ঢাকা ০২:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য বৈঠক সোমবার গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে হামলায় বিএনপি নেতার মৃত্যু ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়া থেকে সরে দাঁড়াল ইউরোপের দুই প্রভাবশালী দেশ ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত ঢাকা থেকে বিদায় নিয়েছে ভুটান দল, রাতে আসছে সিঙ্গাপুরের ৪২ সদস্য বরগুনায় কোরবানির দিনে পশু কাটতে গিয়ে আহত ২০ জন ষাটগম্বুজ মসজিদে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত সম্পন্ন : মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করলো বিএনপি ঈদের দিনেও গাজায় রক্তক্ষরণ: ইসরায়েলি হামলায় ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

আজ মধ্যরাত থেকে সাগরে ৫৮ দিনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:৪৩:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • / 23

ছবি সংগৃহীত

 

বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকার সময়সীমা কমিয়ে ৬৫ দিনের পরিবর্তে ৫৮ দিন নির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করায় উপকূলীয় জেলেরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।

১৪ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এই নিষেধাজ্ঞা চলবে ১১ জুন পর্যন্ত। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এই সময়সীমায় সব ধরনের সামুদ্রিক মাছ ধরা বন্ধ রাখার নির্দেশনা জারি করেছে, যার মূল লক্ষ্য হলো প্রজনন মৌসুমে সামুদ্রিক মাছ বিশেষত ইলিশ রক্ষা করা।

বছরের পর বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় ভুগতে হয়েছিল দেশের লাখো জেলে পরিবারকে। এদিকে ভারতের জলসীমায় নিষেধাজ্ঞা থাকত ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ৬১ দিন। ফলে সময়ের ব্যবধানে প্রায় ৩৯ দিন ভারতের মৎস্যজীবীরা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ ধরে নিয়ে যেতেন, যা বাংলাদেশি জেলেদের জন্য চরম ক্ষতির কারণ হতো।

এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই জানিয়ে আসছিলেন উপকূলের জেলেরা। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে তারা মানববন্ধন, নৌ-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের কাছে সময় পুনর্বিন্যাসের আহ্বান জানান। অবশেষে সরকার তাদের কথা শুনেছে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিবছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতের উভয় দেশে একই সময়ে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এতে জলসীমা লঙ্ঘনের প্রবণতা বন্ধ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পটুয়াখালীর একজন জেলে জানান, “আগে আমরা যখন সাগরে যেতাম না, তখন ভারতীয় ট্রলারগুলো এসে মাছ ধরে নিয়ে যেত। আমাদের তেমন কিছুই থাকত না। এখন অন্তত সমান সুযোগ পাবো।”

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ওয়ার্ল্ডফিশের সাবেক গবেষক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, “নিষেধাজ্ঞার সময় ভারতের সঙ্গে সমন্বয় না থাকায় প্রতিবেশী দেশ লাভবান হতো, আর আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হতাম। সরকার এবার সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তকে ঘিরে উপকূলজুড়ে দেখা দিয়েছে স্বস্তি ও আশার আলো। এবার জেলেরা আশা করছেন, মাছের প্রজনন বাড়বে এবং তাদের জীবন ও জীবিকায় ফিরবে স্থিতি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আজ মধ্যরাত থেকে সাগরে ৫৮ দিনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা

আপডেট সময় ০৫:৪৩:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

 

বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকার সময়সীমা কমিয়ে ৬৫ দিনের পরিবর্তে ৫৮ দিন নির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করায় উপকূলীয় জেলেরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।

১৪ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এই নিষেধাজ্ঞা চলবে ১১ জুন পর্যন্ত। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এই সময়সীমায় সব ধরনের সামুদ্রিক মাছ ধরা বন্ধ রাখার নির্দেশনা জারি করেছে, যার মূল লক্ষ্য হলো প্রজনন মৌসুমে সামুদ্রিক মাছ বিশেষত ইলিশ রক্ষা করা।

বছরের পর বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় ভুগতে হয়েছিল দেশের লাখো জেলে পরিবারকে। এদিকে ভারতের জলসীমায় নিষেধাজ্ঞা থাকত ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ৬১ দিন। ফলে সময়ের ব্যবধানে প্রায় ৩৯ দিন ভারতের মৎস্যজীবীরা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ ধরে নিয়ে যেতেন, যা বাংলাদেশি জেলেদের জন্য চরম ক্ষতির কারণ হতো।

এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই জানিয়ে আসছিলেন উপকূলের জেলেরা। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে তারা মানববন্ধন, নৌ-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের কাছে সময় পুনর্বিন্যাসের আহ্বান জানান। অবশেষে সরকার তাদের কথা শুনেছে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিবছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতের উভয় দেশে একই সময়ে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এতে জলসীমা লঙ্ঘনের প্রবণতা বন্ধ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পটুয়াখালীর একজন জেলে জানান, “আগে আমরা যখন সাগরে যেতাম না, তখন ভারতীয় ট্রলারগুলো এসে মাছ ধরে নিয়ে যেত। আমাদের তেমন কিছুই থাকত না। এখন অন্তত সমান সুযোগ পাবো।”

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ওয়ার্ল্ডফিশের সাবেক গবেষক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, “নিষেধাজ্ঞার সময় ভারতের সঙ্গে সমন্বয় না থাকায় প্রতিবেশী দেশ লাভবান হতো, আর আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হতাম। সরকার এবার সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তকে ঘিরে উপকূলজুড়ে দেখা দিয়েছে স্বস্তি ও আশার আলো। এবার জেলেরা আশা করছেন, মাছের প্রজনন বাড়বে এবং তাদের জীবন ও জীবিকায় ফিরবে স্থিতি।