চাল আমদানির মেয়াদ শেষ, দাম বৃদ্ধি নিয়ে বিপাকে পাইকাররা

- আপডেট সময় ০৭:২৬:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
- / ৫০৬ বার পড়া হয়েছে
দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত চাল আমদানির অনুমতি দেয়। সেই সুযোগে গত কয়েক মাসে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি হয় ভারত থেকে। এমনকি বাংলা নববর্ষ, ১৪ এপ্রিল, পহেলা বৈশাখের দিনেও হিলি বন্দরে প্রবেশ করে ২০১ ট্রাকে ৮ হাজার ৪৮১ মেট্রিক টন চাল।
কিন্তু ১৫ এপ্রিলের পর থেকে ভারত থেকে চাল আমদানির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ১৬ এপ্রিল থেকে বন্ধ হয়ে গেছে এই আমদানি। ফলে বাজারে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। পাইকারি বাজারে চালের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে কেজিপ্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা। এতে বিপাকে পড়েছেন পাইকাররা।
হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাটারি চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৬৯ টাকা কেজি দরে, যা আগে ছিল ৬৪ টাকা। সর্ণা চালের দাম ৫২ থেকে ৫৩ টাকা, যা কয়েকদিন আগেও ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। পাইকাররা অভিযোগ করছেন, আমদানি বন্ধের সুযোগে কিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে চাল গুদামজাত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন।
বন্দরে চাল কিনতে আসা পাইকার শাহিনুর ইসলাম বলেন, “১৫ এপ্রিলের আগেই প্রচুর পরিমাণে চাল আমদানি হয়েছে। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ ট্রাক আসত। এমনকি পহেলা বৈশাখেও রেকর্ড চাল এসেছে। তারপরও দাম বাড়ছে, এটা স্বাভাবিক নয়।”
এ বিষয়ে আমদানিকারক এস এম রেজা বিপুল ও নুর ইসলাম বলেন, “গাড়ি ভাড়া বেড়ে যাওয়া ও হঠাৎ চাহিদা বৃদ্ধির কারণে দামটা কিছুটা বেড়েছে। উত্তরবঙ্গে ধান কাটতে আরও সময় লাগবে, তাই যদি আমদানির সময়সীমা আরও কিছুদিন বাড়ানো হতো, তাহলে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত।”
হিলি আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী জানান, “সরকারের কাছে আমদানির সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি। মাত্র আরও ১৫ দিনের অনুমতি দিলে বাজারে এমন অস্থিরতা তৈরি হতো না।”
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা আতিকুর রহমান জানান, “১৫ এপ্রিল পর্যন্ত চাল আমদানি স্বাভাবিকভাবে হয়েছে এবং দ্রুত ছাড়করণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে যাতে বাজারে চাল দ্রুত পৌঁছে যায়।”
বর্তমানে চাল আমদানি করতে চাইলে ৬২ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে, যা বাস্তবসম্মত নয় বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এখনই প্রয়োজন সরকারি মনিটরিং এবং প্রয়োজনে পুনরায় সীমিত সময়ের জন্য শুল্কমুক্ত আমদানির অনুমতি। তা না হলে সামনে চালের বাজার আরও অস্থির হয়ে উঠতে পারে।