দেশে মবের কোনো বিচার হচ্ছে না, প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না মানুষ: মাসুদ কামাল

- আপডেট সময় ১০:৪৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
- / 11
সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, দেশে মবের (হঠাৎ জোটবদ্ধ জনতার সহিংস আচরণ) কোনো বিচার হচ্ছে না, প্রতিবাদ করারও সাহস পাচ্ছে না মানুষ। এমনকি কোনো প্রতিবাদকেও ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করা হচ্ছে না। তিনি মনে করেন, এই মব কালচার আমাদের সমাজে এক ধরনের ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়েছে, যার থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে হবে।
রোববার (৬ জুলাই) নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘কথা’-তে মাসুদ কামাল বলেন, যেখান থেকে আমরা সমাধান বা প্রতিকার আশা করি, সেই সরকারের পক্ষ থেকেই বরং এই মব কালচারকে এক ধরনের প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলে তার মনে হয়েছে।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, গত ১৬ জুন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রথম মব নিয়ে কথা বলেন। শফিকুল আলম মবকে ‘প্রেশার গ্রুপ’ বলে আখ্যায়িত করেন। তার ভাষ্য, যারা এ ধরনের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে, তারা কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে বা কোনো দাবি আদায়ের জন্য সরকারের ওপর চাপ তৈরি করছে, তাই তাদের মব বলা ঠিক হবে না।
মাসুদ কামালের প্রশ্ন, পটিয়ায় একজনকে গ্রেপ্তারের জন্য জনতার যে চাপ তৈরি করা হলো, সেটাকে কি প্রেশার গ্রুপ বলা যায়? ধানমন্ডিতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এগুলোকে মব বলাই যৌক্তিক বলে মনে করেন তিনি।
অন্যদিকে, প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ বলেছেন, মব শব্দটি আওয়ামী ন্যারেটিভের অংশ। তিনি দাবি করেন, অনেক সময় স্বাভাবিক প্রতিবাদকেও মব হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, যাতে মানুষ ভবিষ্যতে আর প্রতিবাদ করার সাহস না পায়। মাসুদ কামাল আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এসব লেবেলিং মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করছে, ফলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতেও মানুষ দ্বিধায় ভুগছে।
তার মতে, সরকারের এক ধরনের নীরব সহানুভূতি বা প্রশ্রয় আছে বলেই এই ঘটনা বারবার ঘটছে। এর ফলে সরকার দাবি করতে পারে যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই, পুলিশও যথেষ্ট কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। এমন যুক্তির মাধ্যমে হয়তো আসন্ন নির্বাচনকে আরও বিলম্বিত করার প্রয়াস থাকতে পারে।
মাসুদ কামাল বলেন, “যদি পুলিশকে সক্রিয় রাখা সম্ভব না হয়, তাহলে নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু হবে এই প্রশ্ন তোলার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আর সেটিই সরকারের কৌশল হতে পারে।”