রাশিয়া থেকে তেল কিনলে তাদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে: ট্রাম্প

- আপডেট সময় ০২:২১:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
- / 9
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। ইউক্রেনকে নতুন সামরিক সহায়তার ঘোষণা দেয়ার পাশাপাশি, তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যেসব দেশ রাশিয়া থেকে তেল কিনবে, তাদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। সোমবার (১৪ জুলাই) হোয়াইট হাউসে ন্যাটো সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। খবর রয়টার্স।
ট্রাম্প জানান, ইউক্রেনকে সহায়তার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ‘বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র’ সরবরাহ করবে। এই অস্ত্রের ব্যয়ভার বহন করবে ন্যাটো মিত্ররা। তিনি বলেন, “আমরা অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরি করছি এবং তা ন্যাটো জোটের মাধ্যমে ইউক্রেন পাঠানো হবে।”
এই সহায়তায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, যা ইউক্রেন বহুদিন ধরে চেয়ে আসছে। কিছু ক্ষেপণাস্ত্র আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি আরও বলেন, “কয়েকটি মিত্র দেশের মজুদে থাকা প্যাট্রিয়ট সিস্টেমগুলো অস্থায়ীভাবে ইউক্রেনকে দেয়া হবে। পরবর্তীতে সেই দেশগুলো নতুন করে মজুদ গড়ে তুলবে।”
তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, বর্তমানে অর্ডারকৃত ১৭টি প্যাট্রিয়ট সিস্টেমের কিছু বা সবই দ্রুত ইউক্রেনে পাঠানো হতে পারে। ইউক্রেনকে অস্ত্রে সজ্জিত করতে জার্মানি, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস এবং কানাডা এগিয়ে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন ন্যাটো সেক্রেটারি জেনারেল।
এদিকে ট্রাম্পের সেকেন্ডারি স্যাংশনের হুমকিকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা নীতিতে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও রাশিয়ার সঙ্গে অধিকাংশ আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে পশ্চিমা দেশগুলো, তবে এখনো দেশটি চীন ও ভারতসহ অনেক দেশের কাছে তেল বিক্রি করে বিপুল অর্থ আয় করছে।
এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, “যদি ৫০ দিনের মধ্যে চুক্তি না হয়, তবে ১০০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে।” পাশাপাশি হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, রুশ পণ্যের ওপর শতভাগ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি, রাশিয়া থেকে আমদানি করা পণ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ওপরও সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসেও এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন দিচ্ছেন আইনপ্রণেতারা। মার্কিন সিনেটের ১০০ সদস্যের মধ্যে ৮৫ জন একটি বিলে সহ-প্রস্তাবক হয়েছেন, যার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো দেশের ওপর ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ক্ষমতা দেয়া হবে।
রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের এই কঠোর অবস্থানের পরপরই রুশ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে। গ্রেস পিরিয়ডের কারণে রুবলের দরপতন থেমে গেছে এবং শেয়ারবাজারও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এমন অবস্থান শুধু ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, বরং বৈশ্বিক কূটনীতি ও জ্বালানির বাজারেও বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।