ঢাকা ০১:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন ডা. জুবাইদা রহমান তারেক রহমানের ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে মালয়েশিয়ায় বিএনপির কর্মশালা ঢাবি ভিসিকে দোষী দেখিয়ে মূল সত্য আড়াল করার পাঁয়তারা: সারজিসের অভিযোগ চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়া অর্থনীতির নতুন দিগন্ত সম্ভব নয়: ড. ইউনূস শাহরিয়ার সাম্য হত্যাকাণ্ড: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এখন ‘অপরাধের স্বর্গরাজ্য’: হাসনাত আব্দুল্লাহ সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলমের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা ট্রাম্প করেনি: ভারতের স্পষ্ট বার্তা টাইগারদের আরব আমিরাত সফর শুরু, পাকিস্তান সিরিজ নিয়ে শঙ্কা চট্টগ্রাম বন্দর ঘুরে দেখলেন প্রধান উপদেষ্টা ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা, আলোচনার মাঝেই উত্তেজনা বৃদ্ধি

যশোরে বারোমাসি থাই কাঁঠালের চাষে নতুন দিগন্ত, হাবিব খানের সাফল্য

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৬:৩০:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
  • / 3

ছবি সংগৃহীত

 

 

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার মশ্মিমনগর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান খান থাইল্যান্ডের বারোমাসি কাঁঠালের বাগান করে এলাকায় চমক সৃষ্টি করেছেন। আঠাবিহীন, সুগন্ধিযুক্ত ও রসালো এই কাঁঠালের সফল চাষে আশাবাদী কৃষক ও কৃষি বিভাগ। তারা বলছে, বাণিজ্যিকভাবে চাষ ছড়িয়ে পড়লে পুষ্টি ও আর্থিক সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

দেড় বছর আগে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে থাইল্যান্ড থেকে দেড়শ বারোমাসি কাঁঠালের কলম আনেন হাবিবুর রহমান। ঢাকায় জীবাণুমুক্তকরণের জন্য এসব চারা এক সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। এরপর ১ একর জমিতে গাছগুলো রোপণ করা হয়।

বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের খুঁটির সহায়তায় খাড়া করা সরু গাছগুলোয় গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত ঝুলছে কাঁঠাল। কাঁঠালের ভারে ডাল নুয়ে পড়েছে। তাই অনেক কাঁঠাল পরিপক্ব হওয়ার আগেই কেটে ফেলা হয়েছে। পরিচর্যায় নিয়োজিত হাফিজুর রহমান জানান, ভার্মি কম্পোস্ট দিয়ে মাটি প্রস্তুত করে ভাদ্র মাসে চারা রোপণ করা হয়। রোপণের দুই মাস পরেই গাছে কাঁঠালের মুচি দেখা দেয়, তবে গাছ ছোট হওয়ায় তা কেটে ফেলা হয়।

চলতি বছর প্রতিটি গাছে ২০-৩০টি কাঁঠাল ধরেছে বলে জানান হাফিজুর। তুলনামূলক বড় গাছে কাঁঠাল রাখা হয়। চিকন ডালে ভার সামলাতে না পেরে অনেক কাঁঠাল পরিপক্ব হওয়ার আগেই ‘ইচড়’ হিসেবে বাজারে বিক্রি করা হয়েছে ৪০ টাকা কেজি দরে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০টি কাঁঠাল বিক্রি করা হয়েছে, আরও অনেক কাঁঠাল গাছে ঝুলে আছে।

কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, “এই কাঁঠাল পাকার এক সপ্তাহ আগেই সুগন্ধ ছড়ায়। আঠাবিহীন রসালো কোষ খেতে অসাধারণ। আগামী বছর থেকে কলম উৎপাদন করে বাজারজাত করবো। কাঁঠালের কোয়া প্যাকেটজাত করে শপিংমলে পাঠানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। একই সঙ্গে সারা দেশে এই জাত ছড়িয়ে দিতে চাই।”

মশ্মিমনগর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, “আঠার কারণে অনেকে কাঁঠাল এড়িয়ে চলে। কিন্তু এই জাত আঠাবিহীন হওয়ায় তরুণরাও আগ্রহী হবে। এতে পুষ্টির চাহিদা মেটানোর সুযোগ সৃষ্টি হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বারোমাসি এই কাঁঠালে বছরে তিন-চারবার ফল আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখনো পুরো মৌসুম পার হয়নি। তারপরও এর বাণিজ্যিক সম্ভাবনা ব্যাপক। নিয়মিত আমরা বাগান পরিদর্শন করি এবং পরামর্শ দিয়ে থাকি।”

