বাংলাদেশে রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসার নতুন যুগের সূচনা, সেবা কাল থেকে

- আপডেট সময় ০৫:৩৭:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
- / 4
পক্ষাঘাত ও দীর্ঘমেয়াদি স্নায়ুজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের পুনর্বাসনে নতুন দিগন্তের সূচনা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) সুপারস্পেশালাইজড হাসপাতালে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) থেকে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
চীনের কারিগরি সহায়তায় নির্মিত এই আধুনিক সেন্টারটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে রোবটিক প্রযুক্তির মাধ্যমে রোগীদের উন্নতমানের ও নির্ভুল পুনর্বাসন সেবা প্রদান করা হবে। বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এই তথ্য জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চীন সরকার প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের রোবটিক যন্ত্রপাতি অনুদান হিসেবে দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধুনিক এই রোবটিক রিহ্যাব সেন্টারে রয়েছে মোট ৬২টি রোবট, যার মধ্যে ২২টি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিনির্ভর। এই রোবটগুলো রোগীর অবস্থা বুঝে সুনির্দিষ্টভাবে ফিজিওথেরাপি, স্নায়ুবিক পুনর্বাসন এবং দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসাসেবা দিতে সক্ষম।
বিএমইউ সূত্র জানায়, সেন্টার চালুর প্রাক্-প্রস্তুতির অংশ হিসেবে চীনের ৭ সদস্যের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের একটি বিশেষজ্ঞ দলের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশি ২৭ জন চিকিৎসক ও ফিজিওথেরাপিস্টকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা অভিজ্ঞতা অর্জন ও কার্যক্রমে দক্ষতা অর্জনের পর পুরোপুরি সেন্টারটি চালু করা হবে।
এই রোবটিক সেন্টার বিশেষভাবে উপকারে আসবে যেসব রোগী স্ট্রোক, পক্ষাঘাত, স্নায়ুবিক ব্যাধি, নার্ভ ইনজুরি, দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, দুর্ঘটনাজনিত জটিলতা ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দুর্বলতায় ভুগছেন। বিশেষ করে ১৯ জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত এবং এখনও চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের জন্য এই সেন্টারে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ থাকবে।
তবে এই সেবা শুধু বিশেষ কিছু রোগীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। পর্যায়ক্রমে সাধারণ রোগীদের জন্যও সেবা উন্মুক্ত করা হবে এবং চিকিৎসার ব্যয় সাধ্যের মধ্যে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
সেন্টারটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে প্রযুক্তিনির্ভর পুনর্বাসন চিকিৎসায় বাংলাদেশে এক নতুন যুগের সূচনা ঘটবে। এটি কেবল চিকিৎসা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন নয়, বরং দেশের পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের জীবনে নতুন আশার আলো হয়ে উঠবে।