পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সুইডেনের সহায়তায় বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করছে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

- আপডেট সময় ০৫:০৫:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
- / 25
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নতুন একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে সুইডেন সরকার, তাদের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা সিডা’র মাধ্যমে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর পরিবেশ অধিদপ্তরে এক অনুষ্ঠানে প্রকল্পের অনুদান চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের কাছে। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশগত ঝুঁকি হ্রাস ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
তিনি আরও জানান, প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন অধিদপ্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নত হবে। উদ্ভাবনী কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিবেশ ও জলবায়ু-সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করবে এই প্রকল্প। এর মধ্যে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার উন্নত তদারকি, পরিবেশ পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ এবং দেশের প্রথম “ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট ফান্ড” গঠন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরীসহ অনেকে।
এর আগে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে অনুদান চুক্তি স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্বে) ড. এ. কে. এম. শাহাবুদ্দিন এবং ঢাকাস্থ সুইডেন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ও সহযোগিতা প্রধান মারিয়া স্ট্রিডসম্যান।
সিডার অর্থায়নে ৫০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা ব্যয়ে এই প্রকল্প তিনটি প্রধান উপাদানের ওপর ভিত্তি করে বাস্তবায়িত হবে। প্রথমত, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে জীববৈচিত্র্য রক্ষার সমন্বয় করা হবে। এই অংশে থাকবে পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ, নজরদারি পরিকল্পনা এবং বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর দূষণ পর্যবেক্ষণে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার।
দ্বিতীয়ত, সোনাদিয়া দ্বীপসহ গুরুত্বপূর্ণ ইকোলজিক্যাল ক্রিটিকাল এরিয়া (ইসিএ) এলাকায় উন্নত তদারকি ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এর মধ্যে থাকবে ম্যানগ্রোভ পুনঃস্থাপন, বালিয়াড়ি স্থিতিশীলকরণ, কচ্ছপের প্রজনন কেন্দ্র গঠন এবং প্রাথমিক পরিবেশগত মূল্যায়ন। এছাড়া স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে গঠিত হবে ভিলেজ কনজারভেশন গ্রুপ, যারা জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও টেকসই জীবনযাপনের জন্য কাজ করবে।
তৃতীয় উপাদান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে দেশের প্রথম ‘ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট ফান্ড’। এর জন্য একটি বিস্তৃত স্কোপিং স্টাডি ও অংশীজন পরামর্শের মাধ্যমে টেকসই অর্থায়নের কাঠামো তৈরি করা হবে, যা বিপন্ন প্রজাতি রক্ষা ও মানব-প্রাণী দ্বন্দ্ব হ্রাসে সহায়তা করবে এবং সরকারের বাজেটের ওপর চাপ কমাবে।