ঢাকা ১১:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
নিবন্ধন ও প্রতীক ফেরত পেতে ইসির সঙ্গে আলোচনায় যাচ্ছে জামায়াত অবহেলিত জনগোষ্ঠীর ভাতা পৌঁছাতে হবে প্রকৃত মানুষের হাতে: সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা সিনহা হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় আজ (২ জুন) রাফায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরাইলি গুলিতে নিহত অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নেইমারের হতাশা, হাত দিয়ে গোল করে খেলেন লাল কার্ড যুদ্ধবিরতির রোডম্যাপ নিয়ে আজ ইস্তাম্বুলে শান্তি আলোচনায় বসছে রাশিয়া-ইউক্রেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে ১১ বছর পর আইপিএলের ফাইনালে পাঞ্জাব কিংস কলোরাডোতে ইসরাইলপন্থি সমাবেশে পেট্রোল বোমা হামলা, আহত ৬ গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্তে অনড় হামাস, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে চায় সংশোধন পাকিস্তান সিরিজে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ, জয়খরা কাটছেই না টাইগারদের

ভুতুড়ে টিআরপিতে বিপাকে টিভি চ্যানেল, জবাবদিহির দাবি গণমাধ্যম কমিশনের

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:২১:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫
  • / 45

ছবি সংগৃহীত

 

টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের মূল সূচক হিসেবে বিবেচিত টার্গেট রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) নিয়ে দেশের গণমাধ্যমে চরম অনিয়ম ও জালিয়াতির চিত্র উঠে এসেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে। কমিশনের অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশে বিদ্যমান টিআরপি ব্যবস্থা অনেকটাই ‘ভৌতিক’, যা বাস্তব দর্শকচিত্রের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

গণমাধ্যম বিশ্লেষক কামাল আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন গত শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে দেশের টিভি চ্যানেলগুলো যে টিআরপি ডেটার ভিত্তিতে বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করছে, তা অত্যন্ত দুর্বল ও ত্রুটিপূর্ণ।

২০১৭ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) টিআরপি পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্ব পেলেও বাস্তবায়নে চরম ব্যর্থতা দেখা যায়। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মাত্র ২০০টি সেট-টপ বক্স স্থাপন করে তারা কার্যক্রম চালায়। মার্চে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় মাত্র ৩০০-তে। অথচ সরকারের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, শুরুতেই ৫০০টি এবং ছয় মাসের মধ্যে ৮০০০ ডিভাইস বসাতে হবে।

কমিশন জানায়, এত স্বল্প সংখ্যক ডিভাইস দিয়ে দর্শক পরিসংখ্যান নির্ণয় করাটা যেমন অবাস্তব, তেমনি প্রতারণার শামিল। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এসব ডিভাইসও সবসময় সক্রিয় থাকে না। ফলে টিভি শিল্প ও বিজ্ঞাপনদাতারা বিভ্রান্তিকর তথ্য পাচ্ছে, যা ক্ষতিকর ও অনভিপ্রেত।

অন্যদিকে, সংবাদপত্রগুলোর ক্ষেত্রেও প্রচারসংখ্যা নিয়ে তথ্য গরমিলের অভিযোগ রয়েছে। বিজ্ঞাপন ও আমদানির সুবিধা নিতে অনেকেই ভুয়া প্রচারসংখ্যা দেখাচ্ছে বলে কমিশন জানিয়েছে।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য কমিশন বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, টিআরপি নির্ণয়ের যৌক্তিক ও স্বচ্ছ পদ্ধতি গড়ে তোলা, বেসরকারিভাবে এই সেবা উন্মুক্ত রাখা এবং টিআরপি তদারকিতে মিডিয়া মালিক, দুর্নীতি প্রতিরোধক সংস্থা ও বিজ্ঞাপন সংস্থার প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা।

কমিশন বলেছে, মিথ্যা টিআরপির জন্য যারা দায়ী, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত টিভি চ্যানেলগুলো চাইলে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সুযোগ থাকতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভুতুড়ে টিআরপিতে বিপাকে টিভি চ্যানেল, জবাবদিহির দাবি গণমাধ্যম কমিশনের

আপডেট সময় ০৪:২১:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

 

টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের মূল সূচক হিসেবে বিবেচিত টার্গেট রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) নিয়ে দেশের গণমাধ্যমে চরম অনিয়ম ও জালিয়াতির চিত্র উঠে এসেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে। কমিশনের অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশে বিদ্যমান টিআরপি ব্যবস্থা অনেকটাই ‘ভৌতিক’, যা বাস্তব দর্শকচিত্রের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

গণমাধ্যম বিশ্লেষক কামাল আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন গত শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে দেশের টিভি চ্যানেলগুলো যে টিআরপি ডেটার ভিত্তিতে বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করছে, তা অত্যন্ত দুর্বল ও ত্রুটিপূর্ণ।

২০১৭ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) টিআরপি পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্ব পেলেও বাস্তবায়নে চরম ব্যর্থতা দেখা যায়। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মাত্র ২০০টি সেট-টপ বক্স স্থাপন করে তারা কার্যক্রম চালায়। মার্চে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় মাত্র ৩০০-তে। অথচ সরকারের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, শুরুতেই ৫০০টি এবং ছয় মাসের মধ্যে ৮০০০ ডিভাইস বসাতে হবে।

কমিশন জানায়, এত স্বল্প সংখ্যক ডিভাইস দিয়ে দর্শক পরিসংখ্যান নির্ণয় করাটা যেমন অবাস্তব, তেমনি প্রতারণার শামিল। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এসব ডিভাইসও সবসময় সক্রিয় থাকে না। ফলে টিভি শিল্প ও বিজ্ঞাপনদাতারা বিভ্রান্তিকর তথ্য পাচ্ছে, যা ক্ষতিকর ও অনভিপ্রেত।

অন্যদিকে, সংবাদপত্রগুলোর ক্ষেত্রেও প্রচারসংখ্যা নিয়ে তথ্য গরমিলের অভিযোগ রয়েছে। বিজ্ঞাপন ও আমদানির সুবিধা নিতে অনেকেই ভুয়া প্রচারসংখ্যা দেখাচ্ছে বলে কমিশন জানিয়েছে।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য কমিশন বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, টিআরপি নির্ণয়ের যৌক্তিক ও স্বচ্ছ পদ্ধতি গড়ে তোলা, বেসরকারিভাবে এই সেবা উন্মুক্ত রাখা এবং টিআরপি তদারকিতে মিডিয়া মালিক, দুর্নীতি প্রতিরোধক সংস্থা ও বিজ্ঞাপন সংস্থার প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা।

কমিশন বলেছে, মিথ্যা টিআরপির জন্য যারা দায়ী, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত টিভি চ্যানেলগুলো চাইলে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সুযোগ থাকতে হবে।