০৪:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম :
নতুন ফাঁস হওয়া নথিতে ইসরায়েলের সঙ্গে অ্যামাজন ও গুগলের গোপন চুক্তি উন্মোচিত তাইওয়ানে প্রথমবারের মতো প্রো ইসরাইলি লবি AIPAC প্রতিনিধিদলের সফর প্রবল বর্ষণে নিউইয়র্ক ও নিউ জার্সির রাস্তাঘাট প্লাবিত, যানবাহন ডুবে গেছে পানিতে নিরাপত্তা হুমকিতে সামরিক ঘাঁটিতে আশ্রয় নিলেন ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ‘পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত এক দখলদার দানব’ — যুক্তরাষ্ট্রকে কটাক্ষ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে সম্মত পাকিস্তান-আফগানিস্তান, তুরস্ক-কাতারের মধ্যস্থতায় সমঝোতা প্রথম উড্ডয়ন সম্পন্ন করল নাসার নীরব সুপারসনিক জেট X-59 ‘হ্যাঁ’–‘না’ পোস্টে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া ইবতেদায়ী শিক্ষকদের মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দিলো পুলিশ জুলাই সনদে সাইন করে ভুল করেছেন, এখন কাফফারা দিন: বিএনপিকে নাসীরুদ্দীন

সার-সেচের খরচে বিপাকে রংপুরের বোরো চাষিরা, উৎপাদনে শঙ্কা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৩২:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
  • / 59

ছবি সংগৃহীত

 

বোরো মৌসুমে সারের দাম, ডিজেলের মূল্য এবং সেচ খরচ বেড়ে যাওয়ায় রংপুর অঞ্চলের কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে দেড়গুণেরও বেশি। এতে আশানুরূপ ফলন না হলে বড় ধরনের লোকসানে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা।

রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার কৃষক রোকন মিয়া জানান, এ বছর তিন বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। কিন্তু প্রতিটি ধাপে খরচ বেড়েছে। সার, বীজ ও কীটনাশক কিনতে হচ্ছে আগের চেয়ে বেশি দামে। কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না থাকায় বাড়তি সেচ দিতে হচ্ছে জমিতে। “ডিজেলের দাম বেশি হওয়ায় একদিন পরপর পানি দিতে হচ্ছে। সারের প্রয়োজন পড়ছে ঘন ঘন। এত খরচে আমরা টিকতে পারব তো?” আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

একই অভিযোগ করেন কৃষক কচি মুদ্দিন। তিনি বলেন, “আগে যেখানে এক ঘণ্টা পানি দিলেই চলত, এখন সেখানে ছয় ঘণ্টা পানি দিতে হচ্ছে। তেল, সার সবকিছুর দাম বাড়তি। সময়মতো পানি না পেলে ধান পচে যায়, আর বেশি দিলে হয় পচন। ফলনও আগের মতো হচ্ছে না।”

কৃষকরা মনে করছেন, খরচ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া যায়, তবে তাদের ক্ষতির পরিমাণ হবে বিশাল। তারা সরকারের কাছে দ্রুত ভর্তুকি ও বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছেন।

রংপুর কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক পলাশ কান্তি নাগ বলেন, “সেচ নির্ভর এই মৌসুমে ডিজেল ও সারের দামে সরকারের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। যেন কৃষকরা সময়মতো সেচ দিতে পারে, সে জন্য জ্বালানি ও সারে পর্যাপ্ত ভর্তুকি প্রয়োজন।”

তবে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের রংপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, “বালাই নিয়ন্ত্রণসহ যেকোনো সমস্যায় সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা পাশে আছেন। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।”

চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় বোরো আবাদ হয়েছে ৫ লাখ ৯ হাজার ৫৬ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের তুলনায় ৯১৯ হেক্টর বেশি। কিন্তু উৎপাদন খরচ যেভাবে বেড়েছে, তাতে কৃষকের মুখে হাসি ফিরবে কি না সেই প্রশ্ন এখন শস্যখেতজুড়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

সার-সেচের খরচে বিপাকে রংপুরের বোরো চাষিরা, উৎপাদনে শঙ্কা

আপডেট সময় ১১:৩২:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

 

বোরো মৌসুমে সারের দাম, ডিজেলের মূল্য এবং সেচ খরচ বেড়ে যাওয়ায় রংপুর অঞ্চলের কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে দেড়গুণেরও বেশি। এতে আশানুরূপ ফলন না হলে বড় ধরনের লোকসানে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা।

রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার কৃষক রোকন মিয়া জানান, এ বছর তিন বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। কিন্তু প্রতিটি ধাপে খরচ বেড়েছে। সার, বীজ ও কীটনাশক কিনতে হচ্ছে আগের চেয়ে বেশি দামে। কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না থাকায় বাড়তি সেচ দিতে হচ্ছে জমিতে। “ডিজেলের দাম বেশি হওয়ায় একদিন পরপর পানি দিতে হচ্ছে। সারের প্রয়োজন পড়ছে ঘন ঘন। এত খরচে আমরা টিকতে পারব তো?” আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

একই অভিযোগ করেন কৃষক কচি মুদ্দিন। তিনি বলেন, “আগে যেখানে এক ঘণ্টা পানি দিলেই চলত, এখন সেখানে ছয় ঘণ্টা পানি দিতে হচ্ছে। তেল, সার সবকিছুর দাম বাড়তি। সময়মতো পানি না পেলে ধান পচে যায়, আর বেশি দিলে হয় পচন। ফলনও আগের মতো হচ্ছে না।”

কৃষকরা মনে করছেন, খরচ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া যায়, তবে তাদের ক্ষতির পরিমাণ হবে বিশাল। তারা সরকারের কাছে দ্রুত ভর্তুকি ও বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছেন।

রংপুর কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক পলাশ কান্তি নাগ বলেন, “সেচ নির্ভর এই মৌসুমে ডিজেল ও সারের দামে সরকারের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। যেন কৃষকরা সময়মতো সেচ দিতে পারে, সে জন্য জ্বালানি ও সারে পর্যাপ্ত ভর্তুকি প্রয়োজন।”

তবে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের রংপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, “বালাই নিয়ন্ত্রণসহ যেকোনো সমস্যায় সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা পাশে আছেন। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।”

চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় বোরো আবাদ হয়েছে ৫ লাখ ৯ হাজার ৫৬ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের তুলনায় ৯১৯ হেক্টর বেশি। কিন্তু উৎপাদন খরচ যেভাবে বেড়েছে, তাতে কৃষকের মুখে হাসি ফিরবে কি না সেই প্রশ্ন এখন শস্যখেতজুড়ে।