০২:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ঢাকা-১১ আসনে নির্বাচন করবেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম থাই–কাম্বোডিয়া সীমান্তে পুনরায় উত্তেজনা: অস্ত্রবিরতি ভেঙে বিমান হামলা, নিহত ১ সৈন্য ইসির সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধি দল জার্মান সেনাবাহিনী বাড়ছে: ২০৩৫ সালের মধ্যে ২,৬০,০০০ সক্রিয় সদস্যের লক্ষ্য অনুমোদন মধ্যপ্রাচ্যের কঠিনতম পানি প্রকল্প সম্পন্ন করল ইরান ফিনল্যান্ডে ডাটা সেন্টারের নির্গত  তাপে গরম হচ্ছে পুরো শহর চীন কোয়ান্টাম কম্পিউটারে সফলতা পেলে যুক্তরাষ্ট্রকে এক নিমেষে প্রস্তরযুগে পাঠিয়ে দেবে যুক্তরাষ্ট্রের F-35 যুদ্ধবিমান প্রকল্পে ফিরে আসার বিষয়ে আরো একধাপ এগিয়ে গেল তুরস্ক: এমনটাই জানিয়েছেন তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক।

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ বিলিয়ন ডলারে

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:২৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫
  • / 201

ছবি: সংগৃহীত

 

রেমিট্যান্সে ধারাবাহিক উত্থান এবং পণ্য রপ্তানিতে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, ৪ জুন পর্যন্ত দেশের মোট বা গ্রোস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত হিসাব পদ্ধতি BPM6 অনুযায়ী রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে ২০ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। যদিও ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখনো ১৬ বিলিয়ন ডলারের ঘরেই রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে জানান, রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈদেশিক লেনদেনে চাপ অনেকটাই কমে এসেছে। বাজারভিত্তিক ডলারের বিনিময়মূল্য চালু থাকলেও বর্তমানে ডলারের দাম ১২৩ টাকার আশেপাশে স্থিতিশীল রয়েছে। একই সঙ্গে, ব্যাংকগুলো এখন ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে পারছে, ফলে আমদানি পণ্যের সরবরাহ ও দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এর আগে ৬ মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল বাবদ ১.৮৮ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর গ্রোস রিজার্ভ নেমে আসে ২৫ বিলিয়নে এবং প্রকৃত রিজার্ভ নামে ২০ বিলিয়নে। তবে মে মাসের শেষদিক থেকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়তে থাকায় রিজার্ভ পুনরায় বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসেরও বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকা নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, হুন্ডি ও অর্থপাচারে সরকারের কঠোর অবস্থানের ফলে বৈধপথে প্রবাসী আয় বাড়ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত রেমিট্যান্সে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। শুধু মার্চ মাসেই ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা একক মাসে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। মে মাসে এসেছে ২৯৭ কোটি ডলার এবং এপ্রিলেও ছিল ২৭৫ কোটি ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জুন ৩ পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৮১১ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৯ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি।

এদিকে রপ্তানি খাতেও রয়েছে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মে মাসে দেশের পণ্য রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪৭৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, যা আগের বছরের মে মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে—এই ১১ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৯৫ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আরও দৃঢ় হবে এবং ভবিষ্যতের বৈদেশিক ঋণ ও আমদানি চাপ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সক্ষম হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ বিলিয়ন ডলারে

আপডেট সময় ১১:২৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫

 

রেমিট্যান্সে ধারাবাহিক উত্থান এবং পণ্য রপ্তানিতে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, ৪ জুন পর্যন্ত দেশের মোট বা গ্রোস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত হিসাব পদ্ধতি BPM6 অনুযায়ী রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে ২০ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। যদিও ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখনো ১৬ বিলিয়ন ডলারের ঘরেই রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে জানান, রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈদেশিক লেনদেনে চাপ অনেকটাই কমে এসেছে। বাজারভিত্তিক ডলারের বিনিময়মূল্য চালু থাকলেও বর্তমানে ডলারের দাম ১২৩ টাকার আশেপাশে স্থিতিশীল রয়েছে। একই সঙ্গে, ব্যাংকগুলো এখন ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে পারছে, ফলে আমদানি পণ্যের সরবরাহ ও দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এর আগে ৬ মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল বাবদ ১.৮৮ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর গ্রোস রিজার্ভ নেমে আসে ২৫ বিলিয়নে এবং প্রকৃত রিজার্ভ নামে ২০ বিলিয়নে। তবে মে মাসের শেষদিক থেকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়তে থাকায় রিজার্ভ পুনরায় বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসেরও বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকা নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, হুন্ডি ও অর্থপাচারে সরকারের কঠোর অবস্থানের ফলে বৈধপথে প্রবাসী আয় বাড়ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত রেমিট্যান্সে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। শুধু মার্চ মাসেই ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা একক মাসে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। মে মাসে এসেছে ২৯৭ কোটি ডলার এবং এপ্রিলেও ছিল ২৭৫ কোটি ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জুন ৩ পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৮১১ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৯ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি।

এদিকে রপ্তানি খাতেও রয়েছে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মে মাসে দেশের পণ্য রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪৭৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, যা আগের বছরের মে মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে—এই ১১ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৯৫ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আরও দৃঢ় হবে এবং ভবিষ্যতের বৈদেশিক ঋণ ও আমদানি চাপ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সক্ষম হবে।