মণিরামপুর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার শারমিন শাহানাজ জানান, “বাগানটি নিয়মিত তদারকিতে রয়েছে। কৃষি বিভাগ প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।”

আঠাবিহীন, সুগন্ধি ও সুস্বাদু কাঁঠালের এই সফল চাষ নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য এক অনুপ্রেরণা। বারোমাসি এই জাত ছড়িয়ে পড়লে দেশের কাঁঠাল উৎপাদনে নতুন যুগের সূচনা হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

যশোরে বারোমাসি থাই কাঁঠালের চাষে নতুন দিগন্ত, হাবিব খানের সাফল্য

আপডেট সময় ০৬:৩০:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

 

 

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার মশ্মিমনগর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান খান থাইল্যান্ডের বারোমাসি কাঁঠালের বাগান করে এলাকায় চমক সৃষ্টি করেছেন। আঠাবিহীন, সুগন্ধিযুক্ত ও রসালো এই কাঁঠালের সফল চাষে আশাবাদী কৃষক ও কৃষি বিভাগ। তারা বলছে, বাণিজ্যিকভাবে চাষ ছড়িয়ে পড়লে পুষ্টি ও আর্থিক সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

দেড় বছর আগে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে থাইল্যান্ড থেকে দেড়শ বারোমাসি কাঁঠালের কলম আনেন হাবিবুর রহমান। ঢাকায় জীবাণুমুক্তকরণের জন্য এসব চারা এক সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। এরপর ১ একর জমিতে গাছগুলো রোপণ করা হয়।

বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের খুঁটির সহায়তায় খাড়া করা সরু গাছগুলোয় গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত ঝুলছে কাঁঠাল। কাঁঠালের ভারে ডাল নুয়ে পড়েছে। তাই অনেক কাঁঠাল পরিপক্ব হওয়ার আগেই কেটে ফেলা হয়েছে। পরিচর্যায় নিয়োজিত হাফিজুর রহমান জানান, ভার্মি কম্পোস্ট দিয়ে মাটি প্রস্তুত করে ভাদ্র মাসে চারা রোপণ করা হয়। রোপণের দুই মাস পরেই গাছে কাঁঠালের মুচি দেখা দেয়, তবে গাছ ছোট হওয়ায় তা কেটে ফেলা হয়।

চলতি বছর প্রতিটি গাছে ২০-৩০টি কাঁঠাল ধরেছে বলে জানান হাফিজুর। তুলনামূলক বড় গাছে কাঁঠাল রাখা হয়। চিকন ডালে ভার সামলাতে না পেরে অনেক কাঁঠাল পরিপক্ব হওয়ার আগেই ‘ইচড়’ হিসেবে বাজারে বিক্রি করা হয়েছে ৪০ টাকা কেজি দরে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০টি কাঁঠাল বিক্রি করা হয়েছে, আরও অনেক কাঁঠাল গাছে ঝুলে আছে।

কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, “এই কাঁঠাল পাকার এক সপ্তাহ আগেই সুগন্ধ ছড়ায়। আঠাবিহীন রসালো কোষ খেতে অসাধারণ। আগামী বছর থেকে কলম উৎপাদন করে বাজারজাত করবো। কাঁঠালের কোয়া প্যাকেটজাত করে শপিংমলে পাঠানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। একই সঙ্গে সারা দেশে এই জাত ছড়িয়ে দিতে চাই।”

মশ্মিমনগর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, “আঠার কারণে অনেকে কাঁঠাল এড়িয়ে চলে। কিন্তু এই জাত আঠাবিহীন হওয়ায় তরুণরাও আগ্রহী হবে। এতে পুষ্টির চাহিদা মেটানোর সুযোগ সৃষ্টি হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বারোমাসি এই কাঁঠালে বছরে তিন-চারবার ফল আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখনো পুরো মৌসুম পার হয়নি। তারপরও এর বাণিজ্যিক সম্ভাবনা ব্যাপক। নিয়মিত আমরা বাগান পরিদর্শন করি এবং পরামর্শ দিয়ে থাকি।”

মণিরামপুর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার শারমিন শাহানাজ জানান, “বাগানটি নিয়মিত তদারকিতে রয়েছে। কৃষি বিভাগ প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।”

আঠাবিহীন, সুগন্ধি ও সুস্বাদু কাঁঠালের এই সফল চাষ নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য এক অনুপ্রেরণা। বারোমাসি এই জাত ছড়িয়ে পড়লে দেশের কাঁঠাল উৎপাদনে নতুন যুগের সূচনা হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।