ঢাকা ১২:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
এআই চ্যাটবট নিয়ে গুরুতর তথ্য ফাঁস স্বীকার করল মেটা নবীগঞ্জে ৩০ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদককারবারি আটক সংগ্রাম-শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় ৮১ বছরে খালেদা জিয়া রাশিয়ার সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় ড্রোন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলছে লিথুয়ানিয়া এআই–ভিত্তিক হার্ডওয়্যারে বড় উদ্যোগ নিচ্ছে অ্যাপল জেরুজালেমকে চিরতরে ছিনিয়ে নিতে ই-ওয়ান বসতি প্রকল্প পুনরুজ্জীবনের ঘোষণা ইসরাইলি অর্থমন্ত্রীর ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলল ইউরোপ সিরিয়ার পুনর্গঠনে ইদলিব হবে কেন্দ্রবিন্দু: প্রেসিডেন্ট শারআ নির্বাচন করলে তফসিলের আগেই উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দেব: আসিফ মাহমুদ রাজনীতি থেকে মাইনাস হবে, যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে: সালাহউদ্দিন

বরিশালের উপকূলজুড়ে অচল স্লুইসগেট, হুমকিতে কৃষি ও জনপদ

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:২১:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
  • / 22

ছবি সংগৃহীত

 

দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা স্লুইসগেটগুলো এক সময় ছিল লবণাক্ত পানি রোধে অন্যতম ভরসা। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে অবহেলায় পড়ে থেকে এখন সেগুলোর অনেকই পরিণত হয়েছে অকার্যকর যন্ত্রে। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় স্থাপিত ২ হাজার ৬৮৬টি স্লুইসগেটের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই বর্তমানে বিকল হয়ে রয়েছে। এ কারণে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নদী থেকে অনায়াসেই প্রবেশ করছে নোনা পানি, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলি জমি, মাছের ঘের ও মানুষের বসতভিটা।

বিশেষ করে পটুয়াখালী, বরগুনা ও বরিশাল জেলার অবস্থা আরও ভয়াবহ। এসব এলাকার হাজার হাজার কৃষক প্রতিবছর নোনা পানির আগ্রাসনে ফসল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। পটুয়াখালীর কৃষক আল আমিন জানান, “বছরের পর বছর ধরে একই সমস্যা। ফসল পাকার আগেই নোনা পানি ঢুকে সব নষ্ট করে দেয়।”

বরগুনা জেলার বগী বাজার এলাকার স্লুইসগেটগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এখন পুরোপুরি অকার্যকর। জেলার প্রায় ৭৫০টিরও বেশি স্লুইসগেট ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রীশিপপুর এলাকার চিত্রও একইরকম। সেখানকার স্থানীয়রা জানান, এক সময় এসব স্লুইসগেট মানুষকে রক্ষা করত, কিন্তু এখন সেগুলোই হয়ে উঠেছে বিপদের কারণ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, বর্তমানে বিভাগের ২ হাজার ৬৮৬টি স্লুইসগেটের মধ্যে সচল রয়েছে মাত্র ১ হাজার ৭৪৬টি। বাকিগুলো চরম অবহেলায় পড়ে থেকে এখন পরিবেশ ও জীবিকা নির্বাহের জন্য হুমকিস্বরূপ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরিশাল অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানান, “সংস্কার ও নতুন স্লুইসগেট নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।”

উপকূলীয় মানুষের একটাই দাবি প্রকল্প যেন দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়ন হয়। কারণ প্রতি বছর লবণাক্ত পানির ক্ষতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানো তাদের পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা ও বাসস্থান রক্ষা দুটোই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বরিশালের উপকূলজুড়ে অচল স্লুইসগেট, হুমকিতে কৃষি ও জনপদ

আপডেট সময় ১০:২১:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

 

দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা স্লুইসগেটগুলো এক সময় ছিল লবণাক্ত পানি রোধে অন্যতম ভরসা। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে অবহেলায় পড়ে থেকে এখন সেগুলোর অনেকই পরিণত হয়েছে অকার্যকর যন্ত্রে। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় স্থাপিত ২ হাজার ৬৮৬টি স্লুইসগেটের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই বর্তমানে বিকল হয়ে রয়েছে। এ কারণে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নদী থেকে অনায়াসেই প্রবেশ করছে নোনা পানি, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলি জমি, মাছের ঘের ও মানুষের বসতভিটা।

বিশেষ করে পটুয়াখালী, বরগুনা ও বরিশাল জেলার অবস্থা আরও ভয়াবহ। এসব এলাকার হাজার হাজার কৃষক প্রতিবছর নোনা পানির আগ্রাসনে ফসল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। পটুয়াখালীর কৃষক আল আমিন জানান, “বছরের পর বছর ধরে একই সমস্যা। ফসল পাকার আগেই নোনা পানি ঢুকে সব নষ্ট করে দেয়।”

বরগুনা জেলার বগী বাজার এলাকার স্লুইসগেটগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এখন পুরোপুরি অকার্যকর। জেলার প্রায় ৭৫০টিরও বেশি স্লুইসগেট ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রীশিপপুর এলাকার চিত্রও একইরকম। সেখানকার স্থানীয়রা জানান, এক সময় এসব স্লুইসগেট মানুষকে রক্ষা করত, কিন্তু এখন সেগুলোই হয়ে উঠেছে বিপদের কারণ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, বর্তমানে বিভাগের ২ হাজার ৬৮৬টি স্লুইসগেটের মধ্যে সচল রয়েছে মাত্র ১ হাজার ৭৪৬টি। বাকিগুলো চরম অবহেলায় পড়ে থেকে এখন পরিবেশ ও জীবিকা নির্বাহের জন্য হুমকিস্বরূপ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরিশাল অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানান, “সংস্কার ও নতুন স্লুইসগেট নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।”

উপকূলীয় মানুষের একটাই দাবি প্রকল্প যেন দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়ন হয়। কারণ প্রতি বছর লবণাক্ত পানির ক্ষতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানো তাদের পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা ও বাসস্থান রক্ষা দুটোই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।