হাটধুমায় আলুর পাঁপড় উৎপাদনে ব্যস্ত শতাধিক পরিবার, গ্রামে নতুন স্বাবলম্বিতা
বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার হাটধুমা গ্রাম এখন “পাঁপড়ের গ্রাম” হিসেবে পরিচিত। গ্রামের শতাধিক পরিবার আজকাল জীবিকার প্রধান উৎস হিসেবে আলুর পাঁপড় তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এই পাঁপড় তৈরির শিল্প গ্রামের মানুষের জন্য এনে দিয়েছে স্বচ্ছলতা এবং সুখ-শান্তি।
গ্রামটির মানুষরা বছরের তিনটি মৌসুমকে কাজে লাগিয়ে আলুর পাঁপড়, কাসুন্দি এবং কুমড়ো বড়ি তৈরি করেন। আলুর মৌসুমে পাঁপড়, আমের মৌসুমে কাসুন্দি, আর শীতকালে কুমড়ো বড়ি এভাবে তারা সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে উৎপাদন করেন। কৃষি কাজের পাশাপাশি এই তিন মৌসুমে পাঁপড় তৈরি করে গ্রামবাসীরা বাড়তি আয় করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তার পাশে রোদে শুকানো হচ্ছে হাতে তৈরি আলুর পাঁপড়। প্রথমে আলুগুলো ধুয়ে, টিনের মেশিন দিয়ে পাতলা কেটে, সিদ্ধ করে রোদে শুকানো হয়। যদিও পাঁপড় তৈরির কাজের মাঝে পুরুষেরা কিছুটা সাহায্য করেন, তবে নারীরা মূলত এই কাজে নেতৃত্ব দেন।
পুণির্মা রানী, একজন পাঁপড় কারিগর জানান, “আমি প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই মণ আলুর পাঁপড় তৈরি করি। এক মণ আলু শুকানোর পর সাত থেকে আট কেজি পাঁপড় হয়। এখন প্রতি কেজি পাঁপড় বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। পাঁপড় তৈরির পর আমাদের বাড়ি থেকেই বিক্রি হয়ে যায়।”
ফেরদৌস রহমান বলেন, “গ্রামের অধিকাংশ মানুষ এখন এই কাজ করছে। হাট থেকে আলু কিনে, কেটে, সিদ্ধ করে রোদে শুকালেই পাঁপড় তৈরি হয়ে যায়। বগুড়া, নাটোর, নওগাঁসহ বিভিন্ন জেলার লোক এসে পাঁপড় কিনে নিয়ে যায়।”
নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক জানান, “এই এলাকায় আলুর উৎপাদন ভালো হয়। নারীরা এই আলুকে প্রক্রিয়া করে স্বাবলম্বী হচ্ছে, ফলে আলুর বাজারও ভালো পাচ্ছে কৃষক।”
পাঁপড় তৈরির এই উদ্যোগ শুধু গ্রামবাসীদেরই নয়, বরং কৃষকদের জন্যও একটি নতুন আশার আলো বয়ে এনেছে।