ঢাকা ০৯:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
নির্বাচনের অভাবেই দেশে অস্থিরতা, দুর্নীতির সুযোগ নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা: মির্জা ফখরুল সেন্ট মার্টিন রক্ষায় পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনায় জোর দিচ্ছে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা নতুন যুগোপযোগী টেলিকম নীতিমালা প্রণয়নের ঘোষণা, বাতিল পুরনো নীতি: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়ে বোগোটায় বৈঠকে ২০টির বেশি দেশ “দেশ এখনও সম্পূর্ণ ফ্যাসিবাদমুক্ত নয়”: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনো একটি অদৃশ্য চক্র সক্রিয়ভাবে ষড়যন্ত্র করছে: তারেক রহমান শুল্কযুদ্ধের ছায়ায় কফি-কমলার বাজার, দুশ্চিন্তায় ব্রাজিল-যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা ২-৩টি আসনের প্রস্তাব ও ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে এনসিপি কেনার সাধ্য কারো নেই: নাহিদ ইসলাম গণতন্ত্রকে বিপথে নিতে সংস্কারের নামে সূক্ষ্ম কারচুপি চলছে: ১২ দলীয় জোট প্রধান ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যা: টিটন গাজীর ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ইঞ্জিন সংকট, ট্রেন চলাচলে বিশৃঙ্খলা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৪৬:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
  • / 15

ছবি সংগৃহীত

 

 

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে দেখা দিয়েছে মারাত্মক লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) সংকট। যাত্রীবাহী ট্রেন পরিচালনার জন্য প্রতিদিন যেখানে প্রয়োজন অন্তত ৭২টি ইঞ্জিন, সেখানে কার্যত পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৫৩টি। এতে করে একদিকে রক্ষণাবেক্ষণ ও বিশ্রামের সুযোগ না পেয়ে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইঞ্জিনগুলো, অন্যদিকে প্রতিটি ট্রেন ছাড়ছে এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিলম্বে।

চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘ইঞ্জিন সংকটের কারণে চট্টগ্রাম-সিলেট এবং চট্টগ্রাম-জামালপুর রুটে প্রায় সময়ই ট্রেন ছাড়তে দেরি হয়। এতে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।’

শুধু যাত্রীবাহী নয়, পণ্যবাহী কন্টেইনার ও তেলবাহী ট্রেন চলাচলেও দেখা দিয়েছে চরম বিপর্যয়। যেখানে প্রতিদিন ১৩টি ইঞ্জিন প্রয়োজন, সেখানে চলছে মাত্র ৫টি দিয়ে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকা কমলাপুর আইসিডিতে কন্টেইনার পরিবহনের জন্য দরকার ৪টি ইঞ্জিন, কিন্তু মিলছে কেবল একটি।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আবারও আইসিডিতে কন্টেইনার জট তৈরি হবে। আমরা রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে ইঞ্জিন সংখ্যা ও ডেইলি রেলপাস বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছি।’

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চীফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন ২৭-২৮টি ইঞ্জিনের ঘাটতি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নতুন ইঞ্জিন সংগ্রহ না হওয়া এবং সময়মতো রক্ষণাবেক্ষণের যন্ত্রপাতি না আসায় সংকট আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।’

নিয়ম অনুযায়ী একটি ইঞ্জিন চালনার পর ৪৫ মিনিট ফুয়েল ও মেইনটেন্যান্স চেক এবং আরও ৪৫ মিনিট এলএম চেকিংয়ের প্রয়োজন হয়। এছাড়া প্রতি ৭২ ঘণ্টা পর ৬ ঘণ্টার পূর্ণ শাটডাউন দিয়ে পরীক্ষার নিয়ম থাকলেও বর্তমানে তা আর মানা সম্ভব হচ্ছে না। এতে ইঞ্জিনগুলোর আয়ুষ্কাল দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।

রেলস্টেশন ও শেডে প্রতিদিন ১৩টি শান্টিং ইঞ্জিন প্রয়োজন হলেও ব্যবহার হচ্ছে মাত্র ২ থেকে ৪টি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গণআন্দোলনের মুখে পতিত সরকারের আমলে রেল খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় হলেও জরুরি যন্ত্রপাতি, বিশেষ করে ইঞ্জিন সংগ্রহে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ফলে পূর্বাঞ্চলে প্রতিদিন চালু থাকা আড়াইশ’র বেশি যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন এখন ইঞ্জিন সংকটে চরম ভোগান্তির শিকার।

নিউজটি শেয়ার করুন

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ইঞ্জিন সংকট, ট্রেন চলাচলে বিশৃঙ্খলা

আপডেট সময় ১১:৪৬:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

 

 

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে দেখা দিয়েছে মারাত্মক লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) সংকট। যাত্রীবাহী ট্রেন পরিচালনার জন্য প্রতিদিন যেখানে প্রয়োজন অন্তত ৭২টি ইঞ্জিন, সেখানে কার্যত পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৫৩টি। এতে করে একদিকে রক্ষণাবেক্ষণ ও বিশ্রামের সুযোগ না পেয়ে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইঞ্জিনগুলো, অন্যদিকে প্রতিটি ট্রেন ছাড়ছে এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিলম্বে।

চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘ইঞ্জিন সংকটের কারণে চট্টগ্রাম-সিলেট এবং চট্টগ্রাম-জামালপুর রুটে প্রায় সময়ই ট্রেন ছাড়তে দেরি হয়। এতে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।’

শুধু যাত্রীবাহী নয়, পণ্যবাহী কন্টেইনার ও তেলবাহী ট্রেন চলাচলেও দেখা দিয়েছে চরম বিপর্যয়। যেখানে প্রতিদিন ১৩টি ইঞ্জিন প্রয়োজন, সেখানে চলছে মাত্র ৫টি দিয়ে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকা কমলাপুর আইসিডিতে কন্টেইনার পরিবহনের জন্য দরকার ৪টি ইঞ্জিন, কিন্তু মিলছে কেবল একটি।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আবারও আইসিডিতে কন্টেইনার জট তৈরি হবে। আমরা রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে ইঞ্জিন সংখ্যা ও ডেইলি রেলপাস বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছি।’

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চীফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন ২৭-২৮টি ইঞ্জিনের ঘাটতি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নতুন ইঞ্জিন সংগ্রহ না হওয়া এবং সময়মতো রক্ষণাবেক্ষণের যন্ত্রপাতি না আসায় সংকট আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।’

নিয়ম অনুযায়ী একটি ইঞ্জিন চালনার পর ৪৫ মিনিট ফুয়েল ও মেইনটেন্যান্স চেক এবং আরও ৪৫ মিনিট এলএম চেকিংয়ের প্রয়োজন হয়। এছাড়া প্রতি ৭২ ঘণ্টা পর ৬ ঘণ্টার পূর্ণ শাটডাউন দিয়ে পরীক্ষার নিয়ম থাকলেও বর্তমানে তা আর মানা সম্ভব হচ্ছে না। এতে ইঞ্জিনগুলোর আয়ুষ্কাল দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।

রেলস্টেশন ও শেডে প্রতিদিন ১৩টি শান্টিং ইঞ্জিন প্রয়োজন হলেও ব্যবহার হচ্ছে মাত্র ২ থেকে ৪টি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গণআন্দোলনের মুখে পতিত সরকারের আমলে রেল খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় হলেও জরুরি যন্ত্রপাতি, বিশেষ করে ইঞ্জিন সংগ্রহে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ফলে পূর্বাঞ্চলে প্রতিদিন চালু থাকা আড়াইশ’র বেশি যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন এখন ইঞ্জিন সংকটে চরম ভোগান্তির শিকার।