ঢাকা ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পবিত্র ঈদুল আযহায় স্বাস্থ্যসচেতনতা: সুস্থ থাকুন, নিরাপদে ঈদ করুন আর্জেন্টিনার জয় চিলিতে, গোল আলভারেজের ঈদুল আজহা উপলক্ষে ওমানে ৬৪৫ কারাবন্দিকে ক্ষমা দিলেন সুলতান হাইথাম দুবাইয়ে ঈদুল আজহার নামাজ সম্পন্ন, ঈদগাহে মুসল্লিদের ঢল বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ বিলিয়ন ডলারে ফের অন্তঃসত্ত্বা ‘দৃশ্যম’ অভিনেত্রী ঈশিতা দত্ত, প্রকাশ্যে বেবি বাম্প বেলুন, রশি আর জেদ, এই তিন দিয়েই ডুবন্ত যুদ্ধজাহাজ তুলল উত্তর কোরিয়া 🕋 পবিত্র হজ আজ পুলিশের জন্য কেনা হচ্ছে ২০০ গাড়ি

ট্রাম্পের নীতিতে ধস নেমেছে ডলারে, বিশ্বমঞ্চে মর্যাদা হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৩০:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • / 31

ছবি সংগৃহীত

 

 

বিশ্ববাণিজ্যে মার্কিন ডলারের প্রভাব একসময় ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কনীতির কারণে সেই ডলারের শক্তি ভাটার দিকে যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ করে আমদানি নিরুৎসাহিত করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করানো। কিন্তু ফল হয়েছে উল্টো ডলার হারাচ্ছে আন্তর্জাতিক আস্থা।

বিশ্ববাজারে ডলারের মান পতনের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ মিলেছে ইউএস ডলার ইনডেক্সে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে যেখানে ইনডেক্সের মান ছিল ১১০, এপ্রিলের ১৮ তারিখ তা নেমে এসেছে ৯৯ দশমিক ২৩-এ। অর্থাৎ তিন মাসে ডলারের মূল্যমান কমেছে প্রায় ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। ইউরো ও পাউন্ডের বিপরীতে ডলারের পতন হয়েছে ৫ শতাংশ, ইয়েনের বিপরীতে ৬ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা ডলার কিনছেন কম, বিক্রি করছেন বেশি।

ডলারের ওপর আস্থাহীনতার আরেকটি দিক হলো মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের চাহিদা কমে যাওয়া। আগে যেটি সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত ছিল, এখন তার সুদহার বাড়াতে হচ্ছে চাহিদা ধরে রাখতে। এটি স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে, মার্কিন অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে বিনিয়োগকারীরা সন্দিহান।

বাংলাদেশের মতো দেশে যেহেতু ডলারের বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারনির্ভর নয়, তাই এই বিশ্বজুড়ে ডলারের দরপতনের সরাসরি প্রভাব তেমনভাবে পড়ছে না। তবে ভারতের বাজারে ইতিমধ্যে রুপির সাপেক্ষে ডলারের দরও কমছে।
বিশ্ব অর্থনীতিবিদদের মতে, শক্তিশালী ডলারের ওপর ভর করে এতদিন বিশ্ববাণিজ্যে আধিপত্য বিস্তার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন যদি এই ডলারই আস্থাহীন হয়ে পড়ে, তবে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি যেমন ধাক্কা খাবে, তেমনি বিশ্ববাজারেও তৈরি হবে অস্থিরতা।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভবিষ্যতে যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচালিত ডিজিটাল মুদ্রা চালু হয়, তবে SWIFT-এর মতো ব্যবস্থাও অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে। ফলে মার্কিন ডলারের প্রভাব কমে যাবে। চীন এরই মধ্যে ইউয়ানে বাণিজ্যের পথে এগোচ্ছে, ভারতের মতো দেশও ডলার নির্ভরতা কমাতে আগ্রহী।

সবমিলিয়ে ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্কনীতি এখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্তে পরিণত হচ্ছে। এই নীতিই হয়তো ডলারের গৌরবময় অধ্যায়ের ইতি টানতে চলেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্রাম্পের নীতিতে ধস নেমেছে ডলারে, বিশ্বমঞ্চে মর্যাদা হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় ১২:৩০:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

 

 

বিশ্ববাণিজ্যে মার্কিন ডলারের প্রভাব একসময় ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কনীতির কারণে সেই ডলারের শক্তি ভাটার দিকে যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ করে আমদানি নিরুৎসাহিত করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করানো। কিন্তু ফল হয়েছে উল্টো ডলার হারাচ্ছে আন্তর্জাতিক আস্থা।

বিশ্ববাজারে ডলারের মান পতনের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ মিলেছে ইউএস ডলার ইনডেক্সে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে যেখানে ইনডেক্সের মান ছিল ১১০, এপ্রিলের ১৮ তারিখ তা নেমে এসেছে ৯৯ দশমিক ২৩-এ। অর্থাৎ তিন মাসে ডলারের মূল্যমান কমেছে প্রায় ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। ইউরো ও পাউন্ডের বিপরীতে ডলারের পতন হয়েছে ৫ শতাংশ, ইয়েনের বিপরীতে ৬ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা ডলার কিনছেন কম, বিক্রি করছেন বেশি।

ডলারের ওপর আস্থাহীনতার আরেকটি দিক হলো মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের চাহিদা কমে যাওয়া। আগে যেটি সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত ছিল, এখন তার সুদহার বাড়াতে হচ্ছে চাহিদা ধরে রাখতে। এটি স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে, মার্কিন অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে বিনিয়োগকারীরা সন্দিহান।

বাংলাদেশের মতো দেশে যেহেতু ডলারের বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারনির্ভর নয়, তাই এই বিশ্বজুড়ে ডলারের দরপতনের সরাসরি প্রভাব তেমনভাবে পড়ছে না। তবে ভারতের বাজারে ইতিমধ্যে রুপির সাপেক্ষে ডলারের দরও কমছে।
বিশ্ব অর্থনীতিবিদদের মতে, শক্তিশালী ডলারের ওপর ভর করে এতদিন বিশ্ববাণিজ্যে আধিপত্য বিস্তার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন যদি এই ডলারই আস্থাহীন হয়ে পড়ে, তবে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি যেমন ধাক্কা খাবে, তেমনি বিশ্ববাজারেও তৈরি হবে অস্থিরতা।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভবিষ্যতে যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচালিত ডিজিটাল মুদ্রা চালু হয়, তবে SWIFT-এর মতো ব্যবস্থাও অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে। ফলে মার্কিন ডলারের প্রভাব কমে যাবে। চীন এরই মধ্যে ইউয়ানে বাণিজ্যের পথে এগোচ্ছে, ভারতের মতো দেশও ডলার নির্ভরতা কমাতে আগ্রহী।

সবমিলিয়ে ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্কনীতি এখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্তে পরিণত হচ্ছে। এই নীতিই হয়তো ডলারের গৌরবময় অধ্যায়ের ইতি টানতে চলেছে।