বিচারের আওতায় আনতেই হবে হাসিনা ও সহযোগীদের – জাতিসংঘ

- আপডেট সময় ০১:২২:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 45
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ চিত্র আরও স্পষ্ট হয়েছে।
প্রতিবেদনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে।
বুধবার জেনেভা থেকে প্রকাশিত ১০৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন অনুসারে, ওই সময়ের বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১,৪০০ জন নিহত হন, যাঁদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ শিশু। টার্গেট কিলিংসহ মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের নির্দেশ সরাসরি এসেছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে। এছাড়া, ১১,৭০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হয়।
জাতিসংঘের অনুসন্ধানী দল ঢাকা, চট্টগ্রামসহ আটটি বড় শহরে তদন্ত চালিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর নৃশংস দমন-পীড়নের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্ষমতায় থাকার মরিয়া প্রচেষ্টায় সাবেক সরকার ‘পরিকল্পিত ও সমন্বিত কৌশলে’ বিরোধীদের দমন করেছে। একের পর এক জোরপূর্বক নির্বাচনের পর জনসমর্থন হারিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করেছিল।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে র্যাব ও এনটিএমসিকে বিলুপ্ত করা, অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করার সুপারিশ করা হয়েছে। মানবাধিকার হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক অপরাধীদের বিচারের জন্য ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশন প্রয়োগ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) বিচারের আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিশোধমূলক সহিংসতা ও নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতরা দায়মুক্তি পাচ্ছেন, যা গভীর উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের সুরক্ষা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে সরকারকে জাতিসংঘের সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।