র্যাংকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজ: দেশীয় অটোমোবাইল শিল্পে নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন

- আপডেট সময় ০৪:৫১:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
- / 40
বাংলাদেশে যানবাহনের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ব্যক্তি ও বাণিজ্যিক প্রয়োজনে গাড়ি এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং নিত্যপ্রয়োজনীয় একটি অনুষঙ্গ। এই চাহিদাকে সামনে রেখে গাজীপুরের বড় ভবানীপুরে গড়ে উঠেছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় অটোমোবাইল কারখানা র্যাংকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানটি স্বল্প সময়েই দেশীয় বাজারে বিশ্বমানের গাড়ি সরবরাহ করে গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করেছে।
দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের বাজারও দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক পরিবহনে আধুনিক ও টেকসই গাড়ির প্রয়োজনীয়তা নতুন শিল্প সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। এই চ্যালেঞ্জকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে র্যাংকন আধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী চিন্তাধারার মাধ্যমে গাড়ি সংযোজন ও উৎপাদনে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।
র্যাংকনের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা এখন ২,৫০০ ইউনিট। কারখানায় ব্যবহৃত হচ্ছে সরাসরি জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি থেকে আমদানিকৃত সর্বাধুনিক সরঞ্জাম। জিব ক্রেন, ওভারহেড ক্রেন, টর্ক রেঞ্চ, এবং আধুনিক লিফট প্রযুক্তির সমন্বয়ে প্রতিটি গাড়ির গুণগত মান নিশ্চিত করা হচ্ছে। উন্নত থ্রিডি হুইল অ্যালাইনমেন্ট, ব্রেক ফোর্স টেস্টার ও হুইল ব্যালেন্সিং মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে যানবাহনের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা হয়।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য র্যাংকনের লিকুইড পেইন্ট শপ, যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা। এখানে প্রতিটি গাড়িকে গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডে রং করা হয়, যা দীর্ঘস্থায়ী এবং পরিবেশবান্ধব।
র্যাংকন ইতিমধ্যে মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার ও এক্সপ্যান্ডার-এর মতো জনপ্রিয় মডেল অ্যাসেম্বলি করে বাজারে সাড়া ফেলেছে। জাপানি প্রযুক্তির সহায়তায় খুব শীঘ্রই দেশে তৈরি এক্সপ্যান্ডার গাড়ি বাজারে আসবে। এ ছাড়া প্রোটন এক্স৭০, মার্সিডিজ ওএফ১৬২৩-এর মতো উন্নত মডেলও সফলভাবে অ্যাসেম্বলি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় রয়েছে প্রোটন এক্স৯০, জ্যাক টি৮ ও টি৯, এবং দুটি পিকআপ ট্রাক মডেল সংযোজন। র্যাংকন দেশের পরিবহন খাতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
২৫০ জনের অধিক দক্ষ প্রকৌশলী ও কর্মী নিয়ে পরিচালিত র্যাংকন শুধু গাড়ি উৎপাদনই নয়, বরং স্থানীয় অর্থনীতিতে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মীদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং উদ্ভাবনী চিন্তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
র্যাংকনের ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি আরও বিস্তৃত। প্রতিষ্ঠানটি খুব শীঘ্রই ইলেকট্রিক ও হাইব্রিড গাড়ির অ্যাসেম্বলি শুরু করতে যাচ্ছে। পরিবেশবান্ধব যানবাহন উৎপাদনে এবং দেশীয় উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে র্যাংকন যে ভূমিকা রাখছে, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অটোমোবাইল শিল্পের নতুন যুগের সূচনা করবে। উদ্ভাবন, গুণমান ও উৎকর্ষতায় র্যাংকনের পথচলা অব্যাহত থাকবে।