রাজস্থলীতে ৫০টি গ্রাম বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক থেকে বঞ্চিত

- আপডেট সময় ০৫:১৭:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
- / 6
বর্তমান আধুনিক যুগের এসেও রাজস্থলী উপজেলার বিশাল একটি অংশ নেটওয়ার্ক এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের বাইরে পড়ে রয়েছে।
রাজস্থলী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। সেখান থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটারের অভ্যন্তরে থাকা গ্রামের বাসিন্দারা এখনও বিদ্যুতের আলো হতে বঞ্চিত।
আধুনিক যুগেও মোবাইলের মাধ্যমে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় নানা ধরনের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।
গাইন্দ্যা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি বলেন, ‘এই গ্রামের বাসিন্দাদের আধুনিক সুযোগ সুবিধার জন্য বিদ্যুতের কোন বিকল্প নেই। বিদ্যুতের জন্য ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনাসহ সবকিছুর জন্য সমস্যা পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।
স্থানীয় শিক্ষার্থী উমংচিং মারমা বলেন, নেটওয়ার্কে যতো ডিজিটাল সুযোগ সুবিধা আছে তা আমরা পাচ্ছি না। আমাদের নেটওয়ার্কের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে একটি মোবাইল টাওয়ারের সুব্যবস্থা করে দিলে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উপকৃত হবো। পাশাপাশি আমাদের এলাকার প্রবাসীদের সুবিধা হবে।
অনুসন্ধানে জানা যায়,রাজস্থলী উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ৮টি পাড়া, ২নং ওয়ার্ডের ৪টি পাড়া, ৩নং ওয়ার্ডের ৬টি পাড়া, ৪নং ওয়ার্ডের ৬টি পাড়া, ৯নং ওয়ার্ডের ৩টি পাড়া,
গাইন্দ্যা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ৫টি পাড়া, ২নং ওয়ার্ডের ২টি পাড়া, ৪নং ওয়ার্ডের ৪টি পাড়া, ৭নং ওয়ার্ডের ২টি পাড়া, ৮নং ওয়ার্ডের ২টি পাড়া, ৯নং ওয়ার্ড ৩টি পাড়া এবং
বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের ৪টি পাড়াসহ তিন ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি পাড়া ও গ্রাম নেটওয়ার্ক এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ সেবা থেকে বঞ্চিত।
এই বিষয়ে ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবার্ট ত্রিপুরা বলেন, আমাদের ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের অনেক বড় একটি অংশ নেটওয়ার্ক এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। বর্তমানে দেশের অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং নেটওয়ার্কের আওতায় আসলেও আমরা অনেকটা পিছিয়ে আছি। সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নজর দিলে আমরাও উন্নয়নের অংশীদার হতে পারবো।
বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আদোমং মারমা বলেন আমাদের,বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের ৮,৯ নং ওয়ার্ড গুলো নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ সরবরাহ থেকে বঞ্চিত এবং তিনি বিদ্যুৎ, নেটওয়ার্ক সরবরাহ ব্যবস্থার দাবি জানান।
রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজীব কান্তি রুদ্র বলেন, রাজস্থলী উপজেলার তিন ইউনিয়নের অনেকগুলো পাড়া এবং গ্রাম বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং নেটওয়ার্ক বঞ্চিত রয়েছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে এসব এলাকার দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থান। এখানে উপজেলার সাথে অনেক জায়গার যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে গাড়ি দিয়েও যাওয়া সম্ভব হয় না। এছাড়াও স্থানীয় আঞ্চলিক সমস্যাগুলোর কারণে রাজস্থলী উপজেলার এই গ্রামগুলো বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এই উপজেলার দুর্গম গ্রাম এবং পাড়াগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা যতদিন উন্নত না হবে ততোদিন এইসব পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা প্রায় অসম্ভব। একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত এবং স্বাভাবিক হলেই এসব এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে।
নেটওয়ার্ক এবং বিদ্যুৎ বঞ্চিত পাহাড়ের মানুষ অন্ধকারে জীবন যাপন করছে। সরকারের উন্নয়নে পাহাড়ে জীবনমান রক্ষায় দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের লক্ষে জোর দাবি জানান ভুক্তভোগী বিদ্যুৎ বঞ্চিত এলাকাবাসী।