ঢাকা ০৯:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জাপানের সহায়তা ও বিনিয়োগে জোর দিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের আহ্বান সংস্কার সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি, দ্রুত নির্বাচনের আশা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছর শেষে দেশে খাদ্য মজুদ বেড়েছে: প্রেস উইং সারা দেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ১,৪৪৩ যুক্তরাজ্যে প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সন্ত্রাসী ঘোষণা ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বিচার ব্যবস্থাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে: জামায়াতে নায়েবে আমির তিন দফা দাবিতে উত্তাল রুয়েট নওগাঁর পোরশা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত নতুন নির্দেশনা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক, থাকছে ঋণ গ্রহীতাদের জন্য সুখবর সুনামগঞ্জে পুকুরের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু

হরমুজ প্রণালীতে মাইন বসানোর প্রস্তুতি নিয়েছিল ইরান: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:২৮:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
  • / 5

ছবি সংগৃহীত

 

গত মাসে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার সময়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক জলপথ হরমুজ প্রণালীতে মাইন স্থাপনের প্রস্তুতি নিয়েছিল ইরান এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (২ জুলাই) বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে, যা গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর প্রতিক্রিয়ায় হরমুজ প্রণালী বন্ধের সম্ভাব্য পদক্ষেপ হিসেবে এই প্রস্তুতি নেয় তেহরান। যদিও প্রণালীতে এখনো কোনো মাইন বসানো হয়নি।

বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত সামুদ্রিক রুট এই হরমুজ প্রণালী। প্রতিদিন বিশ্বের মোট জ্বালানি সরবরাহের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এখান দিয়ে পরিবাহিত হয়। এটি বন্ধ হলে বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহে ভয়াবহ ব্যাঘাত ঘটবে এবং তেলের দাম হঠাৎ করেই বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে প্রণালীটি উন্মুক্ত রয়েছে এবং জাহাজ চলাচল স্বাভাবিকভাবে চালু রয়েছে।

হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা জানান, প্রেসিডেন্টের ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’, হুতিদের বিরুদ্ধে সফল অভিযানে এবং সর্বোচ্চ চাপ ও কৌশলের কারণে হরমুজ প্রণালী খোলা রাখতে যুক্তরাষ্ট্র সফল হয়েছে। এতে ইরান এখন তুলনামূলকভাবে দুর্বল অবস্থানে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর ইরানের পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালী বন্ধের প্রস্তাব পাস করে, যদিও সেটি ছিল বাধ্যতামূলক নয়। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রয়েছে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের হাতে। উল্লেখযোগ্য যে, অতীতেও ইরান বহুবার হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুমকি দিলেও বাস্তবে তা কখনো কার্যকর করেনি।

মার্কিন কর্মকর্তাদের ধারণা, ইরানের এই মাইন বসানোর প্রস্তুতি হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে ভয় দেখানোর কৌশল হতে পারে, আবার সত্যিকার অর্থেই হরমুজ প্রণালী দ্রুত বন্ধ করার সক্ষমতা গড়ে তোলার অংশ হিসেবেও এটি বিবেচনা করা হতে পারে।

২০১৯ সালের তথ্য অনুসারে, ইরানের কাছে পাঁচ হাজারের বেশি নৌ-মাইন মজুত আছে, যা দ্রুত গতির ছোট নৌকা ব্যবহার করে স্থাপন করা সম্ভব।

প্রসঙ্গত, হরমুজ প্রণালী ওমান ও ইরানের মধ্যবর্তী অঞ্চল, যা পারস্য উপসাগরকে আরব সাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। এর সংকীর্ণতম অংশ মাত্র ২১ মাইল প্রশস্ত, যেখানে জাহাজ চলাচলের জন্য নির্ধারিত পথ দুই পাশে ২ মাইল করে। সৌদি আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক এবং কাতারের জ্বালানি রপ্তানির প্রধান রুট এই প্রণালী। এমনকি ইরান নিজেও এখান দিয়েই তেল রপ্তানি করে, যা এই প্রণালী বন্ধের যে কোনো সিদ্ধান্তকে ইরানের জন্যই বিরোধপূর্ণ করে তোলে।

