ট্রাম্পের শুল্কনীতিতে ধাক্কা খাচ্ছে মার্কিন অর্থনীতি, বাড়ছে বৈশ্বিক মন্দার শঙ্কা
- আপডেট সময় ১২:৩২:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
- / 71
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন মাসে মার্কিন অর্থনীতি ০.৩০ শতাংশ হারে সংকুচিত হয়েছে। অথচ এর ঠিক আগের প্রান্তিকে, অর্থাৎ বাইডেন প্রশাসনের শেষ সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ২.৪০ শতাংশ। হঠাৎ এই পতন বিশ্ববাজারে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্যনীতি, বিশেষ করে পাল্টা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত, এই সংকোচনের অন্যতম কারণ। যদিও তিনি তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন, তবে চীনের পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক এখনো বহাল রয়েছে। ট্রাম্প অবশ্য নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “স্বল্প মেয়াদে মন্দা আসতেই পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি আগের চেয়ে ভালো করবে।”
‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, “ওয়াল স্ট্রিটের অনেক বিশ্লেষক বলছেন ইতিহাসের সেরা অর্থনীতি হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের। আমরা এখন এক ক্রান্তিকাল পার করছি। ভবিষ্যতে আমরা দারুণ কিছু করব।”
এদিকে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রথম প্রান্তিকে ভোক্তাব্যয় হ্রাস পেয়েছে এবং ব্যবসায়ীরা পণ্য মজুতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সরকারের আশা ছিল, বছরের শুরুতে অর্থনীতি শক্তিশালী থাকবে। কিন্তু ২০২২ সালের পর এই প্রথম কোনো প্রান্তিকে অর্থনীতি সংকুচিত হলো।
বিশ্বজুড়েও মন্দার আশঙ্কা বাড়ছে। রয়টার্স পরিচালিত এক জরিপে ৫০টি দেশের অর্থনীতিবিদ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতির কারণে বৈশ্বিক ব্যবসা পরিবেশে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের মতে, ট্রাম্পের শুল্কনীতি ব্যবসায়িক আস্থা নষ্ট করছে। অথচ তিন মাস আগেও অধিকাংশ বিশ্লেষক বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির আশা করেছিলেন।
স্টেট স্ট্রিটের ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার প্রধান কৌশলবিদ টিমোথি গ্রাফ বলেন, “এই নীতির প্রভাবে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় চুক্তির ওপর আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি সব শুল্ক তুলে নিলেও এর ক্ষতি সহজে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ-পরবর্তী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে নতুন করে মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও বেড়ে যাচ্ছে।














