এপ্রিল মাসে সড়কে প্রাণ গেল ৫৮৮ জনের, বাড়ছে দুর্ঘটনা

- আপডেট সময় ১২:৫৪:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
- / 11
বিদায়ী এপ্রিল মাসে দেশের সড়কে ৫৯৩টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৮৮ জন, আহত হয়েছেন ১ হাজার ১২৪ জন। নিহতদের মধ্যে ৮৬ জন নারী ও ৭৮ জন শিশু রয়েছে।
রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের মাসিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও সংগঠনের নিজস্ব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে ২১৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৮ জন এবং আহত হয়েছেন ৪ জন। রেলপথে ২২টি দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ২৪ জনের, আহত হয়েছেন আরও ৬ জন।
বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে ১৭৩টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৫৪ জন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা রেকর্ড হয়েছে রংপুর বিভাগে, যেখানে ৩১টি দুর্ঘটনায় ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে চট্টগ্রামে ৩৫টি দুর্ঘটনায় ৪৬ জন নিহত।
রাজধানী ঢাকায় এপ্রিল মাসে ৩৪টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত ও ২৭ জন আহত হয়েছেন। উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে ৫৮৭টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন ৬০৪ জন। গড়ে প্রতিদিন ১৯.৪৮ জন মারা গেলেও এপ্রিল মাসে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯.৬-এ।
প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বেপরোয়া গতি। এই গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিগত নজরদারি ও চালকদের জন্য মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, অদক্ষ চালক, মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টার অনিশ্চয়তা, মহাসড়কে ধীরগতির যান চলাচল, তরুণদের বেপরোয়া বাইক চালানো, ট্রাফিক আইন অমান্য, দুর্বল ব্যবস্থাপনা এবং বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতিকে দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন কয়েকটি সুপারিশ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে দক্ষ চালক তৈরি, বেতন-কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ কার্যকর, মহাসড়কে আলাদা সার্ভিস রোড ও রোড ডিভাইডার নির্মাণ, স্বল্পগতির যানবাহন নিয়ন্ত্রণ এবং গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা।
এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া সময়ের দাবি।