রেমিট্যান্স ও রপ্তানির ঊর্ধ্বগতি, বৈদেশিক লেনদেনে নতুন গতি
বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য পরিস্থিতি এখন ইতিবাচক দিকে যাচ্ছে। চলতি হিসাবের লেনদেন উদ্বৃত্তে পরিণত হয়েছে, এবং রেমিট্যান্সের প্রবাহ, রপ্তানি বৃদ্ধি ও স্থিতিশীল বিনিময় হার এই উন্নতির প্রধান কারক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির কমতিকে কেন্দ্র করে সরকারের সতর্কতা অবলম্বন প্রয়োজন বলে মতামত দিয়েছেন তারা।
বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য বা ব্যালেন্স অব পেমেন্টের মাধ্যমে একটি দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। গত জুলাই-ডিসেম্বরের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে এক বছরে সার্বিক ঘাটতি প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার থেকে কমে ৩৮৪ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত হওয়ায় অর্থনীতি ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে, যা দেশের জন্য একটি ভালো সঙ্কেত।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী জানান, রফতানি এবং রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ার পাশাপাশি বিলাসী পণ্যের আমদানি কমে যাওয়ায় ভারসাম্য পরিস্থিতি উন্নতি করছে।
তবে, একটি আশঙ্কা রয়েছে, যা হচ্ছে মূলধনী যন্ত্রপাতি এবং পণ্য আমদানির ব্যয় কমে যাওয়ার নেতিবাচক প্রভাব। জুলাই-ডিসেম্বরে আমদানি ব্যয় প্রায় ১৩.৭ শতাংশ কমে যাওয়ায় বৈদেশিক লেনদেনের ঘাটতি কিছুটা কমলেও, এটির কারণে বিনিয়োগের পরিস্থিতি সংকটে পড়েছে।
ব্রাক ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক মাইনুদ্দিন বলেন, দেশের অর্থনীতি এখনও পুরোপুরি স্থিতিশীল নয়। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ কমে গেছে এবং ব্যাংকগুলোও ঋণ বিতরণে সতর্ক হয়ে উঠেছে। বিনিয়োগ বাড়ানো না গেলে, আমদানি কমে যাবে, যা দীর্ঘমেয়াদে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি বিনিয়োগ পরিস্থিতি উন্নত না হয়, তবে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য পরিস্থিতি দেশের অর্থনীতির জন্য স্থায়ী সুফল বয়ে আনবে না।