এ অঞ্চলের সামুদ্রিক নিরাপত্তা রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহর দায়িত্বরত। তবে ইরানে হামলার আগে প্রতিশোধের আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র তার মাইনবিরোধী জাহাজগুলো সাময়িকভাবে সরিয়ে নেয়। ইরান এ সময় কাতারে অবস্থানরত একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

হরমুজ প্রণালীতে মাইন বসানোর প্রস্তুতি নিয়েছিল ইরান: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য

আপডেট সময় ০৩:২৮:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

 

গত মাসে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার সময়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক জলপথ হরমুজ প্রণালীতে মাইন স্থাপনের প্রস্তুতি নিয়েছিল ইরান এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (২ জুলাই) বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে, যা গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর প্রতিক্রিয়ায় হরমুজ প্রণালী বন্ধের সম্ভাব্য পদক্ষেপ হিসেবে এই প্রস্তুতি নেয় তেহরান। যদিও প্রণালীতে এখনো কোনো মাইন বসানো হয়নি।

বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত সামুদ্রিক রুট এই হরমুজ প্রণালী। প্রতিদিন বিশ্বের মোট জ্বালানি সরবরাহের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এখান দিয়ে পরিবাহিত হয়। এটি বন্ধ হলে বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহে ভয়াবহ ব্যাঘাত ঘটবে এবং তেলের দাম হঠাৎ করেই বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে প্রণালীটি উন্মুক্ত রয়েছে এবং জাহাজ চলাচল স্বাভাবিকভাবে চালু রয়েছে।

হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা জানান, প্রেসিডেন্টের ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’, হুতিদের বিরুদ্ধে সফল অভিযানে এবং সর্বোচ্চ চাপ ও কৌশলের কারণে হরমুজ প্রণালী খোলা রাখতে যুক্তরাষ্ট্র সফল হয়েছে। এতে ইরান এখন তুলনামূলকভাবে দুর্বল অবস্থানে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর ইরানের পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালী বন্ধের প্রস্তাব পাস করে, যদিও সেটি ছিল বাধ্যতামূলক নয়। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রয়েছে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের হাতে। উল্লেখযোগ্য যে, অতীতেও ইরান বহুবার হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুমকি দিলেও বাস্তবে তা কখনো কার্যকর করেনি।

মার্কিন কর্মকর্তাদের ধারণা, ইরানের এই মাইন বসানোর প্রস্তুতি হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে ভয় দেখানোর কৌশল হতে পারে, আবার সত্যিকার অর্থেই হরমুজ প্রণালী দ্রুত বন্ধ করার সক্ষমতা গড়ে তোলার অংশ হিসেবেও এটি বিবেচনা করা হতে পারে।

২০১৯ সালের তথ্য অনুসারে, ইরানের কাছে পাঁচ হাজারের বেশি নৌ-মাইন মজুত আছে, যা দ্রুত গতির ছোট নৌকা ব্যবহার করে স্থাপন করা সম্ভব।

প্রসঙ্গত, হরমুজ প্রণালী ওমান ও ইরানের মধ্যবর্তী অঞ্চল, যা পারস্য উপসাগরকে আরব সাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। এর সংকীর্ণতম অংশ মাত্র ২১ মাইল প্রশস্ত, যেখানে জাহাজ চলাচলের জন্য নির্ধারিত পথ দুই পাশে ২ মাইল করে। সৌদি আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক এবং কাতারের জ্বালানি রপ্তানির প্রধান রুট এই প্রণালী। এমনকি ইরান নিজেও এখান দিয়েই তেল রপ্তানি করে, যা এই প্রণালী বন্ধের যে কোনো সিদ্ধান্তকে ইরানের জন্যই বিরোধপূর্ণ করে তোলে।

এ অঞ্চলের সামুদ্রিক নিরাপত্তা রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহর দায়িত্বরত। তবে ইরানে হামলার আগে প্রতিশোধের আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র তার মাইনবিরোধী জাহাজগুলো সাময়িকভাবে সরিয়ে নেয়। ইরান এ সময় কাতারে অবস্থানরত একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখায়।