বর্ষা আসার আগেই আতঙ্কে কুড়িগ্রামবাসী, নদীভাঙনে হুমকিতে লাখো মানুষ

- আপডেট সময় ১২:৩৯:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
- / 49
বর্ষা ঘনিয়ে আসছে। এর আগেই নদীভাঙনের আশঙ্কায় দিন কাটছে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও গঙ্গাধর নদী পাড়ের লাখ লাখ মানুষের। বৈশাখের প্রথম দিকের কিছুটা বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে ইতোমধ্যে বেশ কিছু এলাকায় শুরু হয়েছে ভাঙন, আর কোথাও কোথাও ভাঙনের আগেই নিজের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষায় প্রতিরোধ গড়ছে স্থানীয়রা।
জেলার উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ছয়ানীপাড়া গ্রামে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নদীপাড়ে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ কাঁধে করে এনে সম্ভাব্য ভাঙনপ্রবণ স্থানে ফেলছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের মতে, সরকারিভাবে কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় নিজেরাই সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন বর্ষার আগেই প্রস্তুতি নিতে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত পাঁচটি প্রধান নদ-নদীর দুই পাড়ের মোট দৈর্ঘ্য ৩৭৪ কিলোমিটার। তবে এর মধ্যে মাত্র ৬৬ কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ী তীররক্ষা কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে বাকি ৩০৮ কিলোমিটার এলাকা অরক্ষিত থেকে যাচ্ছে, যেখানে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে প্রায় পাঁচ হাজার ঘরবাড়ি এবং হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়।
ফকির মোহাম্মদ ছয়ানী পাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্বাস আলী বলেন, “প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডে বারবার গিয়েছি, কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি। তাই নিজেরাই উদ্যোগ নিয়েছি, যদি ঘরবাড়ি রক্ষা করা যায়।”
বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া জানান, তার ইউনিয়নটি তিন দিক থেকে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীর চাপে রয়েছে। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পুরো ইউনিয়ন মানচিত্র থেকেই মুছে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, নদীভাঙনের বিষয়টি তারা অবগত আছেন এবং বর্ষা আসার আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ১৬টি নদ-নদীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাঙনপ্রবণ নদীগুলোর সম্মিলিত দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮৭ কিলোমিটার। প্রতিবারের মতো এবারও বর্ষা আসার আগে নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোর মানুষ।