ঢাকা ১১:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
শান্তিরক্ষা মিশন এলাকা সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক পরিদর্শনে গেলেন সেনাবাহিনী প্রধান তুরস্ক বিশ্ব রাজনীতিতে ‘পাকা খেলোয়াড়’ : এরদোয়ান মির্জা ফখরুলের সুস্থতা কামনা করলেন জামায়াত আমির বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের নাম পরিবর্তন: নতুন নাম বাংলাদেশ স্যাটেলাইট-১ মঙ্গলবার জাতীয় নাগরিক পার্টির দুই কর্মসূচি শাহজাদপুরে আবাসিক হোটেলে অগ্নিকাণ্ড: তালাবদ্ধ সিঁড়ির ফাঁদে চারজনের মৃত্যু রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন: নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে হাইকোর্টের রুল ইউক্রেনকে রক্ষা করতে যুক্তরাজ্যের ‘কোয়ালিশন অব উইলিং’ জোট গড়ার আহ্বান ইউক্রেনের পাশে ইউরোপ, স্টারমারের চার দফা কর্মসূচি: নতুন জোট গঠনের পরিকল্পনা লা লিগার শীর্ষে বার্সা, প্রিমিয়ার লিগের মুকুটের খুব কাছে লিভারপুল

পাহাড়ে সরিষা ফুলের মধুর ব্যাপক ফলন, টেকনাফের চাকমা কৃষকদের সাফল্য

খবরের কথা ডেস্ক

ছবি সংগৃহীত

 

কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ি জমিতে প্রথমবারের মতো সরিষা চাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছেন চাকমা কৃষকেরা। মৌমাছির সহায়তায় আহরিত খাঁটি মধু বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা।

টেকনাফের হোয়াইক্যং হরিখোলা এলাকায় চাকমা পল্লির ৮ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে এ বছর সরিষা চাষ শুরু হয়। নারী-পুরুষ মিলে দিনরাত জমিতে কাজ করছেন। বিশেষ করে নারীরা সক্রিয়ভাবে সরিষার পরিচর্যা ও মধু সংগ্রহের কাজে যুক্ত রয়েছেন। ক্ষেতের চারপাশে বসানো হয়েছে মৌ-বাক্স, যেখানে মৌমাছিরা সরিষার ফুল থেকে রস সংগ্রহ করে মধু উৎপাদন করছে। জানা গেছে, প্রতিটি বাক্স থেকে দুই মাসে ১০ থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক তাইনচাও চাকমা বলেন, ‘‘ধান ও শাকসবজির পর এ বছর সরিষা চাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছি। লক্ষ্য একদম খাঁটি ও ভালো মানের মধু উৎপাদন করা। আমি ৩৩ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছি এবং সেখান থেকে প্রথমবারের মতো মধু সংগ্রহ করছি। বর্তমানে ১ কেজি মধুর বাজারমূল্য প্রায় ২ হাজার টাকা, যা আমাদের জন্য বেশ লাভজনক।’’

এ বিষয়ে হোয়াইক্যংয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সরুওয়ার কাদের জয় জানান, ‘‘এ বছর রবি মৌসুমে চাকমা পল্লিতে ৮ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। একটি মৌ-বাক্স থেকে দুই মাসে প্রায় ১০-১২ কেজি মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। প্রতিটি বাক্সে প্রায় সাতটি চাক থাকে, যেখানে মৌমাছিরা ফুলের রস জমা রাখে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘টেকনাফ উপজেলায় প্রথমবারের মতো সরিষার সাথে মধু চাষের এই সফল উদ্যোগ চাকমা কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। প্রায় ২০-২৫টি গ্রুপ একসঙ্গে কাজ করছে, যেখানে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও সরাসরি যুক্ত রয়েছেন। এ প্রকল্পে চাকমা যুবকেরাও এগিয়ে আসছেন, যা ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে মধু উৎপাদনকে আরও প্রসারিত করবে।’’

সরিষা চাষ ও মধু উৎপাদনের এই যুগান্তকারী উদ্যোগ পাহাড়ি এলাকায় কৃষির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। স্থানীয় কৃষকেরা আশা করছেন, সরকারের সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে এ উদ্যোগ আরও বৃহৎ পরিসরে সম্প্রসারিত হবে, যা চাকমা সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:০৮:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
৫০৮ বার পড়া হয়েছে

পাহাড়ে সরিষা ফুলের মধুর ব্যাপক ফলন, টেকনাফের চাকমা কৃষকদের সাফল্য

আপডেট সময় ০৪:০৮:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

 

কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ি জমিতে প্রথমবারের মতো সরিষা চাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছেন চাকমা কৃষকেরা। মৌমাছির সহায়তায় আহরিত খাঁটি মধু বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা।

টেকনাফের হোয়াইক্যং হরিখোলা এলাকায় চাকমা পল্লির ৮ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে এ বছর সরিষা চাষ শুরু হয়। নারী-পুরুষ মিলে দিনরাত জমিতে কাজ করছেন। বিশেষ করে নারীরা সক্রিয়ভাবে সরিষার পরিচর্যা ও মধু সংগ্রহের কাজে যুক্ত রয়েছেন। ক্ষেতের চারপাশে বসানো হয়েছে মৌ-বাক্স, যেখানে মৌমাছিরা সরিষার ফুল থেকে রস সংগ্রহ করে মধু উৎপাদন করছে। জানা গেছে, প্রতিটি বাক্স থেকে দুই মাসে ১০ থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক তাইনচাও চাকমা বলেন, ‘‘ধান ও শাকসবজির পর এ বছর সরিষা চাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছি। লক্ষ্য একদম খাঁটি ও ভালো মানের মধু উৎপাদন করা। আমি ৩৩ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছি এবং সেখান থেকে প্রথমবারের মতো মধু সংগ্রহ করছি। বর্তমানে ১ কেজি মধুর বাজারমূল্য প্রায় ২ হাজার টাকা, যা আমাদের জন্য বেশ লাভজনক।’’

এ বিষয়ে হোয়াইক্যংয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সরুওয়ার কাদের জয় জানান, ‘‘এ বছর রবি মৌসুমে চাকমা পল্লিতে ৮ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। একটি মৌ-বাক্স থেকে দুই মাসে প্রায় ১০-১২ কেজি মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। প্রতিটি বাক্সে প্রায় সাতটি চাক থাকে, যেখানে মৌমাছিরা ফুলের রস জমা রাখে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘টেকনাফ উপজেলায় প্রথমবারের মতো সরিষার সাথে মধু চাষের এই সফল উদ্যোগ চাকমা কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। প্রায় ২০-২৫টি গ্রুপ একসঙ্গে কাজ করছে, যেখানে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও সরাসরি যুক্ত রয়েছেন। এ প্রকল্পে চাকমা যুবকেরাও এগিয়ে আসছেন, যা ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে মধু উৎপাদনকে আরও প্রসারিত করবে।’’

সরিষা চাষ ও মধু উৎপাদনের এই যুগান্তকারী উদ্যোগ পাহাড়ি এলাকায় কৃষির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। স্থানীয় কৃষকেরা আশা করছেন, সরকারের সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে এ উদ্যোগ আরও বৃহৎ পরিসরে সম্প্রসারিত হবে, যা চাকমা সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।