ঝিনাইগাতীতে বাস পুকুরে উল্টে তিন মাসের শিশুর মৃত্যু, আহত অন্তত ২০

- আপডেট সময় ০৬:০৫:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫
- / 12
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে গেলে তিন মাসের এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার খৈলকুড়া এলাকায় শেরপুর-ঝিনাইগাতী সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘আকাশ বিকাশ’ পরিবহনের বাসটি শেরপুর থেকে ঝিনাইগাতীর দিকে যাচ্ছিল। বাসটিতে প্রায় ৩০-৩৫ জন যাত্রী ছিলেন। খৈলকুড়া এলাকায় একটি বাঁকে পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারান এবং বাসটি রাস্তার পাশে একটি বড় পুকুরে উল্টে পড়ে যায়।
পানিতে ডুবে থাকা বাস থেকে যাত্রীদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেন।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে পুকুরে ডুবে যাওয়া বাসের নিচ থেকে তিন মাস বয়সী শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে।
আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল আমিন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন মাস্টার আব্দুল মান্নান। তারা উদ্ধার কাজ তদারকি করেন।
স্থানীয়রা জানান, দুর্ঘটনাস্থলটি একটি বাঁক, আর পুকুরটি সড়কের একেবারে পাশে। সামান্য অসতর্কতা বা অতিরিক্ত গতি হলে সহজেই এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
অনেকে অভিযোগ করেছেন, বাসটি অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছিল এবং চালক মোবাইলে কথা বলছিলেন। যদিও এসব অভিযোগ এখনও তদন্তাধীন।
দুর্ঘটনার পর এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক যাত্রী সাঁতরে পাড়ে উঠতে সক্ষম হলেও শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে অনেকে আহত হন।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, বাসটি পুরোপুরি পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। তারা প্রথমে জানালা ভেঙে যাত্রীদের উদ্ধার করেন এবং পরে ডুবুরি দল নিচের অংশে তল্লাশি চালিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে।
ইউএনও আশরাফুল আলম রাসেল জানান, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তিনি বলেন, “আমরা এখন প্রাথমিকভাবে উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রমে গুরুত্ব দিচ্ছি। পরবর্তীতে তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করা হবে।”
এদিকে, দুর্ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
উল্লেখ্য, ঝিনাইগাতী-শেরপুর সড়কে অতীতে একাধিক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসীর দাবি, সড়কের বিভিন্ন স্থানে তীব্র বাঁক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। তারা দ্রুত সড়ক সংস্কার এবং ট্রাফিক সচেতনতা কার্যক্রম জোরদারের দাবি জানান।