সুদানে আরএসএফ বাহিনীর ভয়াবহ হামলা, নিহত ৩০০ বেসামরিক মানুষ

- আপডেট সময় ০২:৪৭:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
- / 12
সুদানের উত্তর করদোফান রাজ্যে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর ভয়াবহ হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩০০ জন বেসামরিক মানুষ। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। গত শনিবার শুরু হওয়া এই বর্বরোচিত হামলা সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
মানবাধিকার সংগঠন ‘ইমারজেন্সি লইয়ার্স’ জানায়, করদোফানের বারা শহরের আশপাশের একাধিক গ্রামে আরএসএফ সদস্যরা ব্যাপক হামলা চালায়। বর্তমানে এই শহরটি আরএসএফ-এর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সংগঠনটি জানায়, শাগ আলনোম নামের একটি গ্রামে আগুন ধরিয়ে ও গুলি চালিয়ে ২০০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আশপাশের অন্যান্য গ্রামে হামলা, লুটপাট ও সহিংসতায় আরও কমপক্ষে ৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া অনেক মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
গত রবিবার হিলাত হামিদ নামের আরেক গ্রামে চালানো আরএসএফ-এর হামলায় নিহত হন আরও ৪৬ জন, যাদের মধ্যে গর্ভবতী নারী ও শিশুরাও ছিলেন বলে জানায় মানবাধিকার সংগঠনটি।
জাতিসংঘ জানায়, এই সংঘর্ষের ফলে ইতোমধ্যে ৩ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। বাস্তুচ্যুতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহত ও নিখোঁজ মানুষের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
‘ইমারজেন্সি লইয়ার্স’ জানায়, হামলার শিকার গ্রামগুলোতে কোনো সামরিক ঘাঁটি, অস্ত্রভাণ্ডার বা সামরিক উপস্থিতি ছিল না। তারা এটিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের চরম লঙ্ঘন ও এক নির্মম গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করে।
এই নৃশংসতার সম্পূর্ণ দায় আরএসএফ নেতৃত্বের বলে দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহলের একাধিক সংস্থা আরএসএফ-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ এনেছে।
অন্যদিকে, আরএসএফ নেতৃত্ব দাবি করেছে, যারা এইসব অপরাধে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সুদানের গৃহযুদ্ধ ইতোমধ্যে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক সংকটে পরিণত হয়েছে। দেশটির অর্ধেকের বেশি জনগণ অনাহারে ভুগছে। কলেরাসহ নানা সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। আর আন্তর্জাতিক সাহায্যের ঘাটতির কারণে মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।