্ন। মাঠে পানি জমে গাছ পচে গেছে। ফলন হয়েছে আশঙ্কাজনকভাবে কম। একে তো আবহাওয়ার প্রতিকূলতা, তার উপর কোনো রোগবালাই দেখা দিলে প্রতিকার করাও কঠিন হয়ে পড়ছে। অনেক কৃষকই বিনিয়োগ তুলে আনার আশা ছেড়ে দিয়েছেন।

সবজি চাষি নাজিম উদ্দিন জানান, “আমি তিন একর জমিতে করলার আবাদ করেছিলাম। এতদিন যে পরিশ্রম করেছি, সব পানির নিচে চলে গেল। এখন কীভাবে ঋণ শোধ করব, তা ভেবে পাচ্ছি না।”

অপর এক কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “গত বছর এই সময়ে বিক্রি করে লাখ টাকা আয় করেছিলাম। এবার মাঠে গিয়েই মন খারাপ হয়ে যায়। সব গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে, ফুল ধরেছে ঠিকই, কিন্তু ফল আসছে না।”

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরাফাত হোসেন বলেন, “আমরা নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করছি। কৃষকদের ফোনে ও সরাসরি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি যেন কৃষকরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে।”

স্থানীয়রা বলছেন, এমন দুর্যোগের পর সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য প্রণোদনা ও পুনর্বাসন সহায়তা না এলে তারা বড় ধরনের সংকটে পড়ে যাবেন। কারণ, তাদের জীবিকার একমাত্র ভরসা এই সবজিখেত। এখন তা বৃষ্টিতে ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তারা মানবেতর জীবন যাপনের শঙ্কায় আছেন।