ঢাকা ০৪:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চীনের কৌশলগত পদক্ষেপ: বোয়িং বর্জন, এয়ারবাসের কাছে অতিরিক্ত ইঞ্জিনের দাবি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:২৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / 25

ছবি সংগৃহীত

চীন এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নির্মাতা বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে কৌশলগত অবস্থান নিচ্ছে। দেশটির সরকার নিজস্ব এয়ারলাইনগুলোকে নতুন কোনো বোয়িং বিমান গ্রহণ করতে নিরুৎসাহিত করেছে। এর পরিবর্তে ইউরোপীয় নির্মাতা এয়ারবাসের কাছ থেকে অতিরিক্ত ইঞ্জিনসহ বিমান সরবরাহের বিষয়ে সক্রিয় আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

এই পদক্ষেপকে সাধারণ কোনো বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন না বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এটি স্পষ্টভাবে একটি ভূরাজনৈতিক বার্তা। চীন যেন বোঝাতে চাইছে পশ্চিমা বিশ্বের উপর তাদের নির্ভরতা কমিয়ে, নিজেরা বিকল্প প্রস্তুতি নিচ্ছে। অতিরিক্ত ইঞ্জিন চাওয়ার অর্থ হলো ভবিষ্যতে যদি কখনও নিষেধাজ্ঞা বা সরবরাহে বাধা আসে, সেক্ষেত্রে বিমান চলাচলে যেন কোনো বিঘ্ন না ঘটে। এটি তাদের দীর্ঘমেয়াদি ‘স্বনির্ভর চীন’ নীতিরই অংশ।

চীনের এই সিদ্ধান্ত বোয়িংয়ের জন্য বিশাল ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশ্ববাজারে অন্যতম বৃহৎ ক্রেতা চীনের এই বিচ্ছিন্নতা বোয়িংয়ের রাজস্বে বড় ধরনের পতন ঘটাতে পারে। বিশেষ করে এমন সময় যখন প্রতিষ্ঠানটি নানা ধরনের উৎপাদন জটিলতায় ভুগছে। অন্যদিকে, এয়ারবাসের জন্য এটি এক সুবর্ণ সুযোগ। চীনা বাজারে নিজেদের উপস্থিতি আরও সুদৃঢ় করতে এখনই মোক্ষম সময়।

এই পরিস্থিতিতে উপকৃত হতে পারে চীনের নিজস্ব বিমান নির্মাতা সংস্থা COMAC-ও। চীন যদি বোয়িং বিমানের ব্যবহার সীমিত করে এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে ঘরোয়া প্রস্তুতকারকদের অগ্রাধিকার দেয়, তাহলে COMAC-এর জন্য বড় ধরনের বাজার তৈরি হবে। এটি দেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং শিল্পখাতের বিকাশে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বোয়িংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক শীতল করে চীন একদিকে যেমন নিজস্ব উৎপাদন খাতকে উৎসাহিত করছে, অন্যদিকে পশ্চিমা বিশ্বের ওপর নির্ভরতাও কমিয়ে আনছে। এই কৌশল ভবিষ্যতের বৈশ্বিক রাজনীতিতে চীনের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

চীনের কৌশলগত পদক্ষেপ: বোয়িং বর্জন, এয়ারবাসের কাছে অতিরিক্ত ইঞ্জিনের দাবি

আপডেট সময় ১১:২৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

চীন এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নির্মাতা বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে কৌশলগত অবস্থান নিচ্ছে। দেশটির সরকার নিজস্ব এয়ারলাইনগুলোকে নতুন কোনো বোয়িং বিমান গ্রহণ করতে নিরুৎসাহিত করেছে। এর পরিবর্তে ইউরোপীয় নির্মাতা এয়ারবাসের কাছ থেকে অতিরিক্ত ইঞ্জিনসহ বিমান সরবরাহের বিষয়ে সক্রিয় আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

এই পদক্ষেপকে সাধারণ কোনো বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন না বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এটি স্পষ্টভাবে একটি ভূরাজনৈতিক বার্তা। চীন যেন বোঝাতে চাইছে পশ্চিমা বিশ্বের উপর তাদের নির্ভরতা কমিয়ে, নিজেরা বিকল্প প্রস্তুতি নিচ্ছে। অতিরিক্ত ইঞ্জিন চাওয়ার অর্থ হলো ভবিষ্যতে যদি কখনও নিষেধাজ্ঞা বা সরবরাহে বাধা আসে, সেক্ষেত্রে বিমান চলাচলে যেন কোনো বিঘ্ন না ঘটে। এটি তাদের দীর্ঘমেয়াদি ‘স্বনির্ভর চীন’ নীতিরই অংশ।

চীনের এই সিদ্ধান্ত বোয়িংয়ের জন্য বিশাল ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশ্ববাজারে অন্যতম বৃহৎ ক্রেতা চীনের এই বিচ্ছিন্নতা বোয়িংয়ের রাজস্বে বড় ধরনের পতন ঘটাতে পারে। বিশেষ করে এমন সময় যখন প্রতিষ্ঠানটি নানা ধরনের উৎপাদন জটিলতায় ভুগছে। অন্যদিকে, এয়ারবাসের জন্য এটি এক সুবর্ণ সুযোগ। চীনা বাজারে নিজেদের উপস্থিতি আরও সুদৃঢ় করতে এখনই মোক্ষম সময়।

এই পরিস্থিতিতে উপকৃত হতে পারে চীনের নিজস্ব বিমান নির্মাতা সংস্থা COMAC-ও। চীন যদি বোয়িং বিমানের ব্যবহার সীমিত করে এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে ঘরোয়া প্রস্তুতকারকদের অগ্রাধিকার দেয়, তাহলে COMAC-এর জন্য বড় ধরনের বাজার তৈরি হবে। এটি দেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং শিল্পখাতের বিকাশে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বোয়িংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক শীতল করে চীন একদিকে যেমন নিজস্ব উৎপাদন খাতকে উৎসাহিত করছে, অন্যদিকে পশ্চিমা বিশ্বের ওপর নির্ভরতাও কমিয়ে আনছে। এই কৌশল ভবিষ্যতের বৈশ্বিক রাজনীতিতে চীনের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।