০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
ট্রাম্পের উপস্থিতিতে সিনারকে হারিয়ে ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন আলকারাজ ডিএমপির অভ্যন্তরীণ রদবদল: ৫ কর্মকর্তার নতুন দায়িত্ব নির্বাচনকালে তথ্যে প্রবাহে গণমাধ্যমকে বাধা দেওয়া হবে না: মাহফুজ আলম পৃথিবীর কোনো শক্তি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না: প্রেস সচিব মৌলভীবাজারে বাগানের কেয়ারটেকারকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা ভোটের পরিবেশ শতভাগ অনুকূলে : ইসি আনোয়ারুল বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণে লেবাননের মন্ত্রিসভার পরিকল্পনার ধাপসমূহ ২০২৬ সালে মায়ামিতে অনুষ্ঠিত হবে জি-২০ সম্মেলন: ট্রাম্প পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী

অকাল বন্যায় পদ্মার চরাঞ্চলে ডুবে গেছে বাদাম ও তিলের ফসল, সর্বস্বান্ত কৃষকরা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৫০:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
  • / 83

ছবি সংগৃহীত

 

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মা নদীর পানি আকস্মিকভাবে বাড়ায় গত এক সপ্তাহে চরাঞ্চলের প্রায় ৭০০ একর জমির বাদাম ও তিল ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে চরের কৃষকদের মধ্যে চরম হতাশা ও দুশ্চিন্তা বিরাজ করছে।

সরেজমিনে চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের চরকল্যানপুর, দিয়ারা গোপালপুর ও ঝাউকান্দা চরে দেখা যায়, প্রায় ৫০০ একর জমির বাদাম ও তিল ফসল সম্পূর্ণরূপে পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব জমির অধিকাংশ ফসল পাকার কাছাকাছি অবস্থায় ছিল। হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারেননি।

চরহরিরামপুর ইউনিয়নের আরজখার ডাঙ্গী ও চর শালেপুর মৌজার প্রায় ৫০ একর এবং গাজীরটেক ইউনিয়নের মাঝি ডাঙ্গী, বঙ্গেশ্বর ডাঙ্গী ও জয়দেব সরকার ডাঙ্গী গ্রামের আরও ৫০ একর জমির বাদাম ও তিল ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। একইভাবে চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের আ. গফুর মৃধা ডাঙ্গী, কামার ডাঙ্গী ও মাথাভাঙ্গা গ্রামের প্রায় ১০০ একর বাদাম ক্ষেত ডুবু ডুবু অবস্থায় রয়েছে।

চরের মাঠে দেখা গেছে, নারী-পুরুষ একত্রে পানির নিচ থেকে বাদাম তুলছেন। তারা জানান, ব্যয়ের অর্ধেকও ফেরত আসবে না। অনেকে আবার ঋণ করে চাষ করেছিলেন, এখন সেই ঋণ পরিশোধ নিয়েই ভাবনায় পড়েছেন।

দিয়ারা গোপালপুর মৌজার কৃষক আবেদ আলী বলেন, “আমার ১৮ বিঘা জমির বাদাম ক্ষেত পানির নিচে চলে গেছে। এখন পরিবার নিয়ে হাঁটু পানিতে নেমে কিছু বাদাম তুলছি, কিন্তু এগুলোর বাজারে তেমন দাম নেই।”

চরকল্যানপুরের চাষি কবির খালাসি জানান, “প্রায় দেড় একর জমির বাদাম ক্ষেত পুরো ডুবে গেছে। এখন বাদাম তুললেও বেশিরভাগের ভেতরে দানা নেই। বাড়িতে নিতে খরচ হবে প্রায় ৯০ হাজার টাকা। লোকসান অনিবার্য।”

চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান মৃধা বলেন, “অন্তত ২ হাজার বিঘা জমির বাদাম ও তিল ফসল বিনষ্ট হয়েছে। কৃষকেরা কার্যত সর্বস্বান্ত। তাদের পাশে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি।”

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মামুনুর রহমান জানান, “ক্ষতিগ্রস্ত মাঠগুলোর জরিপ ও পরিদর্শন চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় এনে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

নিউজটি শেয়ার করুন

অকাল বন্যায় পদ্মার চরাঞ্চলে ডুবে গেছে বাদাম ও তিলের ফসল, সর্বস্বান্ত কৃষকরা

আপডেট সময় ১০:৫০:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

 

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মা নদীর পানি আকস্মিকভাবে বাড়ায় গত এক সপ্তাহে চরাঞ্চলের প্রায় ৭০০ একর জমির বাদাম ও তিল ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে চরের কৃষকদের মধ্যে চরম হতাশা ও দুশ্চিন্তা বিরাজ করছে।

সরেজমিনে চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের চরকল্যানপুর, দিয়ারা গোপালপুর ও ঝাউকান্দা চরে দেখা যায়, প্রায় ৫০০ একর জমির বাদাম ও তিল ফসল সম্পূর্ণরূপে পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব জমির অধিকাংশ ফসল পাকার কাছাকাছি অবস্থায় ছিল। হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারেননি।

চরহরিরামপুর ইউনিয়নের আরজখার ডাঙ্গী ও চর শালেপুর মৌজার প্রায় ৫০ একর এবং গাজীরটেক ইউনিয়নের মাঝি ডাঙ্গী, বঙ্গেশ্বর ডাঙ্গী ও জয়দেব সরকার ডাঙ্গী গ্রামের আরও ৫০ একর জমির বাদাম ও তিল ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। একইভাবে চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের আ. গফুর মৃধা ডাঙ্গী, কামার ডাঙ্গী ও মাথাভাঙ্গা গ্রামের প্রায় ১০০ একর বাদাম ক্ষেত ডুবু ডুবু অবস্থায় রয়েছে।

চরের মাঠে দেখা গেছে, নারী-পুরুষ একত্রে পানির নিচ থেকে বাদাম তুলছেন। তারা জানান, ব্যয়ের অর্ধেকও ফেরত আসবে না। অনেকে আবার ঋণ করে চাষ করেছিলেন, এখন সেই ঋণ পরিশোধ নিয়েই ভাবনায় পড়েছেন।

দিয়ারা গোপালপুর মৌজার কৃষক আবেদ আলী বলেন, “আমার ১৮ বিঘা জমির বাদাম ক্ষেত পানির নিচে চলে গেছে। এখন পরিবার নিয়ে হাঁটু পানিতে নেমে কিছু বাদাম তুলছি, কিন্তু এগুলোর বাজারে তেমন দাম নেই।”

চরকল্যানপুরের চাষি কবির খালাসি জানান, “প্রায় দেড় একর জমির বাদাম ক্ষেত পুরো ডুবে গেছে। এখন বাদাম তুললেও বেশিরভাগের ভেতরে দানা নেই। বাড়িতে নিতে খরচ হবে প্রায় ৯০ হাজার টাকা। লোকসান অনিবার্য।”

চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান মৃধা বলেন, “অন্তত ২ হাজার বিঘা জমির বাদাম ও তিল ফসল বিনষ্ট হয়েছে। কৃষকেরা কার্যত সর্বস্বান্ত। তাদের পাশে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি।”

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মামুনুর রহমান জানান, “ক্ষতিগ্রস্ত মাঠগুলোর জরিপ ও পরিদর্শন চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় এনে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”