১০:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
ট্রাম্পের উপস্থিতিতে সিনারকে হারিয়ে ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন আলকারাজ ডিএমপির অভ্যন্তরীণ রদবদল: ৫ কর্মকর্তার নতুন দায়িত্ব নির্বাচনকালে তথ্যে প্রবাহে গণমাধ্যমকে বাধা দেওয়া হবে না: মাহফুজ আলম পৃথিবীর কোনো শক্তি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না: প্রেস সচিব মৌলভীবাজারে বাগানের কেয়ারটেকারকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা ভোটের পরিবেশ শতভাগ অনুকূলে : ইসি আনোয়ারুল বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণে লেবাননের মন্ত্রিসভার পরিকল্পনার ধাপসমূহ ২০২৬ সালে মায়ামিতে অনুষ্ঠিত হবে জি-২০ সম্মেলন: ট্রাম্প পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী

কেন্দুয়ার হাওরে মিষ্টি কুমড়া চাষে লোকসানের ফাঁদে কৃষকরা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:৩৬:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • / 62

ছবি সংগৃহীত

 

গত বছর মিষ্টি কুমড়া চাষে ভালো মুনাফা পেয়েছিলেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের চারিতলা গ্রামের কৃষকরা। সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবারও তারা মিষ্টি কুমড়া চাষে মনোনিবেশ করেন। তবে এবার আর ভাগ্য সহায় হয়নি। বাজারে ন্যায্য দাম না থাকায় লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচ উঠিয়ে আনার বিষয়েও চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন তারা।

এই গ্রামের অনেক কৃষকই গত বছরের লাভের প্রলোভনে এবার অধিক জমিতে মিষ্টি কুমড়া আবাদ করেন। বীজ, সার, কীটনাশক, সেচসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে চাষে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে, বর্তমান বাজার মূল্যে তা তোলাই দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। প্রতি মণ কুমড়ার মূল্য আশানুরূপ না হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।

চারিতলা গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, “গত বছর কুমড়া বিক্রি করে ভালো লাভ হয়েছিল। তাই এবার ৩ বিঘা জমিতে কুমড়া লাগাইছি। কিন্তু বাজারে দাম একদম পড়ে গেছে। প্রতি মণ কুমড়া বিক্রি করতে হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকায়, যেখানে খরচই উঠছে না।”

আরেক কৃষক রহিম উদ্দিন বলেন, “চাষাবাদের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে দাম পাচ্ছি তাতে ধার শোধ করতেই হিমশিম খাচ্ছি।”

স্থানীয় বাজারে কুমড়ার সরবরাহ বেশি থাকায় চাহিদা অনুযায়ী দাম পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান পাইকারি ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে কৃষকরা অভিযোগ করছেন, সরকার নির্ধারিত ন্যায্য মূল্য না থাকায় তারা বারবার ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন ভালো হয়েছে। তবে বাজার ব্যবস্থাপনার অভাবে কৃষকরা লাভবান হতে পারছেন না।

স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা জানান, “কৃষকদের লোকসান যেন না হয়, সেজন্য আমরা বিকল্প বাজার খুঁজতে সহায়তা করছি। এছাড়া উৎপাদিত কুমড়ার সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের দিকেও নজর দেয়া হচ্ছে।”

কৃষকদের দাবি, সরকার যদি বাজার নিয়ন্ত্রণ করে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করে এবং কৃষিপণ্যের সঠিক বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তোলে, তবে তারা ভবিষ্যতে আবারও চাষে উৎসাহিত হবেন। বর্তমানে কুমড়া চাষে যে হতাশা তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে সরকারি সহায়তা তাদের একান্ত প্রয়োজন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

কেন্দুয়ার হাওরে মিষ্টি কুমড়া চাষে লোকসানের ফাঁদে কৃষকরা

আপডেট সময় ০৪:৩৬:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

 

গত বছর মিষ্টি কুমড়া চাষে ভালো মুনাফা পেয়েছিলেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের চারিতলা গ্রামের কৃষকরা। সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবারও তারা মিষ্টি কুমড়া চাষে মনোনিবেশ করেন। তবে এবার আর ভাগ্য সহায় হয়নি। বাজারে ন্যায্য দাম না থাকায় লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচ উঠিয়ে আনার বিষয়েও চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন তারা।

এই গ্রামের অনেক কৃষকই গত বছরের লাভের প্রলোভনে এবার অধিক জমিতে মিষ্টি কুমড়া আবাদ করেন। বীজ, সার, কীটনাশক, সেচসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে চাষে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে, বর্তমান বাজার মূল্যে তা তোলাই দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। প্রতি মণ কুমড়ার মূল্য আশানুরূপ না হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।

চারিতলা গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, “গত বছর কুমড়া বিক্রি করে ভালো লাভ হয়েছিল। তাই এবার ৩ বিঘা জমিতে কুমড়া লাগাইছি। কিন্তু বাজারে দাম একদম পড়ে গেছে। প্রতি মণ কুমড়া বিক্রি করতে হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকায়, যেখানে খরচই উঠছে না।”

আরেক কৃষক রহিম উদ্দিন বলেন, “চাষাবাদের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে দাম পাচ্ছি তাতে ধার শোধ করতেই হিমশিম খাচ্ছি।”

স্থানীয় বাজারে কুমড়ার সরবরাহ বেশি থাকায় চাহিদা অনুযায়ী দাম পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান পাইকারি ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে কৃষকরা অভিযোগ করছেন, সরকার নির্ধারিত ন্যায্য মূল্য না থাকায় তারা বারবার ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন ভালো হয়েছে। তবে বাজার ব্যবস্থাপনার অভাবে কৃষকরা লাভবান হতে পারছেন না।

স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা জানান, “কৃষকদের লোকসান যেন না হয়, সেজন্য আমরা বিকল্প বাজার খুঁজতে সহায়তা করছি। এছাড়া উৎপাদিত কুমড়ার সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের দিকেও নজর দেয়া হচ্ছে।”

কৃষকদের দাবি, সরকার যদি বাজার নিয়ন্ত্রণ করে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করে এবং কৃষিপণ্যের সঠিক বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তোলে, তবে তারা ভবিষ্যতে আবারও চাষে উৎসাহিত হবেন। বর্তমানে কুমড়া চাষে যে হতাশা তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে সরকারি সহায়তা তাদের একান্ত প্রয়োজন।