ঢাকা ০৫:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
লেস্টারে ইতিহাস গড়া দাওয়াতি সম্মেলন, শুরু হলো নতুন দাওয়াতি যুগ নিখোঁজের পর ইউনিয়ন পরিষদের টয়লেট থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার রিয়ালে ১০ নম্বর জার্সির নতুন উত্তরাধিকারী এমবাপে অভিনেত্রী নন্দিনীর গাড়ির ধাক্কায় আহত যুবকের মৃত্যু শুল্কবিরতির মেয়াদ বাড়বে কিনা, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প রাশিয়ায় দশকের শক্তিশালী ভূমিকম্প, জাপান-হাওয়াইয়ে সুনামির আশঙ্কা ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতায় ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র খালি কঙ্গনাকে ‘সেরা অভিনেত্রী’ বলায় যা করলেন তিনি আজ থেকে শুরু একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি আবেদন, ৪৫ দিনের মধ্যে শেষ হবে পুরো প্রক্রিয়া কালকিনিতে আড়িয়াল খাঁ নদী ভাঙনে দিশেহারা দুই শতাধিক পরিবার!

বাম্পার ফলনেও দুশ্চিন্তায় কৃষক, রংপুরে আলুর দাম কমায় হিমাগারে ভিড়

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:৪১:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
  • / 49

ছবি সংগৃহীত

 

ভরা মৌসুমেও রংপুরে আলুর বাজারে ধস নেমেছে। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা হিমাগারে ছুটছেন, কিন্তু সেখানে জায়গা মেলা দুষ্কর। দিনের পর দিন অপেক্ষা করেও অনেকে আলু সংরক্ষণের সুযোগ পাচ্ছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে লোকসানে জমিতেই আলু বিক্রি করছেন তারা।

রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় এবার ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৩৯ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি। কিন্তু উৎপাদনের তুলনায় সংরক্ষণের ব্যবস্থা সীমিত হওয়ায় সংকটে পড়েছেন কৃষকরা।

হিমাগারগুলোর সামনে আলুবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। কোনো কোনো জায়গায় দুই কিলোমিটার পর্যন্ত গাড়ির লাইন পড়েছে। গাড়ির চালক ও সহকারীরা বলছেন, অনিশ্চয়তার মধ্যেই তাদের দিন কাটছে। ঠিকমতো ঘুমানো কিংবা খাওয়ার সুযোগ নেই, উপরন্তু মশার উপদ্রব তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

এদিকে, কৃষকরা জানান, জমিতে আলু বিক্রি করলে প্রতি কেজিতে ১২ থেকে ১৩ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির আশায় হিমাগারে সংরক্ষণ করতে এলেও সেখানে জায়গার অভাবে এখন দ্বিগুণ বিপদে পড়েছেন তারা। এক কৃষক বললেন, “ফলন ভালো হয়েছে, কিন্তু দাম নাই। স্টোরে রাখার জায়গাও নাই। আলু নিয়ে সমস্যার শেষ নেই।”

হিমাগার মালিকরা এ বিষয়ে খোলাখুলিভাবে কিছু বলতে চাইছেন না। তারা শুধু জানাচ্ছেন, সরকারের নির্ধারিত ভাড়ায় ধারণক্ষমতা অনুযায়ী আলু সংরক্ষণ করা হচ্ছে। তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ কৃষকের জন্য হিমাগারে জায়গাই মিলছে না।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরও কৃষকদের আশার কোনো বার্তা দিতে পারেনি। বরং তারা বলছে, সংরক্ষণের সুযোগ না পেলে কৃষকদের আরও বড় ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে। রংপুর কৃষি বিপণন কার্যালয়ের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহীন আহমেদ বলেন, “কম খরচে অহিমায়িত ঘর তৈরি করলে কিছুটা সমস্যা সমাধান হতে পারে। তবে সামগ্রিক সংকট মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ প্রয়োজন।”

কৃষকরা আশায় ছিলেন, ভালো ফলনের পর এবার লাভের মুখ দেখবেন। কিন্তু বাজারদর আর সংরক্ষণ সংকট মিলিয়ে তাদের কপালে এখন শুধুই দুশ্চিন্তা।

নিউজটি শেয়ার করুন

বাম্পার ফলনেও দুশ্চিন্তায় কৃষক, রংপুরে আলুর দাম কমায় হিমাগারে ভিড়

আপডেট সময় ০৩:৪১:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

 

ভরা মৌসুমেও রংপুরে আলুর বাজারে ধস নেমেছে। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা হিমাগারে ছুটছেন, কিন্তু সেখানে জায়গা মেলা দুষ্কর। দিনের পর দিন অপেক্ষা করেও অনেকে আলু সংরক্ষণের সুযোগ পাচ্ছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে লোকসানে জমিতেই আলু বিক্রি করছেন তারা।

রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় এবার ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৩৯ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি। কিন্তু উৎপাদনের তুলনায় সংরক্ষণের ব্যবস্থা সীমিত হওয়ায় সংকটে পড়েছেন কৃষকরা।

হিমাগারগুলোর সামনে আলুবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। কোনো কোনো জায়গায় দুই কিলোমিটার পর্যন্ত গাড়ির লাইন পড়েছে। গাড়ির চালক ও সহকারীরা বলছেন, অনিশ্চয়তার মধ্যেই তাদের দিন কাটছে। ঠিকমতো ঘুমানো কিংবা খাওয়ার সুযোগ নেই, উপরন্তু মশার উপদ্রব তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

এদিকে, কৃষকরা জানান, জমিতে আলু বিক্রি করলে প্রতি কেজিতে ১২ থেকে ১৩ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির আশায় হিমাগারে সংরক্ষণ করতে এলেও সেখানে জায়গার অভাবে এখন দ্বিগুণ বিপদে পড়েছেন তারা। এক কৃষক বললেন, “ফলন ভালো হয়েছে, কিন্তু দাম নাই। স্টোরে রাখার জায়গাও নাই। আলু নিয়ে সমস্যার শেষ নেই।”

হিমাগার মালিকরা এ বিষয়ে খোলাখুলিভাবে কিছু বলতে চাইছেন না। তারা শুধু জানাচ্ছেন, সরকারের নির্ধারিত ভাড়ায় ধারণক্ষমতা অনুযায়ী আলু সংরক্ষণ করা হচ্ছে। তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ কৃষকের জন্য হিমাগারে জায়গাই মিলছে না।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরও কৃষকদের আশার কোনো বার্তা দিতে পারেনি। বরং তারা বলছে, সংরক্ষণের সুযোগ না পেলে কৃষকদের আরও বড় ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে। রংপুর কৃষি বিপণন কার্যালয়ের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহীন আহমেদ বলেন, “কম খরচে অহিমায়িত ঘর তৈরি করলে কিছুটা সমস্যা সমাধান হতে পারে। তবে সামগ্রিক সংকট মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ প্রয়োজন।”

কৃষকরা আশায় ছিলেন, ভালো ফলনের পর এবার লাভের মুখ দেখবেন। কিন্তু বাজারদর আর সংরক্ষণ সংকট মিলিয়ে তাদের কপালে এখন শুধুই দুশ্চিন্তা।