নারীদের জন্য ১০০ আসন সংরক্ষণের প্রস্তাব অপ্রাসঙ্গিক: ইসলামী আন্দোলন

- আপডেট সময় ১০:৩৯:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
- / 4
জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে নারীদের জন্য ১০০টি আসন সংরক্ষণের প্রস্তাব নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তা অপ্রাসঙ্গিক ও অপ্রয়োজনীয় বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থান একটি ঐতিহাসিক দাবি। এটি ছিল ভবিষ্যতের স্বৈরতন্ত্র ঠেকাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়নের আন্দোলন। এর সঙ্গে নারীদের জন্য আসন সংরক্ষণের কোনও সম্পর্ক নেই।”
মঙ্গলবার (১৭ জুন) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় দিনের আলোচনার পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই নারীদের জন্য রাজনীতিতে প্রবেশের সকল সুযোগ বিদ্যমান। ৩০০টি সাধারণ আসনে তারা পুরুষের সঙ্গে সমানভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আমাদের ইতিহাসে বহু নারী মূলধারার রাজনীতিতে সাফল্য অর্জন করেছেন। এমনকি বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, যেখানে দীর্ঘ সময় ধরে নারী নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হয়েছে।”
তবে তিনি স্বীকার করেন, “সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাস্তবতার কারণে অনেক নারী এখনও রাজনীতিতে সক্রিয় হতে পারছেন না। কিন্তু সেটি আসন সংরক্ষণের মাধ্যমে সমাধান নয়। বরং উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে।”
সংসদের কার্যকারিতা বাড়াতে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাবও সমর্থন করেছে ইসলামী আন্দোলন। অর্থবিল ও আস্থা ভোট বাদে অন্যান্য ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের স্বাধীন মতপ্রকাশের সুযোগ দেওয়ার পক্ষে দলটি ঐকমত্য পোষণ করেছে।
এছাড়া সংসদীয় কমিটিগুলোর নেতৃত্বে বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে, বিশেষ করে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি, প্রিভিলেজ কমিটি, এস্টিমেশন কমিটি এবং পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটিতে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের দাবি জানানো হয়।
মাওলানা গাজী বলেন, “সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা বাড়িয়ে বাস্তব কোনো পরিবর্তন আসবে না। বরং রাজনৈতিক দলগুলো যদি নিজেদের প্রার্থী নির্বাচনে নারীদের সমান সুযোগ দেয় এবং নেতৃত্বে নিয়ে আসে, তবেই তাদের প্রকৃত ক্ষমতায়ন সম্ভব।”
তবে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তিনি বলেন, “সব রাজনৈতিক দল একমত হলে ১০০টি নারী আসন সংরক্ষণের প্রস্তাব বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (PR) পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়া জরুরি। দলভিত্তিক প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে নারী আসন বণ্টন করা হলে তা বেশি ন্যায্য হবে।”
সভায় তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অনুপস্থিতি নিয়েও কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।